উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
মহান আল্লাহ মানুষকে পিতা- মাতার মাধ্যমেই এই সুন্দর পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন। এই পৃথিবীতে পিতা-মাতাই হচ্ছে সন্তানের সবচেয়ে বড় আপন জন। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর পিতা মাতা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে সন্তানকে বড় করে তোলেন। মহান আল্লাহ পিতা-মাতার খেদমত করার সর্বাধিক তাগিদ দিয়ে তার ইবাদতের পরেই মানুষকে পিতা মাতার খেদমত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
,
মহান আল্লাহর ইবাদত করা যেমনি ফরজ, পিতা-মাতার খেদমত করা মানুষের ওপর তেমনি ফরজ। ইরশাদ হচ্ছে- ‘এবং আপনার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না, পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো। তাঁদের কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হন তা হলে তাঁদের সঙ্গে “উহ’’ শব্দটিও বলোনা। তাদের ধমক ও দিয়ো না। তাদের সঙ্গে শিষ্টতাপূর্ণ কথা বলো। তাদের সামনে ভালোবাসার সঙ্গে বিনয় ভাবে মাথানত করে দাও এবং বলো হে পালন কর্তা তাঁদের উভয়ের প্রতি দয়া করুন, যেমনটি তাঁরা আমাদের শৈশব কালে করেছেন’ (সুরা বনি ইসরাঈল, ২৩- ২৪)।
,
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরে কুরতুবীতে লেখেন - আল্লাহ তায়ালা এই আয়াতের মধ্যে পিতা-মাতার প্রতি আদব, সম্মান এবং তাঁদের প্রতি সদ্ব্যবহার করাকে নিজের ইবাদতের সঙ্গে একত্রিত করে ফরজ করেছেন। যেমন সুরা লোকমানের মধ্যে মহান আল্লাহ নিজের শুকরিয়া আদায় করার সঙ্গে সঙ্গে পিতা- মাতার শুকরিয়া আদায় করাকে ও বান্দার ওপর একত্রিত করে অপরিহার্য করেছেন। এখানে পিতা-মাতার বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে তাদেরকে ‘উহ’ বলবে না, এখানে ‘উহ’ শব্দটি বলতে বুঝানো হয়েছে যা দ্বারা বিরক্তি প্রকাশ পায়। হযরত আলী (রা:) হতে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (দ.) বলেন, পীড়া দানের ক্ষেত্রে ‘উহ’ বলার চাইতে কম কোন স্তর থাকলে তাও অবশ্যই উল্লেখ করা হত। পিতা-মাতার সঙ্গে ধমক দিয়ে কথা বলা নিষেধ। তাদের সাথে সম্প্রীতি ও ভালবাসার সাথে নরম স্বরে কথা বলতে হবে। তাদের সামনে নিজেকে সবসময় অক্ষম ও হেয় করে পেশ করবে। পৃথিবীর এমন কোন ধর্ম নাই যাতে পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়ার কথা রয়েছে।
অতএব, বান্দার জন্য আল্লাহ তায়ালার আনুগত্যের পর পিতা মাতার আনুগত্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং আল্লাহ তায়ালার কৃতজ্ঞ হওয়ার ন্যায় পিতা মাতার কৃতজ্ঞ হওয়া ওয়াজিব (তাফসিরে কুরতুবী)।
,
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে- আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহারের জন্য জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভধারণ করেছে। দুধ ছাড়াতে দুই বছর হয় নির্দেশ দিয়েছি সেই। আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে। পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই। তবে তুমি তাদের কথা মানবে! এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সহাবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয় তার পথ অনুসরণ করবে। অতএব তোমাদের প্রত্যাবর্তণ আমারই দিকে (সূরা লোকমান: ১৪-১৫)।
আল্লাহর পর মানুষের প্রতি সর্বাধিক ইহসান বা অনুগ্রহ থাকে পিতা-মাতার। সাধারণ উপকরণ সমূহের মাঝে মানুষের অস্তিত্বের পেছনে পিতা-মাতাই বাহ্যিক কারন। এ জন্যই কোরআন শরীফে পিতা-মাতার হক সমূহকে আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের সাথে যুক্ত করে বর্ণনা করা হয়েছে।
মুসনদে আহমদ, তিরমিজী ও ইবনে মাজাহ’র বিশুদ্ধ সনদসহ হযরত আবুদ্দারদা (রা:) থেকে বর্ণিত রয়েছে, রাসূল (দ.) বলেন, পিতা জান্নাতের মধ্যবর্তী দরজা। রাসূল (দ.) বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি পিতার সন্তুষ্টির মধ্যে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যে নিহিত । প্রিয় নবী (দ.) বলেন, যে সন্তান পিতা মাতার দিকে সুনজরে ও ভালবাসা সহকারে দৃষ্টিপাত করে , তার প্রত্যেক দৃষ্টিপাতের বিনিময়ে সে একটি মকবুল হজ্বের সাওয়াব পায়। সাহাবীরা আরজ করলেন, সে যদি দিনে একশতবার এভাবে দৃষ্টিপাত করে ? তখন উত্তরে তিনি বলেন , একশতবার দৃষ্টিপাত করলে প্রত্যেক দৃষ্টির বিনিময়ে এভাবে সাওয়াব পেতে থাকবে । তার ভান্ডারে কোন কিছুরই অভাব নেই ।
এক ব্যক্তি নবী করিম (দ.) কে জিজ্ঞাসা করল, হে রাসুল! (দ.) আমি আমার মাকে সুদূর ইয়েমেন থেকে নিজের পিঠে বহন করে তাকে হজ্ব করিয়েছি, তাকে আমার পিঠে করে কাবা ঘর তাওয়াফ করিয়াছি। সাফা মারওয়া পাহাড়ে সায়ী করেছি । তাকে বহন করে আরাফাতে গিয়েছি। আবার সে অবস্থায় তাকে নিয়ে মুজদালেফায় গিয়েছি এবং মিনাতে গিয়ে কংকর নিক্ষেপ করেছি। আমার মা খুব বৃদ্ধা এবং একেবারে চলন শক্তিহীন , এজন্যে তাকে আমার পিঠে করে এ সমস্ত অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছি। তাঁর হক কি আমি আদায় করতে পেরেছি ? হুজুর (দ.) উত্তর করলেন, না ! তার হক আদায় হয়নি, সে ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, কেন? নবী (দ.) বললেন ঃ কারণ তোমার মা তোমার শৈশব কালে সমস্ত রকম দু:খ কষ্ট তোমার জন্য সহ্য করেছেন এই আশা নিয়ে যে, তুমি ভাল ভাবে বেঁচে থাক এবং তোমার যেন কোন রকম অসুবিধা না হয় , আর তুমি তোমার মার জন্য যা করেছ তার এই আশা যে তিনি তো মারা যাবেন , সুতরাং তার জন্য কিছু করি ।
হযরত আবু বকর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, প্রিয় নবী (দ.) বলেন, সমস্ত গোনাহের শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা সে গুলো ইচ্ছা কেয়ামত পর্যন্ত পিছিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু মাতা পিতার হক নষ্ট কারীর শাস্তি এবং তাদের সাথে অবাধ্যতার শাস্তি এর ব্যতিক্রম পরকালের পুর্বে দুনিয়াতেই দেয়া শুরু হয়। “ তাফসীরবিদ হযরত ওরওয়াকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাস করলো, পবিত্র কোরআনে পিতা মাতার প্রতি বিনীত হওয়ার বিষয়ে যা বলা হয়েছে তার অর্থ কি? হযরত ওরওয়া জবাব দিলেন, তোমার নিকট পছন্দনীয় নয় এমন কোন কথা যদি বলেন, তবুও তাদের প্রতি বিরক্তি দৃষ্টিতে তাকিও না। কেননা বিরক্তির আলামত সর্বপ্রথম মানুষের চোখ থেকে ফুটে উঠে।
পিতা-মাতার সেবা যত্ন সদ্ব্যবহারের জন্য তাঁদের মুসলমান হওয়া জরুরী নয়। ইমাম কুরতবী ও বিষয়টির সমর্থনে বুখারী থেকে হযরত আসমার একটি ঘটনা বর্ণনা করেছে। হযরত নূরনবী (দ.) বললেন, হ্যাঁ তার সাথে সদ্ব্যবহার ও আদর আপ্যায়ন কর। কোরআন শরীফে আল্লাহ বলেন, যার পিতা-মাতা কাফের এবং তাকেও কাফের হওয়ার আদেশ করে এ ব্যাপারে তাদের আদেশ যায়েজ নয়। কিন্তু দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ব্যবহার বজায় রেখে চলতে হবে। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, এক ব্যক্তি প্রিয় নবী (দ.) কে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (দ.) কোন ব্যক্তি আমার কাছে সদ্ব্যবহারের সর্বাধিক হকদার? তিনি বললেন, তোমার মা, লোকটি বলল তারপর কে? তিনি বললেন তোমার মা, লোকটি আবার বলল তারপর কে? তিনি বললেন ‘তোমার মা, লোকটি পুনরায় বললেন, তারপর হুযুর (দ.) বললেন তোমার পিতা (বুখারী-৫৯৭১)।
,
★★★সুতরাং পিতা মাতার খেদমত বলতে বুঝায়,
★তাদের যেকোনো জায়েয আদেশ পালন করা।
★তাদের যদি প্রয়োজন হয়,তাহলে তাদের অন্ন বস্ত্র বাসস্থান, চিকিৎসা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা।
★তাদের কথার অমান্য না করা।
★তাদের যদি শারীরিক খেদমতের প্রয়োজন হয়, তাহলে শরয়ী নীতির আওতায় থেকে সেসব খেদমতের আঞ্জাম দেওয়া।
★তাদের সাথে সব সময় কথা, কাজে ভালো ব্যবহার করা।
★এমন কথা না বলা,যাতে তারা কষ্ট পাবে।
★তাদের সব সময় খোজ খবর রাখা।
★দূরে থাকলে তাদের সাথে যোগাযোগ রাখা।
★তাদের যাবতীয় জায়েজ প্রয়োজন পূরন করা,ইত্যাদি ইত্যাদি।
,
(২.৩) শরীয়তের বিধান হলো পিতা মাতার মধ্য হতে যখন যার খেদমতের প্রয়োজন হবে,তখন তার যথাসাধ্য খেদমত করা সন্তানের উপর ফরজ।
(আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল ৭/২১৬)
অন্যথায় এটা নফল।
করলে ছওয়াব পাবে।
না করলে গুনাহ নেই।
,
(০৪) মা-বাবাকে শ্রদ্ধা করা, ভালবাসা, তাঁদের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা, কথা শোনা, গুরুত্ব দেওয়া, বাধ্য হওয়া শরিয়তের দৃষ্টিতে ওয়াজিব এবং তাঁদের অবহেলা করা, নাফরমানি করা হারাম। তবে বাবা-মা যদি অনৈতিক কাজে কিংবা অবৈধ কাজে জোর করে তাহলে বাধ্য হওয়া যাবে না। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِن جَاهَدَاكَ عَلى أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
যদি তাঁরা (পিতামাতা) তোমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করে আমার সাথে কাউকে শরীক করার জন্য যা (শিরক) তোমার বোধগম্য নয়, তাহলে তুমি তাঁদের কথা অমান্য করো, (অর্থাৎ আমি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না) আর পার্থিব জীবনে উৎকৃষ্ট পন্থায় তাঁদের সাথে সৎ সম্পর্ক বজায় রেখো। আর তুমি তাঁদের পথ অনুসরণ করো যারা (আমি এক) আমার প্রতি অবিচলভাবে আকৃষ্ট রয়েছে।’ (সূরা লুকমান ১৫)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
فَإِنْ أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ، فَلَا سَمْعَ وَلَا طَاعَةَ
অসৎকাজে আনুগত্য নয় ;আনুগত্য কেবলমাত্র সৎকাজের ক্ষেত্রেই হতে হবে। (বুখারী ৭১৪৫ মুসলিম ১৮৪০)
হাসান বসরী রহ. বলেন, إن منعتْه أمُّه عن العشاء في الجماعة شفقة : لم يطعها যদি মা সন্তানের প্রতি মায়া দেখিয়ে ইশার জামাতে শরিক হতে বারণ করে তাহলে এ ক্ষেত্রে তাঁর আনুগত্য করা যাবে না। (বুখারী ১/২৩০)
ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল রহ.-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বাবা যদি সন্তানকে জামাতে নামায আদায় করা থেকে নিষেধ করে তাহলে কী করবে? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, এ জাতীয় ক্ষেত্রে বাবার কথা অমান্য করবে। (গিযাউল লুবাব ১/৩৮৫)
তাঁকে আরো জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, এক ব্যক্তি তাঁর সন্তানকে আদেশ করেছে যে, ফরয নামায ছাড়া কোনো নামায পড়বে না। এখন সন্তানের করণীয় কী? তিনি উত্তর দিয়েছেন, এই হুকুম অমান্য করবে এবং নফল পড়বে। (গিযাউল লুবাব ১/৩৮৪)
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া রহ. বলেন,
ويلزم الإنسان طاعة والديه في غير المعصية وإن كانا فاسقين ، وهو ظاهر إطلاق أحمد ، فإن شق عليه ولم يضره : وجب ، وإلا فلا
বাবা-মা ফাসেক হলেও বৈধ কাজের ক্ষেত্রে তাঁদের বাধ্য থাকা আবশ্যক। ইমাম আহমাদ রহ.-এর বক্তব্যের উদ্দেশ্যও এটাই। আর যদি বৈধ কাজ করতে গিয়ে সন্তানের জন্য কেবল কষ্ট হয় কিন্তু ক্ষতিকর না হয় তাহলেও তাঁদের বাধ্য থাকা ওয়াজিব। ( আল ফাতাওয়াল কুবরা ৫/৩৮১)
★★উক্ত আলোচনার আলোকে আমরা বাবা-মায়ের আনুগত্যের সীমারেখা সংক্ষেপে এভাবে নির্ণয় করতে পারি–
১. তাঁদের বাধ্য থাকার বিষয়টি কেবল বৈধ কাজের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং যদি তাঁরা ফরযে আইন, ওয়াজিব কিংবা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বর্জন করতে বলেন অথবা যদি তাঁরা কোনো হারাম কাজ করতে বলেন তাহলে সে ক্ষেত্রে তাঁদের আনুগত্য করা জায়েয হবে না।
২. যদি তাঁরা নফল-মুস্তাহাব পুরোপুরি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন তাহলে তাঁদের এই নির্দেশ মানা যাবে না। কেননা, এর মাধ্যমে তাঁদের ইসলামের প্রতি অবহেলা প্রকাশ পায় এবং এই নির্দেশের মান্য করার মাঝে তাঁদের কোনো উপকার নিহিত নেই।
৩. যদি তাঁরা নফল-মুস্তাহাব পুরোপুরি নয় বরং বিশেষ কোনো যৌক্তিক কারণে নির্দিষ্ট কোনো নফল-মুস্তাহাব ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন তাহলে এক্ষেত্রে তাঁদের হুকুম মানা ওয়াজিব। যেমন, সন্তানের শরীর দুর্বল তাই তাকে নফল রোজা না রাখার নির্দেশ দিলেন কিংবা বাবা বা মায়ের কোনো প্রয়োজনে সন্তানকে নফল আমল ছেড়ে দিয়ে ওই কাজটি করে দিতে বললেন– তাহলে এই হুকুম মানা সন্তানের উপর ওয়াজিব।
৪. তাঁদের হুকুমকৃত কাজটি তাঁদের জন্য উপকারী হতে হবে। সুতরাং যদি তা তাঁদের জন্য ক্ষতিকর হয় তাহলে ওই হুকুম মান্য করা যাবে না।
৫. বাবা-মা যদি এমন কাজ করতে বলেন যা সন্তানের পক্ষে অসম্ভব কিংবা সম্ভব তবে জীবনের ঝুঁকি আছে তাহলে সে ক্ষেত্রে তাঁদের প্রতি বাধ্য থাকা জরুরি নয়। কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, لا ضرر ولا ضرار ক্ষতি ও ক্ষতি সাধনের কোন অনুমতি নেই। (সুনানে দারাকুতনী ৩০৭৯)
৬. উক্ত ক্ষেত্রসমূহে তাঁদের আনুগত্য না করা মানে তাঁদের সঙ্গে অসদাচারণ করা নয়। কেননা, উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে, পিতামাতার সেবা ও সদ্ব্যবহারের জন্য তাঁদের মুসলমানও হওয়া জরুরী নয়।