আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
808 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (53 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ, 

মুহতারাম, কোনো পরিবার যাতে দ্বীনের চর্চা নেই, উপার্জনের উৎস হারাম এমন পরিবারে জন্মানো এক সন্তানের অন্তরের চাপা আর্তনাদ এবং মনের মাঝে উঁকি দেওয়া নানা প্রশ্ন (এ বিষয়গুলোতে শরীয়ত কি নির্দেশনা ও বিধান আরোপ করে অনুগ্রহ করে বিস্তারিতভাবে ব্যক্ত করবেন) ‍:

 

১)কুপ্রভাব

জানামতে, পিতা-মাতার মিলনের প্রথম মুহূর্ত থেকে শুরু করে তাদের পারস্পরিক এবং ব্যক্তিগত আচরণ, কাজকর্ম এবং মানসিকতা সকল কিছুই সন্তানের উপর সুস্পষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। তাহলে কি একারণেই (পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্যানুসারে) আমার মধ্যে হারাম কাজসমূহের প্রতি তীব্র আকর্ষণ, দ্বীন পালনে অবহেলা বা মনযোগের অভাব, বারবার চেষ্টা-তওবা করার পরেও গুনাহের দিকে ফিরে আসা, হিংসা, অহংকার ইত্যাদি নিন্দনীয় স্বভাবগুলি বিরাজমান? যদি তাই হয় তাহলে আমার করনীয় কি?

২) অজ্ঞতা

শৈশবে দ্বীন শেখার কোন সঠিক ব্যবস্থাই পাইনি। সঠিকভাবে কুরআন পড়া শেখানো হয়নি, নামাজের হুকুম-আহকাম মাসআলা-মাসায়েল কিছুই শেখানো হয়নি, নামাজ যে পড়তে হবে তাও শেখানো হয়নি, এমনকি পবিত্রতা, ফরজ গোসল ইত্যাদিও শেখানো হয়নি। এমন অবস্থাতেই বালেগ হলাম, সতর-ওযু-ফরজ গোসল-পবিত্রতা সম্পর্কে কিছুই জানিনা, নামাজ পড়িনা, কখনো পড়লেও তা হয় আগাগোড়া ভুলে ভরা (আহকামে ভুল, কেরাতেও ভুল) নামাজ। আহ্, কতগুলো বৎসর এমন বেদ্বীন অবস্থায় আমি গুনাহের মহাসাগরে ডুবে ছিলাম। উপরন্তু বালেগ হওয়ার পরে যিনা-ব্যভিচার সম্পর্কে, যৌনশিক্ষা সম্পর্কে কোন ধারণাই দেওয়া হয়নি, ফলশ্রুতিতে নিজেকে আবিস্কার করি এক জঘন্য, নির্লজ্জ, গোপন গুনাহের জগতে ; যার নির্মম করালগ্রাসের প্রভাব আমাকে আজও টেনে ধরে আছে। 

৩) হারামের হামলা

আরো পরে ১৯-২০ বছরে গিয়ে বুঝতে পারলাম, আমার পরিবারের উপার্জনের উৎস হারাম। অর্থাৎ আমার ভ্রুণ অবস্থা থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যা কিছু খেয়েছি, যা কিছু পরেছি, যত কিছুই করেছি তা সব‌ই হারাম উপার্জনের টাকায়। জানামতে, যে শরীর হারাম দ্বারা গঠিত তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, তার দুআ কবুল হয় না, তার কোনো ইবাদত কবুল হয় না, তার মধ্যে গুনাহের স্পৃহা প্রবল থাকে ইত্যাদি আরো কত কঠোর নির্দেশনা আছে। আহ্, আর আমার শরীরের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর প্রতিটি অংশ‌ই হারাম দ্বারা গঠিত। আল্লাহ তায়ালার অসীম দয়ায় অভাবনীয়-অলৌকিক উপায়ে দ্বীনের পথে চলার সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু এরপর যত ইবাদত করেছি,করছি সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সব‌ই যে হারাম দ্বারা গঠিত শরীরে ও হারাম উপার্জনের টাকায় করা।

৪) হালাল উপার্জনে প্রতিবন্ধকতা

এই হারামের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার জন্য যে নিজে হালাল উপার্জনের চেষ্টা করব সেখানেও বিপত্তি, আমি যে সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার শৃংখলে আবদ্ধ। আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমানে একটি সরকারি মেডিকেলে কলেজে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছি। আর পড়ালেখা তো যত সময় যায় তত আরো কঠিনই হয়। এখান থেকে উপার্জন করাও অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ। অন্য কোন উপার্জনের কাজ বা চেষ্টার কথা চিন্তা করতে গেলে মনে আসে যে এর পেছনে যে সময় ও শ্রম ব্যয় হবে তা দ্বারা এই পড়ালেখার আমানতদারিতার সাথে গাফিলতি হবে না তো? স্বল্প সময় কাজের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ পরিমাণ উপার্জন পেতে পারি এমন কাজই বা পাই কই? ছাত্রজীবনে পড়াশোনার মধ্যেও ছিল গাফিলতি তাই টিউশনির কথা চিন্তা করলে মনে হয় আমার দ্বারা অন্যের সাথে প্রতারণা-অন্যের হক নষ্ট হবে না তো? তাছাড়া নিজের শারীরিক অক্ষমতা (তোতলামো ও অ্যাজমা রোগ) তো 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' হিসেবে রয়েছেই। মোটকথা, নিজের ভরণপোষণ ও পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য হালাল অর্থ কিভাবে পাব?

৫) নির্মম একাকীত্ব

এ বিষয়টি যে পরিবারকে জানাবো, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলতে হয় যে তা হবে বধিরের সামনে চিৎকার করা। কারণ এ পর্যন্ত পরিবার থেকে দ্বীন পালনে কেবল বাধাই পেয়ে এসেছি; কোরআন পড়া শেখায় বাধা, দাঁড়ি রাখায় বাধা, মসজিদে নামাজ পড়তে বাধা, টাখনুর উপর কাপড় পরতে বাধা, ফজর নামাজ পড়তে বাধা, সুন্নতি পোশাক পরতে বাধা, দ্বীন শেখায় সময় ব্যয় করায় বাধা, টেলিভিশন থেকে দূরে থাকায় বাধা, গায়রে মাহরামদের থেকে দূরে থাকায় বাধা…. আর কত বলব; কিন্তু বিপরীতে আমি তাদেরকে কখনো দ্বীনের কোন বিষয় মানাতে পারিনি (পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য বলেও হয়তো কেউ কখনো পাত্তাই দেয়নি)। ""ফাসেক বিষয়ে বিস্তারিত" শিরোনামের 2820 নং ফতোয়ায় ফাসেকের যেসব বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে তার অনেকগুলোই তাদের মধ্যে বিদ্যমান এবং এ ফতোয়ায় ফাসেকের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে যেসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আমার পরিবারের সাথেও এতদিন আমি এমন ধরনের আচরণ‌ই করার চেষ্টা করে আসছি। অধিকন্তু আমি যেখানে পড়ালেখা করি সেখানকার অধিকাংশ ছাত্রের মধ্যেও এসব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান, তাই তাদের সাথেও অগত্যা এমন আচরণ‌ই করতে হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এসকল কারণে এবং সাথে নিজের শারীরিক অক্ষমতার (তোতলামো ও অ্যাজমা রোগ) কারণে আমিও তাদের সকলের কাছে পছন্দের পাত্র নই। অর্থাৎ সোজা কথায়, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব সকলে থাকার পরেও আমি তাদের সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন। সকলের মাঝে থেকেও আমার অনুভূতি হয় যে আমি একা, একদম একা।

৬) মৃত্যুকামনা

(কেবলই মনের আবেগ টুকু প্রকাশ করা হয়েছে মাত্র, ভুল হলে মাফ করবেন)

যদি কোন হক্কানী-দ্বীনদার পরিবারে জন্ম হতো, তাহলে কতইনা উত্তম হত! তাজবীদের সাথে তারতীলের সাথে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারতাম, কোন নামাজ কাযা হতো না, পরিপূর্ণভাবে আল্লাহ তায়ালার দেয়া দ্বীন শিক্ষার সুযোগ পেতাম, দ্বীন নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পেতাম, ইবাদতগুজার বান্দা হতাম, আমলি জিন্দেগী হইত, গুনাহের পরিবেশ থেকে মুক্ত থাকতাম…. কতই না ভালো হতো।

এই পরিবারের ও গুনাহের পরিবেশের কুপ্রভাব, অজ্ঞতা, হারাম দ্বারা শরীর গঠন, হারামের মধ্যে ডুবে থাকা, উপার্জনহীনতা, নিজের জীবনের অগণিত জঘন্য গুনাহসমূহের বোঝা ও এদের স্মৃতি, শিক্ষাব্যবস্থার শৃংখল, শারীরিক অক্ষমতা, নির্মম একাকীত্ব ইত্যাদির কারণে সত্যিই অনেক সময় মনে হয় কেন আমার জীবন এত যাতনাময় হল? মৃত্যুকামনা করতে ইচ্ছে করে, হয়তো মরে গেলেই এতসব ব্যর্থতা, যন্ত্রণা, সমস্যা থেকে মুক্ত হব; হ্যাঁ,সত্যিই মাঝে মাঝে মরে যেতে ইচ্ছে করে…..

 

 এ প্রসঙ্গে প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যক্তির মাসায়েল ভিত্তিক কিছু প্রশ্ন: 2866 নং প্রশ্ন

1 Answer

–1 vote
by (589,140 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম


জবাবঃ-

স্বাভাবিক নিয়ম এটাও যে, দ্বীনদারে ঘরে দ্বীনদার জন্মনিবে,আর বেদ্বীনের ঘরে বেদ্বীন জন্ম নিবে।সুস্থ মানুষের ঘরে সুস্থ মানুষ জন্ম নিবে এবং তার উল্টো।মুফতী শফী রাহ নিম্নোক্ত আয়াতের ব্যখ্যায় বলেন, তবে আল্লাহ তা'আলা তার অপার মহিমায় তিনি জীবিত(দ্বীনদার) থেকে মৃত(বেদ্বীন) এবং মৃত থেকে জীবিতও সৃষ্টি করে থাকেন।

এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ وَيُحْيِي الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا وَكَذَلِكَ تُخْرَجُونَ
তিনি মৃত থেকে জীবিতকে বহির্গত করেন জীবিত থেকে মৃতকে বহির্গত করেন, এবং ভূমির মৃত্যুর পর তাকে পুনরুজ্জীবিত করেন। এভাবে তোমরা উত্থিত হবে।(সূরা রূম-১৯)


সুতরাং, কারো পিতা মাতা বেদ্বীন হলে যে, সন্তানও বেদ্বীন হবে বিষয়টা এমন নয়।


(২)
দ্বীনের জ্ঞান শিক্ষা করা ফরয।এখন প্রাথমিক জীবনের জন্য খালিছ নিয়তে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করতে হবে।আপনার প্রশ্নের মত সাহাবায়ে কেরামদের ও প্রশ্ন ছিল,তখন তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলেন,
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(৩৯/৫৩)

(৩)
নাবালক অবস্থায় সন্তানের জন্য পিতার হারাম মাল থেকেও ভক্ষণ জায়েয।


(৪)
হালাল উপার্জনের চেষ্টা করা একান্তই জরুরী।এবং ভবিষ্যতে সদকাহ নিয়তে পিতার হারাম মাল থেকে আপাতত প্রয়োজন পূরণ করতে পারেন,যদি শতচেষ্টার পরও আপনার কাছে হালাল উপার্জনের কোনো রাস্তা না থাকে।

(৫)
হেকমতের সাথে দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যান। ইনশাআল্লাহ সফলতা আসবে।




(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (26 points)
দ্বীনের পথে আসার পর দুটো আমল ছেড়ে দেবার দ্বারা হতাশার মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসে; যার ফলাফল নিফাক, দ্বীন ত্যাগ, এমন কি আত্মহত্যাও হতে পারে। আর সেই দুটো আমল হলো:
.
১) দুআ করার অভ্যাস ছেড়ে দেয়া
২) সকাল-সন্ধ্যার আযকার অবহেলা করা
.
দুআ মুমিনের সোপান। উবুদিয়াতের প্রমাণ। তাওয়াক্কুলের সারনির্যাস। মুমিন তার তাবৎ আবদার, দুঃখ-কষ্ট, অভিযোগ—এই দুআর মাধ্যমে মেলে ধরে মাওলার দুয়ারে। বিপদাপদে এই দুআই তার রক্ষাকবচ হয়। সংশয়ের স্রোতে দাঁড়িয়ে দ্বীনের হাতল শক্ত করে ধরে রাখার প্রয়াস যোগায়। দুনিয়ার সকল তিরস্কার, লাঞ্ছনা আর অপমানের মুখেও ব্যক্তির মনকে আল্লাহর সাথে জুড়ে রাখে এই দুআ। দুআ আছে বলেই দুনিয়া ত্যাগ করেও দুনিয়াতে যাহিদরা বেঁচে থাকে। দুআ আছে বলেই শত্রুর চেয়ে কয়েকগুণ কম শক্তি আর লোকবল নিয়েও মুজাহিদরা জিতে ফিরে। 
.
আর যিকির হলো আল্লাহর নূরকে বুকে ধারণ করার সর্বোত্তম উপায়। অর্থ বুঝে বুঝে, মন দিল লাগিয়ে, তাওহীদের শিক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে যে যিকির করা হয়, সেই যিকির ফিতনার গাঢ় অন্ধকারেও মুমিনকে আলোর পথ দেখায়। ঈমানের স্বাদ জিহ্বায় এনে দেয়। অন্যান্য আমলগুলো প্রাণবন্ত করে তোলে। হাজারো কষ্টের মাঝে অন্তরে প্রশান্তির জোয়ার বয়ে দেয়। এছাড়া সকাল-সন্ধ্যা নিরাপত্তা লাভের সুন্নতি যিকির ব্যক্তিকে রক্ষা করে জীন, শয়তানের অনিষ্ট থেকে। 
.
একজন মুমিন যখন দুআ আর যিকিরের ব্যাপারে গাফেল হয়ে যায়, তার আমলগুলো নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। ঈমানী তেজ নিভে যায়। হতাশার ক্ষীণ ঝাপ্টা জীবনকে চুরমার করে দেয়। এমনকি কখনও কখনও গাফলতির তীব্রতা এতো ব্যাপক হয় যে, ফিতনার হালকা ছোয়ায় ঈমান তার গোড়াসহ পঁচে যায়।
.
দুআ আর যিকিরের বাস্তবতা যতদিন না আমরা অনুধাবন করতে পারব, প্র্যাক্টিক্যালি, ততদিন এই হাতিয়ার দুটো আমাদের কোনো কাজে আসবে না। সঠিকভাবে একে প্রয়োগ করে আমাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে পারব না। জীবনটা বিরক্তিকর হবে, আর আমলগুলো যান্ত্রিকই থেকে যাবে।

--মহিউদ্দিন রুপম ভাই
by (26 points)
১.কুপ্রভাব নিয়ে বেশী চিন্তা করলে শয়তান একে আপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে।দেখুন,সাহাবীদের ম্যাক্সিমাম এর বাবা মায়ের অবস্থা আপনার বাবা মায়ের চেয়েও খারাপ ছিলো,তারপরও তারা সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ হয়েছেন।কারন হলো জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভাল,তাদের কাছে সত্য দাওয়াত আসলে তারা কোনো অযুহাতে ফিরিয়ে না দিয়ে যথাসম্ভব আমল করার চেষ্টা করেছেন।এই আমলে আল্লাহ সুবহানা তা'আলার কোনো লাভ লোকশান নেই,অগনিত ফেরেশতা আসমানে ইবাদতরত আছে।তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য -আমাদের গুনাহ করার চাহিদা ও সামর্থ্য দুইটাই আছে, তাও আমরা আল্লাহর ভয়ে বিরত থাকি,আল্লাহর কাছে এইটা বেশী প্রিয়।গুনাহ করেছেন কিনা তার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ গুনাহ এর পর খালিস দিলে তড়িৎগতিতে তওবা করে, অনুতপ্ত হয়ে গুনাহ থেকে নিজেকে সড়িয়ে এনেছেন কিনা।তওবা করার পর আবার গুনাহ করলে আবার তওবা করবেন এবং ফিরে আসবেন যে আর কোন দিনও করবোনা।ফিরে আসাটাই মুখ্য। আল্লাহ শুধু আমাদের চেষ্টাটাই দেখেন আর কারও সামর্থ্যের বাইরে বোঝা চাপান না(সুরাহ বাকারাহ এর শেষ ২ আয়াত এর অর্থ ও তাফসীর দেখুন)।
by (26 points)
edited by
২.আগের অজ্ঞতা কোন বিষয় না এখন তওবা করে ইল্ম অর্জন করেন এবং ইল্ম অনুযায়ী আমল করেন। আমল ছাড়া ইল্ম দাম নেই।
৩.হারামের হামলা থেকে বাচার জন্য প্র্যাকটিকাল কিছু টিপস:
*তাকওয়া-যে বন্ধ দরজার পিছনে হারাম কাজ করা হয় সেই দরজার ফাক দিয়েই আল্লাহ আপনার বেচে থাকার জন্য অক্সিজেন দেন।যেকোনো মুহুর্তে আমরা মারা যেতে পারি,শুনেছি যে যেই অবস্থায় বেশী থাকে ওই অবস্থায় মওত হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।কি অবস্থায় মওত হলো এটা কোন অবস্থায় জন্মেছি তার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
*তাওক্কুল:আল্লাহ তওফিক না দিলে গুনাহ থেকে বাচা ও ভালো কাজ করা সম্ভব না, তাই কোন কাজ করার আগে আল্লাহর কাছে তওফিক চাওয়া একান্ত আবশ্যক।
*নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আমাদের আগ্রহ অধিক।কামনা বাসনা যত মাটি চাপা দিবেন তত মাটি ফুরে বেড়িয়ে আসার চেষ্টা করবে।তাই নিজের দূর্বলতার মুখোমুখি হন যে এই কাজটা আমি কেন করছি? এতে আমার কি লাভ? এই কাজটাতে কি আল্লাহ খুশী হবেন? এই কাজটার পিছনে কিসের প্রভাব? এর কুফল কি? এর শাস্তি কি? আল্লাহ ও আল্লাহর রসুলের সামনে যখন দাড়াবো তখন কি লজ্জা করবে না? আল্লাহ সবসময় দেখছেন তাও আমি লজ্জা পাচ্ছিনা! এসব প্রশ্ন নিকের বিবেককে করবেন,বিবেকের চেয়ে বড় আদালত এই দুনিয়ায় নেই।
ধরুন একজন চোখের যিনায় আক্রান্ত,সে এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পেতে যা করবে- বেপর্দা মেয়েদের থেকে নজর হিফাযত করা,নযর হিফাযত করলে কি কি পুরস্কার পাবে তা বার বার মনে মনে আওড়ানো,আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করা দুনিয়ার একটা মেয়ে আমাকে কতটুকু আর দিতে পারে যা পারবে হুরেরা? counter attack questioning গুনাহ এর কাজটার লাস্যময়ী রুপ থেকে বাস্তবতার প্রেক্ষাপট দিবে।ফিরে আসতে সহায়ক হবে-পরীক্ষিত।
* গুনাহ এর খেয়াল আসার সাথে সাথে আল্লাহর যিকির ও গুনাহ করার সাথে সাথে নতুন অযু করে ২ রাকাত নফল পড়া :এর যে কত ফযিলত তা বলে শেষ করা যাবেনা।
*মন্দ সংস্পর্শ ও বন্ধুবান্ধব থেকে সড়ে আসুন।দরকার হলে পুরাতন আইডি বন্ধ করে নতুন ফেবু আইডি খুলুন যেখানে আপনার শুধু দ্বীনী ভাইরা থাকবে। সংগ দোষে লোহা ভাসে।you can't expect different result when putting same ingredients, you can't get pure while staying connected to what made you unpure.ফিক্বহের পরিভাষায় আগে নাজাসাত(ময়লা) দূর করতে হবে তারপর ত্বহারত(পবিত্রতা) অর্জন।আল্লাহর আমাদের ভিতর বাহির পরিস্কার করুন,নিয়তকে খালিস করুন।
*মুক্ত বাতাসের খোজে একটা বই আছে মেবি, ওইটা পড়া ও আমল করায় ফায়দা হবে ইন শা আল্লাহ।
৫.নির্মম একাকীত্ব সবাই একটা না একটা সময় থাকে,পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থী নিজের প্রশ্নের উত্তর একাই লিখে।আরিফ উস্তাদ এক শাইখ থেকে বিয়ের জন্য উপযোগী মাসনূন কিছু আমল সমষ্টি বলেছিলেন।নিচে দিয়ে দিবো ওইটা,ইন শা আল্লাহ।আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল রেখে সবরের সাথে করবেন।বিয়ে হলেই যে সবাই সুখি থাকে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যায় এমন না।পরীক্ষা সবসময়ই থাকবে।নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে।
৬.সুইসাইডাল থট:একটা জিনিস চিন্তা করুন-আপনি আমি যত অসুস্থই হইনা কেন,আল্লাহর রহমতে হাসপাতালের বেডে সুয়ে থাকা মানুষ ও জন্ম প্রতিবন্ধীদের থেকে ভালো আছি আলাহামদুলিল্লাহ।কি পেয়েছি তা যখন না পাওয়া গুলোর উপরে প্রাধান্য পাবে তখনই প্রকৃত সুখী হবে মানুষ। শোকরগুজার করলে আল্লাহ নিয়ামত বাড়িয়ে দেন।শুধু দোয়া করলেই হবে এমন না,সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টাও করতে হবে।রুকইয়া সাপোর্ট গ্রুপ -আব্দুল্লাহ আল মামুন যেটার এডমিন ওই গ্রুপটায় গিয়ে নিজের সমস্যাগুলোর সুন্নাহসম্মত সমাধান খুজবেন।খালিছ নিয়ত-মেহনত-তাওয়াক্কুল =সফল রুকইয়া।গ্রুপের পিন পোস্ট পড়বেন।আব্দুল্লাহ ভাই এর একটা ব্লগ আছে লিংক দিবো।ওইটার রোজনামচা গুলো পড়বেন।মানসিক সুকুন পেয়েছিলাম।
reactive সবাই হতে পারে proactive হতে হবে ইন শা আল্লাহ।আল্লাহর কাছে এমন দোয়া করবেন যে আল্লাহ আমাকে বাচিয়ে রাখো যতদিন জীবন আমার জন্য কল্যানকর আর নিয়ে যেও যখন আমার জন্য মরন জীবনের চেয়ে বেশী কল্যানকর।
এতো গুলো কথা এই জন্য বলা,আংশিক আপনার অবস্থানে বেশ কিছু বছর কাটানো হয়েছে,অন্ধকারের বাসিন্দারা বেশী জানে আলোর মূল্য,অন্ধকার থেকে আলোতে আশা মানুষের খোজ করুন,তারা আপনার আত্মশুদ্ধির সহায়ক হবে।হায়! উপরের কথাগুলো যদী আমি আরও আগে জানতাম ও মানতাম।যারা যারা এই কথাগুলো দেখবেন তারা যদী বিন্দুমাত্র উপকৃতও হন তাহলে আমাদের নতুন দ্বীনে ফেরা ভাই বোনদের জন্য খালিস দিলে দুয়া করবেন যেন আল্লাহ হিদায়াতের উপর অটল রাখেন।
ভুল ত্রুটি মাফ করবেন।
by (26 points)
#আবিয়াত্তাদের_জন্য

বিবাহ ইসলামের অন্যতম প্রধান সামাজিক বিধান এবং মহানবী ﷺ-এর এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ।

বিয়ে করা শুধু মহানবী মুহাম্মাদ ﷺ-এর সুন্নাহই নয়; বরং তা অন্যান্য নবীগণেরও সুন্নাহ। আল্লাহ তা'আলা বলেন:

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلاً مِنْ قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجاً وَذُرِّيَّةً

আমি আপনার পূর্বে অনেক রাসুল প্রেরণ করেছি এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান দিয়েছি। (সুরা রাদ : ৩৮)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন: "নিশ্চয়ই আমি নারীদের বিয়ে করি। সুতরাং যে আমার সুন্নাহ থেকে বিমুখ হবে, সে আমার (উম্মাহর) অন্তর্ভুক্ত নয়।" 
(সহিহ বুখারী : ৫০৬৩; 
সহিহ মুসলিম : ১৪০১)

▪দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য আমলঃ

(প্রতিদিন ফজর এবং মাগরিবের ফরয সালাতের পর পড়বেন)

1⃣  দরূদে ইব্রাহীম (৩ বার)

اَللّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ اٰلِ مُحَمَّدٍ 

হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ(সঃ)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ(সঃ)-এর বংশধরগণের উপর রহমত নাযিল করুন।

كَمَا صَلَّيْتَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَعَلَىٰ اٰلِ إِبْرَاهِيمَ 

যেমন আপনি রহমত নাযিল করেছিলেন ইবরাহীম(আঃ) এবং ইবরাহীম(আঃ)-এর বংশধরগণের উপর।

إِنَّكَ حَمِيدٌ مَّجِيدٌ 

নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসনীয়,সম্মানীয়।

اَللّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَىٰ اٰلِ مُحَمَّدٍ 

হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ(সঃ)-এর উপর এবং মুহাম্মাদ(সঃ)-এর বংশধরগণের উপর বরকত দিন।

كَمَا بَارَكْتَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَعَلَىٰ اٰلِ إِبْرَاهِيمَ 

যেমন আপনি বরকত দিয়েছিলেন ইবরাহীম(আঃ) এবং ইবরাহীম(আঃ)-এর বংশধরগণের উপর।

إِنَّكَ حَمِيدٌ مَّجِيدٌ 

নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসনীয়,সম্মানীয়।

(বুখারী : ৩৩৭০)

2⃣ সূরা কাসাসের ২৪ নং আয়াতের অংশ (৭ বার)

رَبِّ اِنِّيْ لِمَاۤ اَنْزَلْتَ اِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيْرٌ

"রব্বি ইন্নী লিমা--- আংঝালতা ইলাইয়্যা মিন খইরিং ফাক্বীর।"

আয়াতের অর্থঃ
হে আমার রব, নিশ্চয় আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই নাযিল করবেন, আমি তার মুখাপেক্ষী।

কখন, কোন পরিস্থিতিতে মূসা (আঃ) এই দূ'আ করেছিলেন তা বুঝতে সূরা কাসাস এর (১৫-২৪) নাম্বার আয়াত পড়তে পারেন এখান থেকে - 


3⃣ সূরা তাওবাহ্ ১২৯ নং আয়াতের অংশ (৭ বার)

حَسْبِيَ اللّٰهُ ﻵ إِلٰهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ 

"হাসবি ইয়াল্লহু লা--- ইলা-হা ইল্লা হুয়া 'আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রব্বুল 'আরশিল 'আযীম।"

আয়াতের অর্থঃ
আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ্ নেই । আমি তাঁরই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহা’আরশের রব।

4⃣ ইস্তিখারার সংক্ষিপ্ত দু'আ (৭ বার)

   اللَّهُمَّ خِرْ لِي وَاخْتَرْ لِي
 
"আল্লহুম্মা খিরলী ওয়াখ তারলী।"

আয়াতের অর্থঃ
হে আল্লাহ্! আমার জন্য যেটা মঙ্গল সে দিকে আমাকে চালিত করুন।

(সুনান তিরমিযী : ৩৫১৬;
সুনান ইবনু মাজাহ্ : ১৫৫৭)

5⃣ দরূদে ইব্রাহীম (৩ বার) ও সূরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াত।

★দুআগুলো আরবি দেখে পড়বেন, কেননা বাংলা উচ্চারণ থেকে আরবি সহিহ হয়না।
ফ্রম আমাদের উস্তাজ মুফতি আরিফুল ইসলাম। 
[ইরানের একজন শায়েখ থেকে শ্রবনকৃত]
by (26 points)
https://thealmahmud.blogspot.com/?m=1
এইটা ব্লগের লিংক।এথেকে আলহামদুলিল্লাহ অনেক উপকৃত হয়েছি।মানসিক সুকুন পেয়েছি।ইন শা আল্লাহ উপকৃত হবেন।
by
ভাই,সাহাবায়ে কিরামরা প্রাক ইসলামিক যুগে আপনার চেয়েও খারাপ অবস্থায় ছিলেন,তাদের অধিকাংশই আপনার মতো এবং আপনার চেয়েও বেশি হারাম পরিবেষ্টিত ছিলেন,অনেক সাহাবি তো ইসলাম গ্রহন করেছেন মক্কা বিজয়ের সময়।কিন্তু তারা ফিরে আসার একান্ত চেষ্টা করেছেন এবং আল্লাহ তা কবুল করেছেন।আপনার জন্য খালিছ দিলে দোয়া রইলো।আর আমার জীবনঅভিজ্ঞতায় দেখেছি এই সময়টাতে আল্লাহর কাছে হাউমাউ করে কেদে সব কষ্ট বলার চেয়ে সাহায্য চাওয়ার চেয়ে উপকারী খুব বেশী কিছু নেই।
আল্লাহ আমাদের সকলকে হিদায়াতের উপর অটল রাখুন।একটা দোয়া আছে-ইয়া মুক্বল্লিবাল ক্বুলুব ছাব্বিত ক্বলবি 'আলা দ্বীনীক।এইটা বেশ উপকারী।আল্লাহ সহজ করুন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...