ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
■ পিতা মাতা অমুসলিম হলেও তাদের সাথে ভালো
ব্যবহার ও দেখা সাক্ষাত করা। হাদীস শরীফে এসেছে-
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ
قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبِي قَالَ: أَخْبَرَتْنِي
أَسْمَاءُ بِنْتُ أَبِي بَكْرٍ قَالَتْ: أَتَتْنِي أُمِّي رَاغِبَةً، فِي عَهْدِ
النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَصِلُهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ» . قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ:
فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيهَا: {لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ
الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ} [الممتحنة: 8]
আসমা বিনতে আবু বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমার
মা নবী (সাঃ)-এর যুগে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট অবস্থায় আমার কাছে আসেন। আমি নবী
(সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি কি তার সাথে
আত্মীয় সম্পর্ক বজায় রাখবো? তিনি বলেনঃ হাঁ। ইবনে উয়ায়না (র) বলেন, এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ নাযিল করেনঃ “যারা ধর্মের ব্যাপারে
তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি, তাদের সাথে সদ্ব্যবহার ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না” (৬০ : ৮)
(বুখারী, মুসলিম, দারিমী)। (আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং- ২৫) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
■ খৃস্টান ধর্মাবলম্বী মাকে ইসলাম গ্রহণের
দাওয়াত দেয়া।
حَدَّثَنَا
أَبُو الْوَلِيدِ هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ قَالَ: حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ
عَمَّارٍ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو كَثِيرٍ السُّحَيْمِيُّ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا
هُرَيْرَةَ يَقُولُ: مَا سَمِعَ بِي أَحَدٌ، يَهُودِيٌّ وَلَا نَصْرَانِيٌّ،
إِلَّا أَحَبَّنِي، إِنَّ أُمِّي كُنْتُ أُرِيدُهَا عَلَى الْإِسْلَامِ فَتَأْبَى،
فَقُلْتُ لَهَا، فَأَبَتْ، فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
فَقُلْتُ: ادْعُ اللَّهَ لَهَا، فَدَعَا، فَأَتَيْتُهَا - وَقَدْ أَجَافَتْ
عَلَيْهَا الْبَابَ - فَقَالَتْ: يَا أَبَا هُرَيْرَةَ، إِنِّي أَسْلَمْتُ،
فَأَخْبَرْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: ادْعُ اللَّهَ
لِي وَلِأُمِّي، فَقَالَ: «اللَّهُمَّ، عَبْدُكَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَأُمُّهُ،
أَحِبَّهُمَا إِلَى النَّاسِ»
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ আমার
পরিচিত যে কোন ইহুদী বা খৃস্টান আমাকে ভালোবাসে। আমি চাইতাম যে, আমার মা ইসলাম গ্রহণ করুন। কিন্তু তিনি
তাতে রাজী হতেন না। আমি তাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিলাম কিন্তু তিনি তাতে রাজী
হননি। আমি নবী (সাঃ)-এর নিকট গিয়ে বললাম, আপনি তার জন্য দোয়া করুন। তিনি দোয়া করলেন। আমি তার নিকট
গিয়ে দেখি, তিনি ভিতর থেকে
দরজা বন্ধ করে আছেন। তিনি বলেন, হে আবু হুরায়রা! আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি। আমি নবী (সাঃ)-কে তা অবগত করে বললাম, আমার জন্য এবং আমার মায়ের জন্য দোয়া
করুন। তিনি বলেনঃ “হে আল্লাহ! তোমার বান্দা আবু হুরায়রা এবং তার মা, তাদের উভয়কে জনপ্রিয় করো” (মুসলিম, আবু দাউদ)। (আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং- ৩৪) হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
■ হাদীস শরীফে এসেছে-
حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ
سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ
النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَجْزِي وَلَدٌ
وَالِدَهُ، إِلَّا أَنْ يَجِدَهُ مَمْلُوكًا فَيَشْتَرِيَهُ فَيُعْتِقَهُ»
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাঃ)
বলেনঃ সন্তানের পক্ষে তার পিতার প্রতিদান শোধ করা সম্ভব নয়। তবে সে তাকে দাসরূপে
পেয়ে ক্রয় করে দাসত্বমুক্ত করে দিলে তার প্রতিদান হতে পারে (মুসলিম, দারিমী, ইবনে মাজাহ, তিরমিযী, ইবনে হিব্বান, তাহাবী)। (আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং-১০) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. উপরোক্ত হাদীস থেকে বুঝে আসে যে, পিতা মাতা অমুসলিম হলেও তাদের সাথে দেখা সাক্ষাত ও ভালো
ব্যবহার এবং ইসলামের দাওয়াত দেয়া যাবে। সুতরাং ‘মুসলমান মেয়ের জন্য হিন্দু মা
বাবার সাথে দেখা করা হারাম’ এ ধরণের কথা কুরআন হাদীসে কোথাও নেই।
২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মেয়ের শশুর বাড়ীর লোককে বলবো তাকে যেনো (মেয়েকে মার
ধর করবে বা হিন্দু ধর্মে আবার চাপ প্রয়োগ করে ফিরিয়ে নিবে এমন আশংকা না থাকলে) তার
পিতা মাতার সাথে দেখা সাক্ষাত করতে দেয়। কারণ, একজন সন্তনই জানে যে, দীর্ঘদিন পিতা মাতার সাথে দেখা সাক্ষাত করতে না পারা কেমন
কষ্ট। আবার ঐ মেয়েকেও বলবো যেনো তার পিতা মাতাকে ইসলামের দাওয়াত দেন এবং নামাজ পড়ে
পড়ে তাদের হেদায়াতের জন্য দোয়া করে।