আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+3 votes
1,089 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ,২ টা প্রশ্ন ছিল

১. স্বামী যদি তার স্ত্রীকে রাগের মাথায়  "তোমার সাথে আমার আর কিছু নাই,তোমার সাথে আমার সব শেষ,আজকের পর আমাদের আর কিছু নেই" এইসব বলে তাহলে কি তালাক পতিত হয়ে যাবে?

[বি:দ্রঃকখনো তালাক শব্দ টা ব্যবহার হয় নি।আর এই সব ঝগড়ার পর সবসময় সব ঠিক হয়ে যেত]

২.আরেকটা বিষয় জানার ছিল উস্তাদ,স্বামী যদি এইসব কথা বলে স্ত্রীকে অন্য জায়গায় বিয়ে করে ফেলার কথা বলে আর নিজেদের বিয়ে অস্বীকার করে যে বিয়ে কবুল হয় নি ভেবে তাহলে কি বিয়ে টা থাকবে?

বিয়েটা আসলে হয়েছিল অভিভাবক ছাড়া,তাই ছেলে ভাবছে এখন যে এই বিয়ে হয়নি, তাই এখন বলছে বিয়ে হয় নি তুমি অন্য কোথাও বিয়ে করে ফেল


দয়া করে উস্তাদ বিষয় গুলা একটু জানাবেন কষ্ট করে ইনশাআল্লাহ।

জাঝাকিল্লাহু খাইরান ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ

1 Answer

+1 vote
by (574,260 points)
উত্তর 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 
,
(০১) শরীয়তের বিধান হলো রাগের মাথায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়।
অস্পষ্ট শব্দ ব্যাবহারের দ্বারা তালাক পতিত হওয়ার হুকুম শুধুমাত্র ঐ সময় দেওয়া হবে,যখন তার তালাক দেওয়া নিয়ত ছিলো,বা মুযাকারায়ে তালাক তথা সেই সময় তালাকের বিষয় নিয়েই আলোচনা চলছিলো।    
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যখন তার স্ত্রীকে উক্ত শিব্দ বলেছিলো,তখন তার নিয়ত কি ছিলো?
 যদি তার তালাকের নিয়ত ছিল বা সেখানে স্ত্রী তালাক চেয়েছে বা তালাকের কোন আলোচনা হয়েছিল। 
তাহলে স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়ে যাবে।(অন্যথায় তালাক পতিত হবেনা।)  
যতবার এহেন অবস্থায় সেই শব্দ গুলো বলেছে,ততবার তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়েছে।  

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে  
وَلَوْ قَالَ فِي حَالِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ بَايَنْتُك أَوْ أَبَنْتُك أَوْ أَبَنْت مِنْك أَوْ لَا سُلْطَانَ لِي عَلَيْك أَوْ سَرَّحْتُك أَوْ وَهَبْتُك لِنَفْسِك أَوْ خَلَّيْت سَبِيلَك أَوْ أَنْتِ سَائِبَةٌ أَوْ أَنْتِ حُرَّةٌ أَوْ أَنْتِ أَعْلَمُ بِشَأْنِك. فَقَالَتْ: اخْتَرْت نَفْسِي. يَقَعُ الطَّلَاقُ وَإِنْ قَالَ لَمْ أَنْوِ الطَّلَاقَ لَا يُصَدَّقُ قَضَاءً (الفتاوى الهنيدية، كتاب الطلاق، الفصل الخامس فى الكنايات-1/375، رشيدية، قاضخ خان، كتاب الطلاق، فصل فى الكنايات والمدلولات-1/468، رشيدية، الفتاوى التاتارخانية، كتاب الطلاق، باب الكنايات-3/314 إدارة القرآن كرتاشى
যার সারমর্ম হলো যদি এহেন শব্দ তালাকের আলোচনা কালেই বলে থাকে,বা তার তালাক দেওয়াই নিয়ত ছিলো,তাহলে তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবে। 
অন্যথায় তালাক পতিত হবেনা।

(০২) ছেলে মেয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়, তাহলে তাদের বিয়ে শুদ্ধ হবার জন্য অভিভাবকের অনুমতি বা উপস্থিতি জরুরী নয়।

তবে যদি মেয়ে কুফু তথা মেয়ে থেকে বংশীয় দিক থেকে অনেক নিম্নমানের কাউকে বিয়ে করে, তাহলে মেয়ের বাবা আদালতের মাধ্যমে উক্ত বিয়ে বিচ্ছেদ করাতে পারে।

কিন্তু কুফুতে বিয়ে করলে সেই বিয়ে কোন নৈতিক কারণ ছাড়া বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে না।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ

হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}
 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জাঝাকিল্লাহু খাইরান ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...