আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
142 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (24 points)
এখানে লেখক বলতে চাচ্ছেন, শরয়ী আদালতে আবরার হত্যাকারীদের কারও ফাঁসি হতো না। কারণ তাদের হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না। এটা কতটুকু সঠিক??


এডভোকেট মওলানা Naeem Hasan ভায়ের পোস্ট। শেষে আমার কিছু কথা আছে।
------------------------
আবরার কে ওরা কেউ ঠাণ্ডা মাথায় খুন করতে চায় নাই। জাস্ট একটু ডলা(?) দিতে চাইসিল, ভার্সিটির হলগুলোতে শিবির কর্মীদের যেভাবে সাধারণত সো-কল্ড ডলা দেয়া হয়। যে টাইপের আঘাত করা হইছিল সেগুলোতে সাধারণত সুস্থ মানুষজন মরে না। ঘটনাচক্রে আবরার মরে গেছে। হত্যা করার পূর্বপরিকল্পনা, ইনটেনশন বা নলেজ কোনটাই খুব সম্ভবত ছিল না তাদের।

এধরণের হত্যাকাণ্ডগুলো দেশীয় আইনের ভাষায় সাধারণত 'মার্ডার' ক্যাটেগরিতে পড়ে না, বরং 'কাল্পেবল হোমিসাইড নট এমাউন্টিং টু মার্ডার' ক্যাটাগরিতে পড়ে। 'কাল্পেবল হোমিসাইড' অপরাধ ও শাস্তির মাত্রায় মার্ডারের চেয়ে হালকা, যেক্ষেত্রে শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয় না, বরং যাবজ্জীবন বা ১০ বছরের জেল হয়।

আবরার হত্যা মামলায় আদালত চাইলে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে যাবজ্জীবন বা জেল দিতে পারতো। আইনে সেটার সুযোগ ছিল।
তবে হ্যাঁ আবরারের শারিরীক যখম কে চাইলে নিম্নবর্ণিত ক্যাটাগরিতেও ফেলা যায়-  "done with the intention of causing such bodily injury which is sufficient in the ordinary course of nature to cause death, or – with the intention of causing such bodily injury as the offender knows to be likely to cause the death of the person to whom the harm is caused".
সেক্ষেত্রে এটি মার্ডার হিসেবে সাব্যস্ত হবে।

আইনের শব্দগুলো যেহেতু এক্ষেত্রে এবস্ট্রাকট, তাই ফরেনসিক রিপোর্ট সহ বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে যে কোন দিকেই ঘোরানোর সুযোগ থাকে। বিচারকের সদিচ্ছা এক্ষেত্রে দিনশেষে গুরুত্বপূর্ণ।
তবে এধরণের পলিটিক্যালি সেনসিটিভ মামলাগুলোতে আদালত প্রপার লিগ্যাল প্রভিসনের চেয়ে জনতুষ্টির ব্যাপারটা বেশি প্রাধান্য দেয়। পাবলিক সেন্টিমেন্ট ঠাণ্ডা হবে। আপিলে দীর্ঘদিন ঝুলে থাককে, তারপর মানুষের স্মৃতি ঝাপসা হয়ে আসলে খালাস পেয়ে যাবে। কিংবা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা তো আছেই।
আবরার হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটা প্রেডিকশন হচ্ছে এই রায় দিনশেষে পরিপূর্ণ কার্যকর হবে না। মাঝপথে ক্ষয়ে যাবে।
----------------------------------
আমার কথা

এই রায়ে আমি খুশি-অখুশি কিছুই না। সম্ভবত কিছুটা অখুশি। প্রাণ যিনি দিয়েছেন, নেবার ক্ষমতা শুধু তার। আল্লাহ ছাড়া কেউ কারও প্রাণ নেয়ার ধৃষ্টতা দেখাবার এখতিয়ার রাখে না। আল্লাহর আইন মোতাবেকই শুধু কারও প্রাণ নেয়া চলতে পারে। কোনো রাষ্ট্রপক্ষ, কোনো বৃটিশ কমন ল', কোনো রাজার আদেশ কোনোকিছুই প্রাণদণ্ডের অধিকার রাখে না। এটা জাস্টিস না। আল্লাহর আইন ছাড়া আর কোনো আইনে জাস্টিস হয়না। মানবরচিত সকল আইন জুলুম। আমাদের ঈমান আমাদেরকে এটাই বলে।
নিঃসন্দেহে আবরার মজলুম। আবার,  আবরারের হত্যার রায়ে যে কারও যদি ফাঁসি হয়, সেও আল্লাহর আইনে মজলুম হয়ে যাবে। কেননা ইসলামী আইন অনুসারে আমার ক্ষুদ্রজ্ঞানে এদের কারও হয়তো মৃত্যুদণ্ড হতো না, যেহেতু 'মেরে ফেলার' উদ্দেশ্য এদের কারোরই ছিল না। যদি কারও মৃত্যুদণ্ড হতোও, তবুও ইসলামী আইনে সে আরেকটি সুযোগ পেত, যার নাম দিয়াত বা ব্লাডমানি। আসামীদের পরিবার আবরারের পরিবারকে অর্থ দিয়ে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করতো। হয়তো দু'পাঁচজন (যারা সরাসরি পিটিয়েছে) ছাড়া বাকিদের ব্যাপারে আবরারের পরিবার রাজিও হয়ে যেত। এই সুযোগটা তারা পেল না। (যদি ফাঁসি হয়, আল্টিমেটলি হবে না)
আমি বৃটিশ কমন ল' ও শরীয়া আইনের তুলনা করছি। বৃটিশ কমন ল'তে ফৌজদারী বিচার হয় রাষ্ট্রপক্ষ বনাম আসামীপক্ষ। এখানে বাদী বা ভুক্তভোগীর কোনো বেনিফিট নাই। জরিমানা যাবে রাষ্ট্রের কোষাগারে। শরীয়া আইনে বিচার হয় ভিকটিম বনাম আসামী। ভিকটিম চাইলে ক্ষমা বা ব্লাডমানি বা কিসাস (প্রাণের বদলা প্রাণ) নিতে পারে।
তবে শেষমেশ ফাঁসি যে হবে না এটা সচেতন মানুষ মাত্রই বুঝার কথা। জনআবেগ তোষণের রায় এটা৷ যতদিন মামলা চলবে ততদিন এরা মৃত্যুর প্রহর গুনবে, পেরেশানির ভিতর থাকবে, এদের পরিবারও অনুভব করবে সন্তান হারানোর বেদনা, মামলা চালাতে বিস্তর খরচাপাতি করবে। জনগণের এটুকুই প্রাপ্তি।

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
কার কি উদ্দেশ্য তা আল্লাহ-ই ভালো জানেন। তবে উনার লিখাতে অসত্য কিছুই দৃষ্টিগোচর হয়নি।
ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,680 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...