উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
শান্তি ও সুশৃঙ্খল দাম্পত্য জীবনের অনন্য মাধ্যম বিয়ে। বিয়ের আকাঙ্ক্ষা পোষণ করা অন্যায় কিছু নয়। তবে সে আকাঙ্ক্ষা যদি হয় কোনো তালাকপ্রাপ্ত বা বিধবাদের জন্য। এমন আকাঙ্ক্ষা প্রকাশে কোনো গোনাহ নেই।
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ۖ فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِي أَنفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
তােমাদের মধ্যে যারা মারা যায় ও স্ত্রী রেখে যায়, তাদের সে স্ত্রীগণ নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় রাখবে। অতঃপর তারা যখন নিজ ইদ্দত (-এর মেয়াদ)-এ পৌছে যাবে, তখন তারা নিজেদের ব্যাপারে ন্যায়সম্মতভাবে যা-কিছু করবে (যেমন দ্বিতীয় বিবাহ), তাতে তােমাদের কোন গুনাহ নেই। তােমরা যা-কিছু কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক অবগত।( (সূরা বাকারা, আয়াত -২৩৪)
তবে শর্ত হলো বিধি মেনে চলতে হবে। যার সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে কুরআনে। আল্লাহ তাআলা বলেন-আয়াতের অনুবাদ
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ২৩৫ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিধবা বা তালাকে বায়েনা তথা তিন তালাকপ্রাপ্ত নারীকে বিয়ের ইচ্ছা পোষণকারীদের বিষয়ে নাজিল করেছেন। তাদেরকে ইশারা ইঙ্গিতে বিবাহের পয়গাম পাঠাতে কোনো গোনাহ নেই।
সামাজিক, জাতীয় ও ধর্মীয় প্রয়োজনে বিধবা এবং ডিভোর্সী নারীকে বিয়ে করা শ্রেয় এবং তা অগ্রাধিকারের দাবি রাখে। ইসলামের সোনালী যুগের সাহাবিরা শুধুমাত্র পূণ্যের উদ্দেশ্যে এই আশায় থাকতেন,যেন কোনো বিধবা কিংবা ডিভোর্সি দ্বীনদার নারীকে বিয়ে করা যায়। আপনি কোনো মেয়ের আত্মাকে, সত্তাকে,গুণকে ভালোবেসে বিয়ে করবেন, তার দেহকে নয়।
ডিভোর্স কোন পাপ নয়, উন্নত জীবন যাপনের একটা পথ। আল্লাহ নারীকে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন; তিনি পুরুষকে ডিভোর্সী নারী বিয়ে করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ডিভোর্সী জয়নবের সাথে রসুলের বিয়ে আল্লাহ নিজে আরশে আজিম থেকে পড়িয়েছেন! জয়নব (রা.) তাই গর্ব করে বলতেন, আমার বিয়ে স্বয়ং আল্লাহ দিয়েছেন!
যিনি প্রতারিত, তিনি জানেন সততার মূল্য কতো। যিনি খারাপ মানুষের সাথে ছিলেন, তিনি জানেন জীবনে ভালো মানুষের কতটা প্রয়োজন।
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই / বোন!
ইসলামে বিধবা ও ডিভোর্সি নারীকে বিয়ে করার জন্য যেমন উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। তেমনি দ্বীনি ও মনবিক কারণে পূর্ব স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছে এমন ছেলেকে বিয়ে করতেও অনুপ্রেরণা যোগিয়েছে,যদি তার মাঝে দ্বীনদারি থাকে।কারণ, সকলের ডিভোর্স সমান না কেউ বা পরিস্থতির শিকার হয়ে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেয় যাতে স্বামীর কোন দোষ থাক না।যেমন স্ত্রীকে শত চেষ্টা করেও দ্বীনের ফেরাতে পারছে না বা স্ত্রী পরকীয়ায় লিপ্ত।
মানবিক ও দ্বীনি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রেখে এমন পুরুষের সাথে বিবাহে আবদ্ধ হওয়াতে দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ আশা করা যায়। যেমন নবীজি ( সাঃ) এর ১১ জন স্ত্রীর মধ্যে একমাত্র আম্মাজান আয়শা ( রাঃ) ছাড়া কেউই কুমারী ছিলেন না।কেউবা ছিলেন বিধবা আবার কেউ ছিলেন ডিভোর্সি।
তবে বিবাহের ক্ষেত্রে নারী পুরুষ উভয়ের পছন্দের প্রতি ইসলাম যতেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করে থাকে। বিধায় যদি কোন মেয়ে ডিভোর্সি কোন ছেলেকে বিয়ের ক্ষেত্রে অপছন্দ হওয়ায় না করে দেয় তাহলে কোন গুনাহ হবে না। এক্ষেত্রে তার স্বাধীনতা আছে। তবে অবিভাবকের পছন্দ হলে সার্বিক দিক বিবেচনা করে এমন ক্ষেত্রে অসম্মতি প্রকাশ না করাটাই উচিত।