ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন,
وَإِذَا
ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَن تَقْصُرُوا مِنَ
الصَّلَاةِ إِنْ خِفْتُمْ أَن يَفْتِنَكُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا ۚ إِنَّ
الْكَافِرِينَ كَانُوا لَكُمْ عَدُوًّا مُّبِينًا
অর্থ: তোমরা যখন যমীনে সফর কর এবং
তোমাদের আশঙ্কা হয় যে, কাফিরগণ তোমাদেরকে বিপন্ন করবে, তখন
সালাত কছর করলে তাতে তোমাদের কোনও গুনাহ নেই। নিশ্চয়ই কাফিরগণ তোমাদের প্রকাশ্য
দুশমন। [সূরা নিসা, ১০১]
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنِ
ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ أَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم
تِسْعَةَ عَشَرَ يَقْصُرُ، فَنَحْنُ إِذَا سَافَرْنَا تِسْعَةَ عَشَرَ قَصَرْنَا،
وَإِنْ زِدْنَا أَتْمَمْنَا.
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সফরে উনিশ দিন
পর্যন্ত অবস্থান করেন এবং সালাত (নামায/নামাজ) কসর করেন। কাজেই (কোথাও) আমরা উনিশ
দিনের সফরে থাকলে কসর করি এবং এর চাইতে বেশী হলে পুরোপুরি সালাত আদায় করি। (সহীহ
বুখারী, হাদীস নং-১০১৯)
তিন দিন বা তার সমপরিমাণ দূরত্বের
অধিক সফর করলে কেউ মুসাফির হিসাবে গণ্য হবে।যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত
রয়েছে-
أَقَلُّ مَسَافَةٍ تَتَغَيَّرُ
فِيهَا الْأَحْكَامُ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ، هُوَ
الصَّحِيحُ
সর্বনিম্ন দূরত্ব যার দ্বারা
শরীয়তের বিধি-বিধানে পরিবর্তন আসে।(তথা মানুষ মুসাফির
হয়)তিন দিনের দূরত্ব।(তাবয়ীন) এটাই বিশুদ্ধ মত।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৮)বিস্তারিত জানুন-১২৮১
তিনদিনের দূরত্বকে ফুকাহায়ে কেরাম
৭৭কিলো সমপরিমাণ নির্ধারণ করেন।তাই বর্তমানে কেউ ৭৭কিলো সমপরিমাণ সফর করলে সে শরয়ী
মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/4429
মুসাফিরের নামায কসর/অর্ধেক করে
পড়তে হয় অর্থাৎ চার রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে দু রা'কাত
পড়তে হবে। দুই রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে দুই রা'কাত
পড়তে হবে। এবং তিন রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে কোনো কসর নেই। আবার বেতরের নামাজেরও কসর
নেই অর্থাৎ বেতরের নামাজ পড়তে হবে।
তবে সুন্নাত নামায সমূহে কসরের
বিধান প্রযোজ্য নয়,তথা পড়লে সম্পূর্ণই পড়তে হবে এবং সাধারণত সুন্নাতকে
তরক/পরিত্যাগ করা যাবে না। বরং সময় থাকলে সুন্নাত নামায সমূহকে পড়ে নেয়া উচিৎ। সময়
সুযোগ না থাকলে অবশ্য সুন্নাত-কে পরিত্যাগ করার রুখসত রয়েছে। তবে ফজরের সুন্নাত
নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই তা যথা সম্ভব পড়ার চেষ্টা করব। (ফাতাওয়ায়ে
মাহমুদিয়্যাহ-৭/৫১৭) তবে পড়ে নেয়াটা-ই উত্তম কেননা বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাঃ সফরের সময় সুন্নাত পড়েছেন। (তিরমিযি-১/৭২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী
ভাই/বোন!
বেতরের নামাজের কসর নেই অর্থাৎ
বেতরের নামাজ পড়তে হবে। আবার ফজরের সুন্নাত নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সময়
সুযোগ থাকলে তা যথা সম্ভব পড়ার চেষ্টা করা করা চাই। তবে যদি কখনো খুব তাড়া থাকে তখন ফজরের সুন্নাত
না পড়ারও অবকাশ আছে।