বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায়
বারবার শিরক করা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন। শিরকে বড় জুলুম বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে অংশীদার সাব্যস্ত করার ব্যাপারে
নিষেধ করেছেন। আল্লাহ বলেন-
وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ
لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ
যখন লোকমান উপদেশস্বরূপ তার ছেলেকে বলল-
হে ছেলে! আল্লাহর সাথে শরিক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরিক করা মহা অন্যায়।’
(সুরা লোকমান : আয়াত ১৩)
আল্লাহর অধিকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব
গোনাহ মাফ করলেও তার সঙ্গে শিরক তথা অংশীদার স্থাপন করার গোনাহ কখনো মাফ করবেন না।
আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে অংশীদার স্থাপন করবে তাদের শাস্তিও মারাত্মক। কুরআনে
শিরকের যে গোনাহ ও শাস্তির কথা বলা হয়েছে, তাহলো-
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا
دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا
عَظِيمًا
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরিক তথা অংশীদার
সাব্যস্ত করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক
অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন আল্লাহকে অপবাদ দিলো।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৪৮)
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদিন হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু
বললেন, ‘হে আল্লাহর
রাসুল! আমাকে এমন একটি দোয়া কথা বলুন, যা আমি সকাল-সন্ধ্যায় পাঠ করব। তখন রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বল-
اَللَّهُمَّ عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَطِرَ
السَّمَوَاتِ وَ الْاَرْضِ رَبَّ كُلِّ شَيئٍ وَ مَلِيْكِهِ أَشْهَدُ أنْ لَّا
اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِىْ وَ مِنْ سَرِّ الشَيْطَانِ
وَ شِرْكِهِ
অর্থ : হে আল্লাহ! (আপনি) দৃশ্য-অদৃশ্য সব
বিষয় অবগত; আসমান-জমিনের
সৃষ্টিকর্তা; প্রত্যেক বস্তুর
প্রতিপালক ও মালিক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই-
আমার মনের (নফসের) অনিষ্টতা থেকে, শয়তানের অনিষ্টতা থেকে এবং শিরক থেকে।’- এ দোয়াটি সকাল-সন্ধ্যায় এবং শয্যায়
(ঘুমাতে) যাওয়ার সময়ও বলবে।’ (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মিশকাত)
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উপরোক্ত কথাগুলোতে বাহ্যিকভাবে কোন শিরক নেই। কারণ, কথাগুলো বলার সময় সাধারণত
নিয়ত থাকে যে, ভাত দেওয়া ও চাকরী দেওয়ার মূল ক্ষমতা আল্লাহ
তায়ালার। আর মা ও স্যার শুধু মাত্র উসিলা। আবার কেউ এই কথাগুলো শিরকের নিয়তে বলেও
না। তাই এই ধরণের কথা বললে শিরক হবে না। তবে যদি কেউ চাকরী দেওয়া বা না দেওয়ার মূল
ক্ষমতা স্যারকে বিশ্বাস করে যে, চাকরী সেই দিতে পারবে। এখানে
তাকদীর বা আল্লাহর হাতে নয় (নাউযুবিল্লাহ) তখন এটা শিরক হবে।