আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
250 views
in পবিত্রতা (Purity) by (102 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম।
১) শরীরের কোনো জায়গায় নাপাক পানি লাগলো বা কোনো বস্তু যেমন বোতলে নাপাক পানি লাগলো।এরপর সেই নাপাকী ধোয়ার সময় ছিটে আসা পানি তো নাপাক হবে।যেমন লজ্জাস্থানে নাপাক পানি লাগলো তা ধোঁয়ার সময় ছিটে আসা পানি তো নাপাক হবে। তা ছিটে পেটে লাগলে পেট নাপাক হবে।এখন পেট ধোয়ার সময় সেই পানি আবার পায়ে লাগবে এতে তো পাও নাপাক হবে। আবার পা ধোয়ার সময় সেই পানি আরেক পায়ে লাগলে কি আরেক পাও নাপাক হবে? এভাবে সন্দেহ হয় এজন্য বারবার ঢুতেই থাকি।এখন কি করবো?

২) আপনাদের এই ফতোয়ায় দেখলাম
https://ifatwa.info/25863/?show=25863#q25863

যে কাপড় ধোয়ার সময় স্পষ্ট নাপাকি ব্যাতিত ছিটে আসা পানি নাপাক নয়।এতে সন্দেহের কারণ নাই।

কিন্তু আবার অন্য একটি ফতোয়ায় দেখলাম নাপাক কাপড় ধোয়ার সময় পানি ছিটে মগে লাগলে মগ নাপাক হয়ে যাবে।

এখন কোনটা মানবো?নাপাক কাপড় ধোয়ার সময় মগ দিয়ে পানি ঢাললে প্রায়ই মগে পানি ছিটে লাগে।এভাবে একবার মগ ধোয়া আরেকবার বালতি থেকে পানি নিয়ে কাপড় ধোয়ার পর আবার মগ ধোয়া এটা তো অনেক কষ্টকর হয়ে এবং অনেক পানিও অপচয় হয় কি করবো?

৩) বোতলের নিচে নাপাক পানি লেগেছিল।সেই নিচের অংশ উল্টা করে ধোঁয়ার সময় উপরের অংশে গড়িয়ে পরে।এজন্য উপরের অংশ যেহেতু নাপাক হবে তাই উপরের অংশ ধুই।কিন্তু উপরের অংশ ধোয়ার সময় সেই পানি ছিটে আবার প্যান্টে লাগে।এতে কি প্যান্ট ও নাপাক হবে। পায়েও কি লাগে এতে কি পাও নাপাক হবে?পা ধোয়ার সময় সেই পানি ছিটে আবার ছোট একটি বালতিতে পরে। বালটিও কি নাপাক হবে?

৪) কবিরা গুনাহ করলে কাফের হয় না জানি।একটি হারাম কাজ করার সময় অন্তরে আমি এটা সবসময় বিশ্বাস করি কাজটি হারাম কিন্তু হঠাৎ করে কাজটি হালাল এরকম চিন্তা অন্তরে আসলো।আসলে যে কাজটি হারাম তা আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং এতে আমার গুনাহ হচ্ছে জেনেই কাজটি করেছি কিন্তু মুহুর্তের জন্য হঠাৎ মনে হালাল এমন চিন্তা আসলো তাও আমি হারাম হিসেবেই বিশ্বাস করি।আমি মুখেও কোনো কিছু উচ্চারণ করি নাই।আমার কি ঈমান ঠিক আছে?

৫)কারও পায়ে আরেকজনের পা লাগলে সেই পা হাত দিয়ে ছুঁয়ে হাতে চুমু খাওয়া বা হয় বুকে লাগানো এটা পূর্বের ফতোয়ার বিদআত বলেছেন।কিন্তু এমন করার কারণে কি ঈমান ভঙ্গ হবে?

৬)নামাজে কলকলা হরফ আসলে অর্থাৎ যে পাঁচটি হরফ ধাক্কা দিয়ে পড়তে হয় এমন হরফ ঠিক করে উচ্চারণের পরেও কলকলা না করলে কি লাহনে জলি হবে?

৭)নামাজে ছানা/আউযুবিল্লাহ/বিসমিল্লাহ যেকোনো একটি সুন্নত দুইবার পড়লে কি সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে?

৮)আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব মাঝে মাঝে কিছু আয়াত একবার পড়ার পর আবার দ্বিতীয় বার পড়েন এমনিতেই।আমিও এরকম শুনে শুনে অভ্যাস হয়ে মাঝে মাঝে একই আয়াত দুইবার পড়ি।কিন্তু সবসময় না একবার বা দুইবার এতে কি নামাজে সমস্যা হবে?বা নামাজ ভঙ্গ হবে?

1 Answer

0 votes
by (54,150 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

আমরা https://ifatwa.info/25863/?show=25863#q25863 মাসআলাতে উল্লেখ করেছিলাম যে,শরীয়তের বিধান হলো নাপাক নাপাক কাপড় ধোয়ার সময় ছিটে আসা পানি নাপাক নয়।তবে স্পষ্ট নাপাকির চিন্হ বুঝা গেলে অবশ্যই নাপাক হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي الرَّجُلِ يَغْتَسِلُ مِنَ الْجَنَابَةِ فَيَنْضَحُ فِي إِنَائِهِ مِنْ غُسْلِهِ، فَقَالَ: لَا بَأْسَ بِهِ

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. ফরয গোসলের সময় পাত্রে পানির ছিটা পড়া সম্পর্কে বলেন, এতে কোনো সমস্যা নেই।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৭৮৯; কিতাবুল আছল ১/২০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৮; মাবসূত, সারাখসী ১/৪৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/২১১; আলবাহরুর রায়েক ১/৭০

অপবিত্র কাপড় তিনবার ধৌত করার পর পবিত্র হয়ে যাবে। ধৌত করার সময় ব্যবহৃত পানির ছিটা উক্ত কাপড়ে লাগলে কোনো অসুবিধা নেই। (আল মুহিতুল বুরহানি : ১/২২৩, হিন্দিয়া : ১/৪২)

তবে ইহার থেকে সতর্কতামূলক বেঁচে থাকা উচিত। কেননা হাদীস শরীফে এসেছেঃ

 عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: مَرَّ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَبْرَيْنِ، فَقَالَ: ” إِنَّهُمَا لَيُعَذَّبَانِ، وَمَا يُعَذَّبَانِ فِي كَبِيرٍ، أَمَّا أَحَدُهُمَا: فَكَانَ لَا يَسْتَنْزِهُ مِنَ البَوْلِ – قَالَ وَكِيعٌ: مِنْ بَوْلِهِ – وَأَمَّا الْآخَرُ: فَكَانَ يَمْشِي بِالنَّمِيمَةِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ দু’টি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম হচ্ছিলেন। বললেন, এ দু’টি কবরে আযাব হচ্ছে। কোন বড় কারণে আজাব হচ্ছে না। একজনের কবরে আজাব হচ্ছে সে পেশাব থেকে ভাল করে ইস্তিঞ্জা করতো না। আরেকজন চোগোলখুরী করতো। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৯৮০, বুখারী, হাদীস নং-১৩৬১},

আরো জানুনঃhttps://ifatwa.info/11686/

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. যে সমস্ত অঙ্গে উক্ত পানির ছিটা পড়বে, ঐ অঙ্গগুলো অবশ্যই ধৌত করে নিতে হবে।কিন্তু উক্ত পানির ছিটার কারণে সমস্ত শরীর নাপাক হবে না।সুতরাং যেই অঙ্গে নাপাক লাগাবে সেই অঙ্গটিকে ভালোভাবে খুব সতর্কতার সাথে ধুয়ে নেবে। ওয়াসওয়াসা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবে।

২. সরাসরি নাপাক ধৌত করা পানি যেখানেই লাগুক তা নাপাক হবে। তবে নাপাক ধুয়ে নেওয়ার পরে উক্ত মগ/বস্তুর গায়ে লেগে থাকা পানি নাপাক না। বিধায় সতর্ক থাকতে হবে যে, নাপাক ধোয়া পানি যেন মগে বা পাত্রে না লাগে। যদি সরাসরি নাপাক পানির ছিটা মগে না লাগে তাহলে বারবার মগ ধোয়ার প্রয়েজন নেই।

৩. জ্বী! বোতলের নাপাকী ধৌত করার সময় যেই পানি প্যান্টে লেগেছে তা নাপাক। সুতরাং প্যান্টের ঐ অংশটুকু যেখানে নাপাক লেগেছে তা ধৌত করতে হবে এবং পায়ে লাগলে পাও ধৌত করতে হবে। এবং নাপাক পানির ছিটা বালতিতে পড়লে বালতির পানিও নাপাক হয়ে যাবে।

৪.অনিচ্ছাকৃত এমন চিন্তা অন্তরে আসলে কুফরী হবে না কিন্তু কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে কোন হারামকে হালাল মনে করলে কাফের হয়ে যাবে।সর্বপরি উক্ত হারাম কাজ করার কারণে ফাসেক হবে। যা থেকে অনতিবিলম্বে তওবা করা আবশ্যক।

৫.মুরব্বীদের গায়ে পা লাগলে চুমু খাওয়া মূলত সম্মান দেখানোর জন্য হয় ।চুমু খাওয়ার বিষয়টিকে জরুরী মনে করা বা শরয়ী বিধান মনে করা বিদআত। এমনিতে করতে কোন সমস্যা নেই ৷(রাদ্দুল মুহতার-৫/২৪৬, তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-২৫৯, ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-৭/১৪৭০

৬. কুরআন তেলাওয়াত করার সময় কলকলা হরফে ধাক্কা দিয়ে পড়তে যা তাজবীদের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এমন হরফ ঠিক করে উচ্চারণের করার পরেও যদি সঠিকভাবে কলকলা আদায় না হয় তাহলে  লাহনে জলি হবে না এবং নামাজও ফাসেদ হবে না। তবে বিশুদ্ধভা্বে তাজবীদসহকারে তেলাওয়াত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।

৭. নামাজে প্রতিটি ওয়জিব ও ফরজকে যথা সময়ে আদায় করতে হয়। কিন্তু কেউ যদি নামাজে ছানা/আউযুবিল্লাহ/বিসমিল্লাহ যেকোনো একটি দুইবার পড়ে তাহলে সে পরবর্তি ওয়াজিব আদায়ে বিলম্ব করল বিধায় তার উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে।

.ইচ্ছাকৃত ভাবে একই আয়াত একাধিক বার পড়া সুন্নাত পরিপন্থি , তবে নামাজ হয়ে যাবে কিন্তু এমন অভ্যাস পরিহার করাই শ্রেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 78 views
0 votes
1 answer 152 views
...