ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا
كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا
يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا
فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ
মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে
বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের
কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ
করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই কর। আল্লাহকে
ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। (সূরা
হুজরাত, আয়াত নং-১২)
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ " .
قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ . قَالَ " ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا
يَكْرَهُ " . قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ قَالَ
" إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ
فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ " .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি জান, গীবত কী জিনিস? তাঁরা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল
জানেন। তিনি বললেন, (গীবত হল) তোমার ভাই এর সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন
করা হল, আমি যা বলছি তা যদি আমার ভাই এর মধ্যে থেকে থাকে তবে আপনি কি বলেন? তিনি বললেন, তুমি তার সম্পর্কে যা বলছ
তা যদি তার মধ্যে থাকে তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে তা
হলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬৩৫৭)
বদ নযর লাগা সত্য। হাদীস শরীফে এসেছে-
حَدَّثَنَا
إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ
هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم قَالَ " الْعَيْنُ حَقٌّ ". وَنَهَى عَنِ الْوَشْمِ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বদ নযর লাগা সত্য। আর তিনি উল্কি আঁকতে (খোদাই করতে) নিষেধ
করেছেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস
নং-৫৩২৯)
তিনদিনের অধিক এক মুসলিমের অন্য মুসলিমের সাথে কথা-বার্তা বন্ধ রাখা হারাম।
হাদীস শরীফে এসেছে-
وَعَنْ أَنَسٍ رَضِيَ
اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم:
«لاَ تَقَاطَعُوا، وَلاَ تَدَابَرُوا، وَلاَ تَبَاغَضُوا، وَلاَ تَحَاسَدُوا،
وَكُونُوا عِبَادَ اللهِ إِخْوَاناً، وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ
أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَث» . متفق عَلَيْهِ
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা পরস্পর সম্পর্ক-ছেদ করো না, একে অপরের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন হয়ো না, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করো না, পরস্পর হিংসা করো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও। কোন মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি কথাবার্তা
বলা বন্ধ রাখবে।’’
(সহীহুল বুখারী ৬০৫৬, ৬০৭৬, মুসলিম ২৫৫৯, তিরমিযী
১৯৩৫, আবূ দাউদ
৪৯১০, আহমাদ ১১৬৬৩, ১২২৮০, ১২৬৪০, ১২৭৬৭, ১২৯৪১, মুওয়াত্তা মালিক ১৬৮৩)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. তিনদিনের
অধিক এক মুসলিমের অন্য মুসলিমের সাথে কথা-বার্তা বন্ধ রাখা হারাম। আবার যেহেতু
শাশুড়ী নিজের মায়ের মত। আবার বয়সেও বড়। তাই আপনার উচিৎ তার সাথে কথা বার্তা বলা।
দোষ যদি তারও হয় তবু আপনি তার কাছে ক্ষমা চাইলেন। এতে আপনার সম্মান কমবে না
ইনশাআল্লাহ।
২. বদ নযর লাগা যেহেতু সত্য।
আবার তাদের থেকে লেগেছে এটাও নিশ্চিত নয়। তাই কারোর গীবত করার উদ্দেশ্যে না নিয়ে শিক্ষা মূলক হিসেবে কারোর নাম না নিয়ে
তাদের পরিবার সম্পর্কে বলতে পারেন। এবং তাদের থেকে একটু দূরে থাকতে বলতে পারেন।
এতে কোন গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে খেয়াল করতে হবে যে, কারোর নাম নেওয়া যাবে না।
এভাবে বলতে পারেন যে, অমুক পরিবারের একজন এমন এমন করেছে।