আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
101 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (17 points)
আস্সালামুআলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ্।

১. আমি সকালে নামাজ পড়তে জেগে মাকে কল দিয়ে ডেকে দিই।বাবাও উঠে। কিন্তু আজ মা অসুস্থ(হায়েজ) হওয়াতে কল দিবো কি দিবোনা বুঝতে পারছিলাম না।বাবাকে ডেকে দিতে চাচ্ছিলাম।কিন্তু ডাকিনি যেহেতু কল দিলে মায়ের ঘুমের ডিস্টার্ব হবে।আমি জানতে চাচ্ছি এভাবে কল দিয়ে একজনকে ডাকলে অন্যজনের ঘুমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে আমি কি কল দিয়ে ডাকতে পারবো?আজ আমি কল দিইনি বিধায় বাবার ফজরের নামাজ মিস হলো।(অবশ্যই আল্লাহর ইচ্ছাতে)

২. আমি মাকে যতটুক পারি ঘরের কাজে সাহায্য করি।তবে ঘর ঝাড়ু দিলে আমার শারীরিক সমস্যা হয় (কোমর ব্যাথা)।তো আমার একদমই ইচ্ছে হয়না এই কাজ করার।তো মা বললেও করিনা।কিন্তু মা এই এক কাজ না করার কারণে মানুষকে বলে বেড়ায় আমি কোনো কাজ করিনা।আমার আচরণের কারণে কি আমি গুনাহগার হবো?এক্ষেত্রে আমার চাওয়া না চাওয়ার কি কেনো মূল্য নেই?
মায়ের কাজে কি তিনি গুনাহগার হবেননা?

৩.ফজরের ওয়াক্ত হওয়ার আগে আর তাহাজ্জুতের সময় শেষ হওয়ার পর মাঝামাঝি ৪/৫ মিনিট সময় থাকে এই সময়ে কি আগের ক্বাযা নামাজ আদায় করা যাবে? ফজরের ওয়াক্ত আর আসরের ওয়াক্তে আমি কি ক্বাজা নামাজ আদায় করতে পারবো?যেহেতু এগুলো ওয়াজিব নামাজ।আমার জানা মতে এ সময়গুলোতে নফল নামাজ আদায় মাকরুহ্।

৪. কোনো ব্যাক্তি যদি মগে পানি নিয়ে তাতে হাত ডুবিয়ে পানি নিয়ে অযু করে এবং অযু শেষে মগের বেচে যাওয়া পানি বড় পানির গামলাতে রেখে দেয় তাহলে গামলার পানি কি ব্যবহৃত পানি হয়ে যাবে?পরবর্তীতে অযু গোসল শুদ্ধ হবে ঐ পানি দিয়ে?

৫. আমি তাহাজ্জুতের ওয়াক্তে তাহাজ্জুতের নফল নামাজ না পড়ে পূর্বের ক্বাযা নামাজ পড়ি সবসময় যেহেতু এগুলো আদায় ওয়াজিব।এক্ষেত্রে আমি কি তাহাজ্জুত নামাজ আদায়ের সওয়াব পাবো?যেহেতু আমার প্রায় ৩ বছরের ক্বাযা নামাজ আছে।এসব আদায় শেষ নূ হওয়া পর্যন্ত তাহাজ্জুতের নফল নামাজ আদায় অনুচিত।

৬. মা বাবার সাথে কি রেগে থাকা যায়েজ? কথা বন্ধ রাখা যায়েজ? তাদের সাধারণ আদেশ পালন কি ওয়াজিব?যদি না করি তাহলে কি ওয়াজিব তরকের গুনাহ হবে?
৭. আমায় দোয়ায় রাখবেন যাতে মা বাবার সাথে উত্তম আচরণ বজায় রাখতে পারি।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানাতাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যেতাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যেতাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল২৩)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


. জ্বী হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কল দিয়ে ডাকতে পারবেন তবে খুব বেশী আগে ডাকবেন না বরং আর নামাজের ২৫/৩০ মিনিট বাকী আছে তখন ডাকবেন তাহলে আর তখন ডাকাতে আপনার মায়েরও কষ্ট হলো না কারণ, তখন সাধারণত সবাই বিছানা থেকে উঠে যায়

. আপনার যেহেতু সমস্যা আছে (কোমর ব্যাথা)তাই আপনার মাকে একটু বুঝিয়ে বলবেন যে, ঝাড়ু দিলে আপনার সমস্যা হয়। প্রয়োজনে অন্য কাজ আরেকটু বেশী করে দিলেন।

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কাম্য এটাই যে সন্তানাদি নিজের মা-বাবাকে সম্মান ও সমীহের চোখে দেখবেন। তাঁদের মনেপ্রাণে ভালোবাসবেন এবং তাঁদের সেবা করতে পারাকে নিজের জন্য পরম সৌভাগ্য মনে করবেন। অনুরূপ মা-বাবাও সন্তানাদিকে আদর ও খুব ভালো বাসবেন। তার সুখ-সুবিধার প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখবেন এবং নিজের ছেলে-মেয়ের কথা অন্য কাউকে বলে বেড়াবে না।

 

৩. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কাযা নামাজ পড়তে পারবেন।

৪. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মগের পুরো পানি ফেলে দিবেন। তবে বাইরে না ফেলে গামলার মধ্যে ফেললেও উক্ত গামলার পানি দ্বারা অযু, গোসল করা জায়েজ হবে। কারণ, গামলার পানি আধিক্যে বা পরিমাণে বেশী (ব্যবহৃত পানি থেকে।

 

৫. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাহাজ্জুদ নামাজের সওয়াব পাবেন না (কারণ, আপনি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েননি)। বরং আপনার জন্য উচিত হলো  কমপক্ষে চার রাকাত হলেও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে বাকী সময়টা কাযা নামাজ পড়া।

 

৬. না, বাবা-মার সাথে রেগে থাকা জায়েজ হবে না। বরং পিতা-মাতা কাফের হলেও তাদের সাথে ভালো আচরণ করার কথা হাদীস শরীফে এসেছে। তাই যথা সাধ্য তাদের খেদমত করতে হবে। তাদের হুকুম মেনে চলতে হবে। তবে কুরআন-হাদীস বিরোধী কোনো কথা শোনা যাবে না।

৭. দুআ করি আল্লাহ তায়ালা আপনাকে কবুল করেন। পিতা-মাতার সাথে উত্তম ব্যবহার করার তাওফীক দান করেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...