আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
348 views
in পবিত্রতা (Purity) by (95 points)
আসসালামু আলাইকুম
ঘুম থেকে উঠে আমি আমার প্যান্টে বীর্য বা মনী শুকানোর পর যেরকম শক্ত হয়ে যায় ঠিক তেমন দাগ দেখতে পাই। কিন্তু সেটার পরিমাণ খুবই সামান্য। ১ টাকার কয়েনের চেয়েও কম। ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত হয়ে থাকলেও পরিমাণ দেখে নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। তাছাড়া অন্যকিছুরও দাগ হতে পারে। তাই আমি ফজরের নামাজ গোসল ছাড়াই আদায় করে নিয়েছি। আমার কি গোসল ফরজ ছিল?

1 Answer

0 votes
by (63,080 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

প্রস্রাব ব্যতীত যৌনাঙ্গ থেকে যা কিছু বাহির হয় তা তিন প্রকারঃ- 

(১) মনি (বীর্য)

 وَمَنِيُّ الرَّجُلِ خَاثِرٌ أَبْيَضُ رَائِحَتُهُ كَرَائِحَةِ الطَّلْعِ فِيهِ لُزُوجَةٌ يَنْكَسِرُ الذَّكَرُ عِنْدَ خُرُوجِهِ، وَمَنِيُّ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَر

পুরুষের মনি বা বীর্য হলঃ-যা সাদা গাঢ় একপ্রকার গন্ধমাখা পিচ্ছিল পানি যা উত্তেজনার সাথে আটকিয়ে আটকিয়ে বের হয়,এবং বের হওয়ার সাথে সাথে পুঃলিঙ্গ নেতিয়ে পড়ে,আর মহিলার বীর্য হল,পাতলা প্রায় হলুদ বর্ণের । 

 

(২) মযি

 وَالْمَذْيُ رَقِيقٌ يَضْرِبُ إلَى الْبَيَاضِ يَبْدُو خُرُوجُهُ عِنْدَ الْمُلَاعَبَةِ مَعَ أَهْلِهِ بِالشَّهْوَةِ

মযিঃ- যা স্ত্রীকে কামুত্তেজনায় স্পর্শের পূর্বে বাহির হয়,এবং যা দেখতে প্রায় সাদা রঙ এর।এবং মহিলার ও বের হয় তবে তাকে "কাযয়ুন"বলা হয়।

 

(৩) ওদী 

وَالْوَدْيُ بَوْلٌ غَلِيظٌ وَقِيلَ مَاءٌ يَخْرُجُ بَعْدَ الِاغْتِسَالِ مِنْ الْجِمَاعِ وَبَعْدَ الْبَوْلِ. كَذَا فِي التَّبْيِينِ.

ওদীঃ- গাঢ় প্রস্রাব,কেউ কেউ বলেনঃ ঐ পানি যা সহবাসের পরে গোপনাঙ্গ ধৌত করা পর বাহির হয় এবং যা প্রস্রাবের পর বাহির হয়।

 

উপরোক্ত তিনপ্রকারেরর মধ্যে 

শুধুমাত্র মনি বের হলে গোসল ফরজ হবে। অন্যান্যগুলো বের হলে গোসল ফরজ হবেনা। বরং গোপনাঙ্গ ধৌত করে ওজু করে নিলেই পবিত্রতা অর্জিত হবে। এক্ষেত্রে গোসলের কোনো প্রয়োজন পড়বেনা।

যেমনঃ- ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে.............

الْمَذْيُ يَنْقُضُ الْوُضُوءَ وَكَذَا الْوَدْيُ وَالْمَنِيُّ إذَا خَرَجَ مِنْ غَيْرِ شَهْوَةٍ

মযি অজুকে ভেঙ্গে দেয় ঠিক তেমনিভাবে ওদী এবং ঐ মনি যা কামুত্তেজনা বতীত বাহির হয় তাও ওজুকে ভেঙ্গে দেয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া -১/১০)

শরীয়তের বিধান হলো উত্তেজনা ব্যতীত বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় না। কেননাগোসল ফরজ হওয়ার জন্য শর্ত হলবীর্য বের হওয়ার সময় উত্তেজনা থাকতে হবে। 

 

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُواْ

তোমরা জুনুবি হও তবে (গোসল করে) সারা দেহ পবিত্র করে নাও। (সূরা মায়েদাহ ৬)

আর জুনুবি বলা হয়ওই ব্যক্তিকে যার বীর্য সবেগে ও উত্তেজনার সঙ্গে বের হয়েছে। 

 

যেমনআল্লাহ তাআলা বলেন,

فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ  خُلِقَ مِن مَّاءٍ دَافِقٍ

অতএবমানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছেসে সৃজিত হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। (সূরা আত্ব-তারিক্ব ৫৬)

 

রাসূলুল্লাহ ﷺ আলী রাযি.-কে বলেছিলেন,

فَإِذَا فَضَخْتَ الْمَاءَ فَاغْتَسِلْ

যদি উত্তেজনা বশতঃ বীর্য নির্গত হয় তবে গোসল করবে। (আবুদাউদ ২০৬) অন্যথায় নয়।

 

 

ফাতাওয়া শামীতে আছে  

وقال ابن عابدين، (قوله: بشهوة) متعلق بقوله: منفصل، احترزبه عما لو انفصل بضرب أو حمل ثقيل على ظهره، فلا غسل عندنا، (رد المحتار

যার সারমর্ম হলো যদি প্রহার করা,বা ভারি বোঝা উঠানোর কারনে বীর্য বের হয়,তাহলে গোসল ফরজ হবেনা।   

 

উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত হলেই গোসল করা আবশ্যক। তাই যেকোনোভাবে উত্তেজনের সাথে বীর্যপাত হলে অবশ্যই গোসল করে নামায পড়তে হবে। শুধু অজু করার দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে না।

إِنَّمَا الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ

তথা পানি [বের হবার দ্বারা] পানি {শরীরে ঢালা তথা গোসল] আবশ্যক হয়। {সহীহ মুসলিমহাদীস নং-৩৪৩}

وفرض الغسل عند خروج المنى منفصل عن مقره بشهوة وإن لم يخرج بها (الدر المختار)

বীর্য যদি আপন স্থান থেকে উত্তেজনার সাথে বের হয়,যদিও লিঙ্গ থেকে বের হওয়ার সময় উত্তেজনা না থাকুক,গোসল ফরজ হবে।

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

আপনি প্রথমে নিশ্চিত হবেন যে, সেটা বীর্য কি না। তাই খুব ভালো করে দেখবেন। আর যেহেতু শুধু  দাগের মাধ্যমে  বীর্যপাত হওয়াটা নিশ্চিত নয়। তাছাড়া অনেক সময় অন্য কিছুর দাগও মনির মত লাগে এবং আপনার বীর্যপাত হওয়ার কথা মনেও নেই, আবার জানেনও না। তাই শুধু সন্দেহের উপর ভিত্তি করে ফরজ গোসল করা লাগবে না। ধরে নিবেন যেসেটা মনি নয় বরং অন্য কিছু। আর যদি নিশ্চিত হন যেবীর্যপাত হয়েছেই এবং তা বীর্যই। তাহলে ফরজ গোসল করে ফজরের নামাজ কাযা করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 440 views
0 votes
1 answer 206 views
...