উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
,
(০১) শরীয়তের বিধান হলো রাগের মাথায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়।
অস্পষ্ট শব্দ ব্যাবহারের দ্বারা তালাক পতিত হওয়ার হুকুম শুধুমাত্র ঐ সময় দেওয়া হবে,যখন তার তালাক দেওয়া নিয়ত ছিলো,বা মুযাকারায়ে তালাক তথা সেই সময় তালাকের বিষয় নিয়েই আলোচনা চলছিলো।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি যখন তার স্ত্রীকে উক্ত শিব্দ বলেছিলো,তখন তার নিয়ত কি ছিলো?
যদি তার তালাকের নিয়ত ছিল বা সেখানে স্ত্রী তালাক চেয়েছে বা তালাকের কোন আলোচনা হয়েছিল।
তাহলে স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়ে যাবে।(অন্যথায় তালাক পতিত হবেনা।)
যতবার এহেন অবস্থায় সেই শব্দ গুলো বলেছে,ততবার তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হয়েছে।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে
وَلَوْ قَالَ فِي حَالِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ بَايَنْتُك أَوْ أَبَنْتُك أَوْ أَبَنْت مِنْك أَوْ لَا سُلْطَانَ لِي عَلَيْك أَوْ سَرَّحْتُك أَوْ وَهَبْتُك لِنَفْسِك أَوْ خَلَّيْت سَبِيلَك أَوْ أَنْتِ سَائِبَةٌ أَوْ أَنْتِ حُرَّةٌ أَوْ أَنْتِ أَعْلَمُ بِشَأْنِك. فَقَالَتْ: اخْتَرْت نَفْسِي. يَقَعُ الطَّلَاقُ وَإِنْ قَالَ لَمْ أَنْوِ الطَّلَاقَ لَا يُصَدَّقُ قَضَاءً (الفتاوى الهنيدية، كتاب الطلاق، الفصل الخامس فى الكنايات-1/375، رشيدية، قاضخ خان، كتاب الطلاق، فصل فى الكنايات والمدلولات-1/468، رشيدية، الفتاوى التاتارخانية، كتاب الطلاق، باب الكنايات-3/314 إدارة القرآن كرتاشى
যার সারমর্ম হলো যদি এহেন শব্দ তালাকের আলোচনা কালেই বলে থাকে,বা তার তালাক দেওয়াই নিয়ত ছিলো,তাহলে তার স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হবে।
অন্যথায় তালাক পতিত হবেনা।
(০২) ছেলে মেয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়, তাহলে তাদের বিয়ে শুদ্ধ হবার জন্য অভিভাবকের অনুমতি বা উপস্থিতি জরুরী নয়।
তবে যদি মেয়ে কুফু তথা মেয়ে থেকে বংশীয় দিক থেকে অনেক নিম্নমানের কাউকে বিয়ে করে, তাহলে মেয়ের বাবা আদালতের মাধ্যমে উক্ত বিয়ে বিচ্ছেদ করাতে পারে।
কিন্তু কুফুতে বিয়ে করলে সেই বিয়ে কোন নৈতিক কারণ ছাড়া বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে না।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ
হযরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা এক মেয়ে রাসূল সাঃ এর কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি। এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রাসূল সাঃ মেয়েটিকে বললেন, “এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও”। {সুনানে সাঈদ বিন মানসূর, হাদীস নং-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া, হাদীস নং-৫৪১}