আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
237 views
in পবিত্রতা (Purity) by (1 point)
আমি নিয়মিত ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত।প্রায় দেড় বছ যাবৎ।

আমার সবসময় মনে হত আমি মনে হয় এখন মারা যাব এবং সবসময় সন্দেহ হয় আমি নাপাক হয়ে গেছি।আমি যখন প্রসাবে কিছু সমস্যা ছিল যেগুলো ডাক্তার দেখানোর ফলে আলহামদুলিল্লাহ অনেকটাই সেরে গেছে।কিন্তু আমার প্রসাবে জ্বালাপোড়া করে যা  ডাক্তারের কথা অনুযায়ী সমাধান হতে সময় লাগবে।কিন্তু আমার সমস্যা হচ্ছে আমি যখন গোসল করতে যা তখন আমার মনে হয় আমার প্রসাব পড়ে গেছে কিন্তু যখনি আমি চেক করি কোনো কিছু পাই না  আবার যখন  কোনো কারণে হাত ধোই তখন আমার মন হয় আমার হাতে নাপাকি চলে আসছে,আমার হাত ধোয়া হয়নি এইরকম অনকে সন্দেহ এমনকী আমি কাপড় ধোলেও মনে হয় আমার কাপড় গুলা পাক হয়নি।যদিও আমার প্রসাব পরে থাকে তাহলে কাপড়ের ভিতরে পড়েছে তাহলে  কী বাইরে নাপাক হবে।

আর আমার আরও দুইটা প্রশ্ন ছিলঃ

১)নাপাক এবং শুকনা কাপড় নিয়ে চেয়ারে বসলে কী চেয়ার নাপাক হবে??

২) স্বপ্নদোষ হওয়ার পর ফরজ গোসল করার নিয়ম?

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)
edited by

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/1379 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,

ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻮﺳﻮﺱ ﻟﻤﻦ ﺃﻳﺲ ﻣﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻓﻴﻨﻜﺪ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﺎﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ؛ ﻟﻌﺠﺰﻩ ﻋﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ : ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺄﺗﻴﻪ ﻣﻦ ﺣﻴﺚ ﺷﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﻘﺘﺼﺮ ﻓﻲ ﺣﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ، ﺑﻞ ﻳﺘﻼﻋﺐ ﺑﻪ ﻛﻴﻒ ﺃﺭﺍﺩ ، ﻓﻌﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ : ﺳﺒﺐ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ : ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﺃﻭ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ﻋﻼﻣﺔ ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﻋﻴﺎﺽ ...

অর্থাৎ শয়তান সে ব্যক্তিকেই প্ররোচনা দেয়,যাকে গোমরাহ করতে সে নিরাশ হয়ে যায়।সে কাউকে গোমরাহ করতে নিরাশ হয়ে গেলে সর্বশেষে সে মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে চায়।

আর কাফিরের নিকট শয়তান যেকোনো থেকে যেহেতু আসতে পারে,তাই কাফিরকে প্ররোচনা দেয়ার কোনো প্রয়োজন তার থাকে না।কেননা সে যেকোনো সময় তার ইচ্ছামত কাফিরকে ব্যবহার করতে পারে।সুতরাং হাদীসের অর্থ হলো এই যে,ঈন্তরে ঈমানের দানা থাকার দরুণই শয়তান ঈমানদারদেরকে প্ররোচনা দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে এটাই কাযী ঈয়ায রাহ এর পছন্দনীয় ব্যাখ্যা।(আল-মিনহাজ্ব-২/১৫৪)

এরকম শয়তানি প্ররোচনা থেকে বাচতে হলে, রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বিধিনিষেধকে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করতে হবে।সাথে সাথে ঐ চিন্তা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে।এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া সহ আল্লাহর যিকিরে নিজেকে ব্যস্ত করে রাখতে পারলেই তবে এরকম শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেবে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।(আল-মিনহাজ-২/১৫৫-১৫৬)

*ফরজ গোসল ইসলামী জীবন বিধানের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারো ওপর গোসল ফরজ হলে সঠিক পদ্ধতিতে গোসল আদায় না করা পর্যন্ত ওই ব্যক্তি নাপাক থাকে। আর নাপাক অবস্থায় নামাজ পড়লে সওয়াবতো হবেই না বরং কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। নামাজ ছাড়াও অনেক ইবাদত রয়েছে যেগুলো নাপাক অবস্থায় শুদ্ধ হয় না। ইসলামের বহু আমল সঠিকভাবে সম্পাদন করার জন্য শারীরিক পবিত্রতা অপরিহার্য।

মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,

وان كنتم جنبا فاطهروا

তোমরা যদি নাপাক (জানাবাত) অবস্থায় থাকো, তবে নিজেদের দেহ (গোসলের মাধ্যমে) ভালোভাবে পবিত্র করে নাও।’ (সুরা মায়েদা ৬)

পবিত্র কোরআনে অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা যাঁরা অধিক পবিত্রতা অর্জন করেন, তাদের প্রশংসা করেছেন।

ফরজ গোসলের নিয়ম:

১. গোসলের জন্য মনে মনে নিয়্যাত করতে হবে।

২. প্রথমে দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ৩ বার ধুতে হবে।

৩. এরপর ডানহাতে পানি নিয়ে বামহাত দিয়ে লজ্জাস্থান এবং তার আশপাশ ভালো করে ধুতে হবে। শরীরের অন্য কোন জায়গায় বীর্য বা নাপাকি লেগে থাকলে সেটাও ধুতে হবে।

৪. এবার বামহাতকে ভালো করে ধুইয়ে ফেলতে হবে।

৫. এবার ওজুর নিয়মের মত করে ওজু করতে হবে।

৬. ওজু শেষে মাথায় তিনবার পানি ঢালতে হবে।

৭. এবার সমস্ত শরীর ধোয়ার জন্য প্রথমে ৩ বার ডানে তারপরে ৩ বার বামে পানি ঢেলে ভালোভাবে ধুতে হবে, যেন শরীরের কোন অংশই বা কোন লোমও শুকনো না থাকে। নাভি, বগল ও অন্যান্য কুঁচকানো জায়গায় পানি দিয়ে ধুতে হবে।

৮. সবার শেষে একটু অন্য জায়গায় সরে গিয়ে দুই পা ৩ বার ভালোভাবে ধুতে হবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

১. পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে।

২. এই নিয়মে গোসলের পর নতুন করে আর ওজুর দরকার নাই, যদি ওজু না ভাঙ্গে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১.যদি কোন ব্যক্তি এমন নাপাক শুকনা কাপড় পরিহিত অবস্থায় চেয়ারে বসে যার নাপাকী চেয়ারে লাগে না তাহলে উক্ত চেয়ার পবিত্র হিসেবেই ধরা হবে। তবে যদি নাপাক কাপড়টি ভেজা হয় ও তার নাপাকী চেয়ারে লেগে যায় তাহলে চেয়ারটি নাপাক হবে।

২. ফরজ গোসলের নিয়ম উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...