ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
আমরা https://ifatwa.info/12977/ ফতোয়াতে উল্লেখ করেছি যে,
পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হচ্ছে
পানি। আল্লাহ তাআলা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি প্রাকৃতিক নিয়মে সরবরাহ
করে রেখেছেন। তারপরও অবস্থার আলোকে যদি পানি না পাওয়া যায়
বা কেউ অসুস্থ হয়ে পানি ব্যবহারে একেবারে অপারগ হয়, সে সময়ে গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করবে।
এ মর্মে আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِن كُنتُم مَّرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ
مِّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً
فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُم مِّنْهُ
مَا يُرِيدُ اللَّـهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُم مِّنْ حَرَجٍ وَلَـكِن يُرِيدُ
لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
অর্থ : যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে
অথবা তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করো, অতঃপর
পানি না পাও, তাহলে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও। আল্লাহ
তোমাদের অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু
তোমাদের পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ করো।(সুরা মায়েদা : ৬)
,
তায়াম্মুম করা কখন বৈধ?
১- পানির অনুপস্থিতিতে
আল্লাহ তাআলা বলেন, (فَلَمۡ تَجِدُواْ مَآءٗ فَتَيَمَّمُواْ) {অতঃপর পানি না পাও, তবে
তায়াম্মুম করো।}
২- পানি থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার
করতে অপারগ হলে
যেমন অসুস্থ অথবা বৃদ্ধ ব্যক্তি যে
নড়াচড়া করতে পারে না এবং তার কাছে এমন ব্যক্তিও নেই যে তাকে অজু করার ব্যাপারে
সাহায্য করবে।
৩ - পানি ব্যবহার করার ফলে ক্ষতি
হওয়ার আশঙ্কা থাকলে
যেমন :
ক - অসুস্থ ব্যক্তি যদি পানি
ব্যবহার করে তবে তার অসুস্থতা বেড়ে যাবে।
খ – প্রচন্ড ঠান্ডায় যদি পানি গরম
করার মতো কিছু না থাকে এবং পানি ব্যবহার করলে অসুস্থতা বেড়ে যাবে এ ধারণার পাল্লা
ভারি থাকে, এ অবস্থায় তায়াম্মুম করার অনুমতি রয়েছে। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক, প্রচন্ড
ঠান্ডা থাকার কারণে তায়াম্মুম করে নামাজের ইমামতি করার পর, আমর বিন আস রাযি. এর কাজকে নাকচ করে না দেয়া এ ক্ষেত্রে
প্রমাণ। (বর্ণনায় আবু দাউদ)
গ - কোনো ব্যক্তি যদি পানি থেকে দূরে
কোথাও অবস্থান করে এবং তার সাথে পান করার মতো সামান্য পানি থাকে আর অন্য পানি
হাজির করতে অপরাগ হয়।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
১. প্র্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তায়াম্মুম করা জায়েজ হবে না। কারণ উভয় স্টেশনে ওজু
করার জন্য পানির ব্যাবস্থা আছে। তা ছাড়া দাড়িয়ে নামাজ পড়তে সক্ষম থাকা অবস্থায় বসে
নামাজ পড়লে উক্ত নামাজ সহীহ হবে না।
২. উভয় স্টেশনে মহিলাদের জন্য আলাদা ওয়াশরুম রয়েছে। সেখানে গিয়ে ওজু করে
নিবেন। অথবা আশ পাশের কোথাও কোন আড়ালে বোতলে করে পানি নিয়ে গিয়ে ওজু করে নিবেন।
৩. উভয় স্টেশনে আলাদা নামাজের জায়গা আছে। সেখানে বা কোন আড়াল স্থানে কাপড়
বিছিয়ে অথবা বিশ্রামগার রুমে কোন এক কোনে
কিছু বিছিয়ে নামাজ পড়ে নিবেন।
৪. দাড়িয়ে নামাজ পড়া, রুকু সিজদা করা যেহেতু ফরজ। তাই বাস বা
ট্রেনের সিটে বসে নামাজ পড়লে উক্ত নামাজ বাসায় এসে আবার কাযা করা লাগবে । তবে যদি
কখনো ট্রেন বা বাসে এমন অবস্থায় হয় যে,
সিটে বসে নামাজ পড়া ছাড়া সম্ভবপর নয়। তখন সেখানে বসে বসে ইশারায় নামাজ পড়ে
নিবেন এবং বাসায় এসে আবার উক্ত নামাজ কাযা করে নিবেন। তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ
তায়ালা নামাজ না পড়ার গুনাহ দিবেন ইনশাআল্লাহ।