আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (98 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
১. ফজরের নামাজে দ্বিতীয় রাকাআতে রুকু থেকে উঠে সামিআল্লাহু লিমান... রব্বানা লাকাল হামদ  বলে    হামদান কাসিরন দুআ টা  পরেছিলাম কিন্তু প্রথম রাকাআতে  হামদান কাসিরন দুআ পরি নি!  এতে নামাজ কি আবার পরতে হবে?!
২. ইসলামি শারিয়াহ মেনে কিভাবে সারাদিনে ৭/৮ ঘন্টা ঘুমানো যায়?!   রাতে ৭/৮ ঘন্টা ঘুমাতে গেলে তাহাজ্জুদ পরা যায় না!   বিস্তারিত বলবেন দয়া করে!
৩. ঘুম কমানোর জন্য ইসলামিক কোন উপায় আছে?!  ঘুম যেন কম হয় তার জন্য দুআ আছে?!

   অনেক ঘুম পায়,  ইবাদাত, কাজ করা যায় না ঠিক মতো! আর এখন সন্ধ্যার পর মাগরিব পড়েই ঘুম আসে!  এ থেকে বেচে থাকার উপায় কি?!

৪. রাত১০টা , ১১ টা,  ১১.৩০ টার ভিতর ঘুমালেও  তাহাজ্জুদের জন্য উঠতে পারি না অনেক দিন যাবত! রাতে তারাতাড়ি ঘুমালেও উঠতে পারি না!  দিনেও অল্প ঘুমাই!  এলারম দিয়ে রাখি অনেক তাও পারি না, এলারম যে বাজে শুনি ই না, অথচ অনেক লাউড এলারম দেয়া!  আমার সাথে যারা ঘুমায় তারা উঠে যায় অথচ আমি আলাপ ই পাই না!
অনেক চিন্তায় আছি এটা নিয়ে, কি করা যায়?!  একটা উপায় বলে দিন শায়েখ!!
আল্লাহ কি আমার উপর নারাজ হয়ে আছেন যার জন্য  তাহাজ্জুদ পড়তে পারি না?প্রায়  ২/৩ মাস হবে এমন হচ্ছে!

জাজাকাল্লাহ খাইরান!

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

 আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَهُوَ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ اللَّيْلَ لِبَاسًا وَالنَّوْمَ سُبَاتًا وَجَعَلَ النَّهَارَ نُشُورًا

তিনিই তো তোমাদের জন্যে রাত্রিকে করেছেন আবরণ, নিদ্রাকে বিশ্রাম এবং দিনকে করেছেন বাইরে গমনের জন্যে। (সূরা ফুরকান, আয়াত নং-৪৭)

 

 তিনি আরো বলেন-

وَجَعَلْنَا نَوْمَكُمْ سُبَاتًا

তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী, (সূরা নাবা, আয়াত নং-)

 

 হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ كُرَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، بَاتَ لَيْلَةً عِنْدَ مَيْمُونَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَهِيَ خَالَتُهُ فَاضْطَجَعْتُ فِي عَرْضِ الْوِسَادَةِ، وَاضْطَجَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَهْلُهُ فِي طُولِهَا، فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى إِذَا انْتَصَفَ اللَّيْلُ، أَوْ قَبْلَهُ بِقَلِيلٍ أَوْ بَعْدَهُ بِقَلِيلٍ، اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَلَسَ يَمْسَحُ النَّوْمَ عَنْ وَجْهِهِ بِيَدِهِ، ثُمَّ قَرَأَ الْعَشْرَ الآيَاتِ الْخَوَاتِمَ مِنْ سُورَةِ آلِ عِمْرَانَ، ثُمَّ قَامَ إِلَى شَنٍّ مُعَلَّقَةٍ، فَتَوَضَّأَ مِنْهَا فَأَحْسَنَ وُضُوءَهُ، ثُمَّ قَامَ يُصَلِّي. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقُمْتُ فَصَنَعْتُ مِثْلَ مَا صَنَعَ، ثُمَّ ذَهَبْتُ، فَقُمْتُ إِلَى جَنْبِهِ، فَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رَأْسِي، وَأَخَذَ بِأُذُنِي الْيُمْنَى، يَفْتِلُهَا، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أَوْتَرَ، ثُمَّ اضْطَجَعَ، حَتَّى أَتَاهُ الْمُؤَذِّنُ، فَقَامَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ، ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى الصُّبْحَ.

 ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী মায়মূনা (রাঃ) এর ঘরে রাত কাটান। তিনি ছিলেন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এর খালা। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমি বিছানার চওড়া দিকে শয়ন করলাম এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর স্ত্রী বিছানার লম্বা দিকে শয়ন করলেন; এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনিভাবে রাত যখন অর্ধেক হয়ে গেল তার কিছু পূর্বে কিংবা কিছু পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জেগে উঠলেন। তিনি বসে হাত দিয়ে তাঁর মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের আবেশ মুছতে লাগলেন। তারপর সূরা আলে-‘ইমরানের শেষ দশ আয়াত পাঠ করলেন।

 

এরপর দাঁড়িয়ে একটি ঝুলন্ত মশক থেকে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তিনি সুন্দরভাবে উযূ করলেন। তারপর সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমিও উঠে তিনি যেরূপ করেছিলেন তদ্রুপ করলাম। তারপর গিয়ে তাঁর বাঁ পাশে দাঁড়ালাম। তিনি তাঁর ডান হাত আমার মাথার উপর রাখলেন এবং আমার ডান কান ধরে একটু নাড়া দিলেন (এবং তাঁর), ডান পাশে এনে দাঁড় করালেন। তারপর তিনি দু রাক‘আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর দু রাক‘আত, তারপর দু রাক‘আত, দু রাক‘আত, তারপর দু রাক‘আত, তারপর দু রাক‘আত, তারপর বিতর আদায় করলেন। তারপর শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর তাঁর কাছে মুয়াযযিন এলেন। এরপর তিনি দাঁড়িয়ে হাল্কাভাবে দু রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। তারপর বেরিয়ে গিয়ে ফজরের সালাত আদায় করলেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৮৩)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. না, আবার উক্ত নামাজ পড়তে হবে না। ঐ নামাজ সহীহ হয়ে গিয়েছে।

২. আপনার সুবিধা অনুযায়ী রাতে বা দিনে ঘুমাবেন। তবে রাতের ঘুমটা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আর নবী-রাসূলগণ সকলে মূল ঘুম রাতেই ঘুমাতেন। আর দিনে কাজ করতেন এবং প্রয়োজন হলে হালকা বিশ্রাম নিতেন।

৩. ফরজ নামাজ ও তাহাজ্জদের নামাজের পর দুআ কবুল হয় তাই তখন আপনি দুআ করতে পারেন।

৪. আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী বেশী দুআ করতে থাকুন এবং ঐ রাতে তাহাজ্জদের নামাজ না পড়তে পারলে ঘুমানোর সময় কয়েক রাকআত তাহাজ্জদের নিয়তে নফল নামাজ পড়ে নিলেন। আল্লাহ তায়ালা চাইলে তাহাজ্জদের সওয়াব দিয়ে দিবেন ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...