بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
আমরা https://www.ifatwa.info/18577/ ফাতওয়াতে উল্লেখ করেছি যে,
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ
الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে
অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব
৩৩)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ
اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ
مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا
‘নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয়
শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে
লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)
নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ ‘তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ
رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ.
فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا
وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ.
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
[‘আব্দুল্লাহ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে
একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত
একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর
রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে
বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও
তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।(সহীহ : বুখারী ৩০০৬,
মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী
১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।)
হাদীস শরীফে মাহরাম ব্যতীত সফর করতে নিষেধ করা হয়েছে।অবস্থানের
নিষেধ তথায় আলোচিত হয়নি।সুতরাং মহিলার জন্য এমন কোনো স্থান যেখানে নারী-পুরুষের অবাধ
মিলামিশা নেই, এবং যেখানে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে শরয়ী পর্দার যথেষ্ট ব্যবস্থা রয়েছে।সেখানে
মহিলা অবস্থান করতে পারবে। তাই মহিলা হোষ্টেলে উপরোক্ত শর্তাদি পাওয়া গেলে সেখানে অবস্থান
করে নারীরা লেখাপড়া করতে পারবে।অন্যথায় জায়েয হবে না। তবে মেয়েদের জন্য হোস্টেলে রাত্রিযাপন
করা কখনো উচিৎ হবে না। (খাওয়াতিন কে লিয়ে জাদিদ মাসাঈল;৬৭)
আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/212/
স্বামীর প্রতি স্ত্রীর
কর্তব্য সুখকর দাম্পত্য জীবন, সুশৃঙ্খল পরিবার, পরার্থপরতায় ঋদ্ধ ও সমৃদ্ধ
স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন অটুট রাখার স্বার্থে ইসলাম জীবন সঙ্গিনী স্ত্রীর উপর কতিপয় অধিকার
আরোপ করেছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এখানে প্রদত্ত হল।
১. স্বামীর আনুগত্য : স্বামীর আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য।
তবে যে কোন আনুগত্যই নয়,
বরং যেসব ক্ষেত্রে আনুগত্যের নিম্ন বর্ণিত তিন শর্ত বিদ্যমান থাকবে।
(ক) ভাল ও সৎ কাজ এবং আল্লাহর বিধান বিরোধী নয় এমন সকল বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য করা।
সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর অবাধ্যতায় কোন সৃষ্টির আনুগত্য বৈধ নয়।
(খ) স্ত্রীর সাধ্য ও সামর্থ্যরে উপযোগী বিষয়ে
স্বামীর আনুগত্য করা। কারণ আল্লাহ তাআলা মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্বারোপ
করেন না।
(গ) যে নির্দেশ কিংবা চাহিদা পূরণে কোন ধরনের
ক্ষতির সম্ভাবনা নেই, সে ব্যাপারে স্বামীর আনুগত্য করা। আনুগত্য
আবশ্যক করে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ‘নারীদের উপর পুরুষগণ শ্রেষ্ঠত্ব ও কর্তৃত্বের
অধিকারী।’ [বাকারা : ২২৭] আল্লাহ তাআলা আরো বলেন: ‘পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী।
কারণ আল্লাহ তাআলা-ই তাদের মাঝে তারতম্য ও শ্রেষ্ঠত্বের বিধান রেখেছেন। দ্বিতীয়ত পুরুষরাই
ব্যয়-ভার গ্রহণ করে।’ [নিসা : ৩৪]
২. স্বামী-আলয়ে অবস্থান: নেহায়েত প্রয়োজন ব্যতীত ও অনুমতি
ছাড়া স্বামীর বাড়ি থেকে বের হওয়া অনুচিত।মহান আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা
শ্রেষ্ঠ নারীদের ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রীদের সম্বোধন করে বলেন—সকল নারীই এর অন্তর্ভুক্তঃ ‘তোমরা স্ব
স্ব গৃহে অবস্থান কর,
প্রাচীন যুগের সৌন্দর্য প্রদর্শনের মত নিজেদের কে প্রদর্শন করে বেড়িও
না। ’ [আহজাব : ৩৩]
৩. নিজের ঘর এবং সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখা স্বামীর সম্পদ
সংরক্ষণ করা। স্বামীর সাধ্যের অতীত এমন কোন আবদার কিংবা প্রয়োজন পেশ না করা। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ স্ত্রী স্বীয় স্বামীর ঘরের জিম্মাদার। এ জিম্মাদারির
ব্যাপারে তাকে জবাবদেহিতার সম্মুখীন করা হবে।’ [বুখারী: ২৫৪৬]
৪. নিজের সতীত্ব ও সম্মান রক্ষা করা,নিজেকে কখনো পরীক্ষা কিংবা
ফেতনার সম্মুখীন না করা।
৫. স্বামীর অপছন্দনীয় এমন কাউকে তার ঘরে প্রবেশের অনুমতি না
দেয়া হোক না সে নিকট আত্মীয় কিংবা আপনজন। যেমন ভাই-বেরাদার। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ ‘তোমাদের অপছন্দনীয় কাউকে বিছানায় জায়গা না দেয়া স্ত্রীদের
কর্তব্য।’ [মুসলিম : ২১৩৭] স্বামীর উপস্থিতিতে তার অনুমতি ব্যতীত নফল রোজা না রাখা।
কারণ, রোজা নফল—আনুগত্য ফরজ।
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/10001/
https://ifatwa.info/6334/
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
স্ত্রীর কর্তব্য হলো স্বামীর আনুগত্য করা।স্বামী যদি স্ত্রীকে
বিয়ের পরে পড়ার অনুমতি দেয় তাহলে তার পড়াশুন করা জায়েয আছে। অন্যথায় জায়েয নেই।ইসলাম
নারীদের কে চাকুরী করতে সবসময় নিরুৎসাহিত করে।তবে বিশেষ প্রয়োজনে শর্তসাপেক্ষে জায়েয
আছে। প্রিয় বোন! আপনার জন্য উচিত স্বামীর কথা মান্য করা ও তার সাথে এবিষয়ে ঝগড়া বিবাদ
না করা। রিজিকের মালিক তায়ালা । আল্লাহ না করুক যদি আপনার স্বামী তাড়াতাড়ি মারাও যায়
আল্লাহ তায়ালা আপনার রিজিকের ব্যবস্থা করবেন ইনশাআল্লাহ। বিধায় আপনার প্রশ্নোক্ত বিষয়টি
শরিয়তের উজরের অন্তর্ভূক্ত নয়, যার ফলে আপনার জ্ন্য স্বামীর অসম্মতিতে উক্ত কাজ করা জায়েয হবে
না।