আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
232 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।
একটা বিষয়ে জানতে চাইছি। আমি আমার মা-বাবার একমাত্র মেয়ে। তো ৩-৪ মাস অন্তর বাপের বাড়ি আসি। তার আরও একটা কারণ, আমার শ্বশুর বাড়ি জয়েন ফ্যামিলি। অনেক কষ্ট হয় সেখানে। পর্দা করেও অনেক সময় ভাসুর আছে বলে আমার বা বাচ্চার দরকারি কাজগুলা সারতে দেওয়া হয়না। এছাড়া শারীরিক ও মানসিক কষ্টে প্রতিটা দিন জর্জরিত থাকি। যদিও ধৈর্য ধরে মানিয়ে চলার চেষ্টা করি। কিন্তু এতটাই কষ্ট হয় যে ৩-৪ মাস পর একটু বাপের বাড়ি এলে আমার স্বস্তি মেলে। স্বামীকে অনেক বলেছি আমাকে আলাদা করে দিতে। ওদেরই বাসার একটা ফ্ল্যাটে আমার আলাদা সংসার হোক কিন্তু ও ওর পরিবারের প্রতি পূর্ণ দায়িত্ব পালন করুক। কিন্তু শ্বশুর কিছুতেই আমাদেরকে আলাদা ফ্ল্যাট দিতে রাজি নন আবার কিছু হলেই আলাদা হতে বলেন। হাজব্যান্ড সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও আলাদা হতে রাজি নন। আমি কতটা জুলুমে থাকি সেটা বুঝেও না বুঝার ভান করে। অনেক ঠান্ডাভাবে বলেও কোনোই লাভ হয়নি। না তার পরিবার আমার প্রতি সদয় হয়েছে, না সে আমাকে আলাদা করছে। তো এসব নিয়ে প্রায়ই আমি বাপের বাসায় থাকতে চাই কারণ আমার পক্ষে এত জুলুম সহ্য করা কষ্ট হয়ে যায়।

তো গতকাল স্বামী বলছিল আগামী ২ বছরে আর বাপের বাড়ি যেতে দিবে না। আমি বলছি দিও না। আমি কেন এসে থাকি তা না বুঝলে তো আমার করার কিছু নেই। ও বলে "স্বামী হিসেবে আমার এখতিয়ার আছে, আমি বলছি মানেই তুমি আসলেই যেতে পারবা না।" আমি বলছি যে, "হ্যাঁ, আমি তা জানি যে তুমি এখতিয়ার রাখ। আমিও যাব না। তবে যদি আমার আর এখানে টেকা সম্ভব না হয় আমি তো যাবই।" ও বলল যে, "কেমনে যাবা? আমি তো পারমিশন দিব না।" আমি বলছি, "তুমি যদি আমার স্বামীই না থাকো তাহলে তো আর তোমার পারমিশনের ধার ধারার কিছু নেই। না?" তো তখন ও রেগে গিয়ে বলল, "আচ্ছা এটাই তো চাও? তাহলে চলে যাও।"

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এতে কি আমার প্রতি তালাক পতিত হয়েছে? আর আমার কাবিন নামায় আমাকে নিজের উপর তালাক নেওয়ার এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে- বনিবনা না হলে। তাতে আমাদের সই আছে। কিন্তু ও বলে ও আমাকে এখতিয়ার দেয় নি। আমি কি তালাক নিতে পারব?
আসলে আমি কখনোই চাইনা ওকে ছাড়তে। আমি জানি তালাক হালাল কাজের মধ্যে নিকৃষ্টতম। কিন্তু আমি তো আর সহ্যই করতে পারছি না। আমার একটা ছোট্ট মেয়েও আছে। আমার থেকে ওকে কেড়ে নিবে এই ভয়ে মুখ বুজে ধৈর্য ধরে আছি। ইস্তেখারাও করেছি। তারপর থেকে বারবার মন টানছে যাতে ওর সাথে আর না থাকি। আমি আসলেই অনেক মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আছি। আমি কী করতে পারি? মা বলছে চলে যেতে। বাবা বলছে মেয়ের কথা ভেবে থেকে যেতে। আমি চাই আমার মেয়ে আমার থেকে আলাদা না হোক কোনোভাবেই। ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারব না। মাত্র দেড় বছরের বাচ্চা আমার।

1 Answer

0 votes
by (589,260 points)


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1049 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية...............  وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.
রাগের অবস্থাঃ-
রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।
তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।
যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী))(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

'গার্জিয়ানকে ডাকো, তোর আর সাথে সংসার করবো না'
এরকম কথাবার্তা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরা এমন কথা স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাকে বায়েন বায়েন পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাক,আর তিন তালাকের নিয়ত থাকলে তিন তালাক পতিত হবে।আর ভয়প্রদর্শনের নিয়তে বললে অবশ্যই তালাক পতিত হবে না(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৫১)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী তালাক পতিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...