আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
346 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম।

এক মা তার মেয়েকে ক্লাস ৫ পর্যন্ত স্কুলে পড়ার পর মাদ্রাসায় দিয়েছিল। কিন্তু বছরখানেক যাবার পর সন্তান বিগড়ে যায়,সে স্কুলে পড়বে। কিছুতেই মাদ্রাসায় পাঠানো যাচ্ছেনা। কিন্তু তার মা ও তাঁকে স্কুলে দিতে ইচ্ছুক না। বর্তমানে মা ও মেয়ের সম্পর্ক দিন দিন খারাপ যাচ্ছে। মেয়ে ও জিদ ধরে বসে আছে। যেহেতু মেয়ে ছোট তাই সবাই ভয় পাচ্ছে সে আবার উল্টাপাল্টা কিছু করে কি না! মা ও তার সিদ্ধান্তে অটল। বাসার বাকি সবাই (বাবা,দাদি,নানা,নানী) মেয়েটা কে  স্কুলে দিয়ে দিতে বলছে। আর যদি সে স্কুলে যায় তাহলে তার মা অনেক কষ্ট পাবে। কারণ মায়ের স্বপ্ন ছিল মেয়ে আলেমা হবে। (উল্লেখ্য মেয়েটা কে সবাই বুঝিয়েছেন এবং মা ও অনেক বুঝিয়েছেন, মা নিয়মিত হাজতের নামাজ আদায় করছেন,দুয়া করছেন) এমতাবস্থায় প্রশ্ন:

১. মেয়ে যদি স্কুলে যায় এতে মা যদি কষ্ট পায় তাহলে কি ঐ মেয়ের ক্ষতি হবে? বদদুয়া না করলেও কি মার কষ্টে বদদুয়া লেগে যাবে?কারণ মেয়ের মা এটা মেনেই নিতে পারছেন না।

২. যেহেতু মেয়ের বাবা ও স্কুলে দিয়ে দিচ্ছে এক্ষেত্রে মায়ের কি করণীয়? মা কে কি সন্তানের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে?

৩. মেয়ে যদি মায়ের অবাধ্য হয়, তাহলে মা যদি রাগ করে মেয়েকে কাছে না টানে, প্রয়োজন ছাড়া বেশি কথা না বলে, মেয়েকে আদর না করে এতে কি মা গুণাহগার হবে?

৪. মাদ্রাসা থেকে চলে আসার জন্য কি ঐ মেয়ের জীবন থেকে বরকত চলে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
■ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- يَهَبُ لِمَنْ يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَنْ يَشَاءُ الذُّكُورَأَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا وَيَجْعَلُ مَنْ يَشَاءُ عَقِيمًا. তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা করে দেন বন্ধ্যা। -সূরা শুরা (৪২) : ৪৯-৫০

■ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- مَنْ كَانَ لَهُ ثَلاَثُ بَنَاتٍ أَوْ ثَلاَثُ أَخَوَاتٍ أَوْ ابْنَتَانِ أَوْ أُخْتَانِ فَأَحْسَنَ صُحْبَتَهُنّ وَاتّقَى اللّهَ فِيهِنّ فَلَهُ الجَنّةُ. যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা সন্তান বা তিনজন বোন আছে অথবা দু’জন কন্যা সন্তান বা বোন আছে। সে তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করেছে এবং তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করেছে। তার জন্য রয়েছে জান্নাত। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯১৬ 

■ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, مَنْ ابْتُلِيَ بِشَيْءٍ مِنَ البَنَاتِ فَصَبَرَ عَلَيْهِنّ كُنّ لَهُ حِجَابًا مِنَ النّارِ. যে ব্যক্তিকে কন্যা সন্তান লালনপালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং সে ধৈর্যের সাথে তা সম্পাদন করেছে সেই কন্যা সন্তান তার জন্য জাহান্নাম থেকে আড় হবে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯১৩

■ সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১, না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মা কষ্ট পেলে যে, মেয়ের ক্ষতি হবে বিষয়টি এমন নয়৷

২, যেহেতু ফরজে আইন পরিমাণ কুরআন হাদীস পড়া ও জানা ফরজ৷ তাই এখন ঐ মায়ের করণীয় হলো, মেয়ে স্কুলে পড়লেও ফরজে আইন পরিমাণ কুরআন হাদীস পড়ানো৷ সেটা বাড়ীর পাশের কারোর মাধ্যমে হতে পারে আবার অনলাইন কোনো দ্বীনী প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার মাধ্যমেও হতে পারে৷
মেয়েকে মাদ্রাসায় না পড়ানোর কারণে মাকে আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতা করতে হবে না৷ তবে ফরজে আইন পরিমাণ দ্বীনী ইলম না শিখালে পিতা মাতাকে আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতা করতে হবে৷

৩, এখন মায়ের জন্য মুটেও ঠিক হবে না যে, মেয়েকে আদর করবে না৷ আবার আগের মত কথা বার্তা বলবে না৷ মেয়ে যেহেতু এখনো ছোট৷ তাই সে অবুঝ৷ আর একটা অবুঝ মেয়ে মায়ের কথা নাও শুনতে পারে৷ বরং এখন মায়ের জন্য করণীয় হলো, মেয়েকে স্কুলেই পড়াবে এবং মাদ্রাসায় ভর্তির জন্য উদ্বুদ্ধ করতেই থাকবে৷

৪, মাদ্রাসা থেকে চলে আসার কারণে তার জীবন থেকে বরকত চলে যাবে বিষয়টি এমন নয়৷ কুরআন হাদীসে কোথাও এমন কথা লেখা নেই৷

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...