আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
207 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম,

একজন ব্যক্তি সরকারি সুদি ব্যাংকে চাকুরি করতেন  এবং বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। তিনি তার বেতন থেকে গোছানো অর্থ এবং অবসরের পর ব্যাংক কর্তৃক প্রাপ্ত অর্থ দ্বারা দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করেন।

প্রশ্ন ১ঃ এই বাড়িতে থাকা এবং বাড়ি ভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ তার সাবালক বেকার (চাকুরী সন্ধানরত) এবং চাকুরিজিবি উভয়ের ছেলের জন্য জায়েজ হবে কি না ? পিতা জীবিত অবস্থায় অথবা মৃত্যু পর বিধানের কোন পরিবর্তন আসবে কি না ?

প্রশ্ন ২ঃ জায়েজ হইলে এই প্রশ্নের উত্তরের প্রয়োজন নাই । জায়েজ না হইলে সন্তানেরা কি নিজেদের জন্য সাদকাহ এর মাধ্যমে বাড়ি টা কে হালাল করিতে পারবে ? যদি করা সম্ভব হয় তাহলে কি পরিমান অর্থ সাদকাহ করতে হবে ? বাড়িটি যখন তৈরি করা হয় সেই পরিমান অর্থ নাকি বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী বাড়ির মূল্য ?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: " أيها الناس، إن الله طيب لا يقبل إلا طيبا، وإن الله أمر المؤمنين بما أمر به المرسلين، فقال: {يا أيها الرسل كلوا من الطيبات واعملوا صالحا، إني بما تعملون عليم} [المؤمنون: ٥١] وقال: {يا أيها الذين آمنوا كلوا من طيبات ما رزقناكم} [البقرة: ١٧٢] ثم ذكر الرجل يطيل السفر أشعث أغبر، يمد يديه إلى السماء، يا رب، يا رب، ومطعمه حرام، ومشربه حرام، وملبسه حرام، وغذي بالحرام، فأنى يستجاب لذلك؟ "

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)

তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?” (সহীহ মুসলিম-১০১৫)

 

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া। নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।
من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে সে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেবে।যদি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়,তাহলে গরীবদেরকে সদকাহ করে দেবে।(মা'রিফুস-সুনান১/৩৪)

 

সুদ হারাম হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন -

واحل الله البيع و حرم الربوا.

" আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন৷" (সূরা বাকারা, আয়াত:২৭৫)

 

সুদ কতখানি জঘন্য তা হাদীস শরীফে এসেছে-

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : "الربا سبعون حوبا،أيسرها أن ينكح الرجل أمه."

حكم الحديث: صحيح

"হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "সুদের ৭০ টি স্তর রয়েছে৷ সবচেয়ে নিম্নটি হল নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচার করা৷" (ইবনে মাজাহ: অধ্যায়: ব্যবসা-সুদ:২২৭৪)

 

কেউ যদি হারাম টাকা দ্বারা হালাল ব্যবসা করে তাহলে এ সম্পর্কে উলামাদের মতবেদ রয়েছে। কেউ কেউ সমস্ত মালকে সদকাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ শুধুমাত্র আসল তথা মূলধন যা হারাম ছিল, সেই মালকে মূল মালিকের নিকট ফিরিয়ে দিতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিংবা সদকাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। 

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


. উক্ত বাড়ীতে থাকা ও বাড়ী ভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ তার সাবালক বেকার (চাকুরী সন্ধানরত) এবং চাকুরিজীবী উভয়ের ছেলের জন্য গ্রহণ করার অবকাশ রয়েছে। তবে যেহেতু উক্ত বাড়ীটি হারাম টাকা দিয়ে করা। তাই ঐ পরিমাণ অর্থ গরীবদেরকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকাহ করে দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, পিতা জীবিত অবস্থায় বাড়ী ভাড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থ তার। আর তার মৃত্যুর পর সন্তানদের।

২. উক্ত বাড়ী নির্মাণ করার সময় যেই পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে সেই পরিমাণ অর্থ গরীবদেরকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকাহ করে দিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...