আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
181 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (40 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
শাইখ, আমার এক বান্ধবি আসে যে কিনা ফেসবুকে ভিন্ন ধরনের ভিডিও ছাড়ে। যাতে কিনা মিউজিক আসে। আমি ওকে বলেছি যে মিউজিক হারাম। সেও জানে মিউজিক হারাম। তারপরও মানে না। এখন আমি কি ভাবে তার সাথে বন্ধুত্ব রাখি যে কিনা আল্লাহর বিধান জানে কিন্তু মানে না। যদি বুঝতাম যে, তার সাথে আমার দেখা হয় বা কথা হয় তাহলে আমি ইসলাম সম্পর্কে নাসিহাহ করতাম। তার ও সুযোগ নাই। তারপর ও আমি যতটুকু জানি বলেছি, আলহামদুলিল্লাহ।  ওর সাথে আমার মাঝে মধ্যে মেসেঞ্জারে কথা হয়। এইটুকু। আমি যদি তাকে বলি যে, তুই যদি হারাম ছেড়ে দিস তাহলে আমি তর সাথে কথা বলব। নাহলে আমি আর কথা বলব না। তাহলে কি গুনাহ হবে?? ও যদি না মানে তাহলে আমি যদি বন্ধুত্ব  শেষ করে দেই তাহলে কি আমার গুনাহ হবে??
জাযাকুমুল্লাহু খাইর
by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম। 
 সম্মানিত মুফতি  সাহেব, আমার  কমেন্টে একটু উত্তর  দিয়েন।
pleaseeeeeeeeeeee.

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)
উত্তর,
بسم الله الرحمن الرحيم

হিকমত, সদুপদেশ ও নম্রতার সাথে মানুষকে দ্বীনের পথে আসার দাওয়াত দেওয়া ইসলামের নির্দেশ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَهُمْ مِنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ
‘তোমরাই সর্বোত্তম জাতি, মানব জাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে, আর যদি গ্রন্থ প্রাপ্তরা বিশ্বাস স্থাপন করত তাহলে অবশ্যই তাদের জন্য মঙ্গল হত। তাদের মধ্যে কেহ কেহ মুমিন এবং তাদের অধিকাংশই দুষ্কার্যকারী’ (আলে ইমরান ৩/১১০)।

সুরা নাহল এর ১২৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 اُدۡعُ اِلٰی سَبِیۡلِ رَبِّکَ بِالۡحِکۡمَۃِ وَ الۡمَوۡعِظَۃِ الۡحَسَنَۃِ وَ جَادِلۡهُمۡ بِالَّتِیۡ هِیَ اَحۡسَنُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ هُوَ اَعۡلَمُ بِمَنۡ ضَلَّ عَنۡ سَبِیۡلِهٖ وَ هُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُهۡتَدِیۡنَ ﴿۱۲۵﴾

তুমি তোমরা রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন। 
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরিনে কেরামগন বলেছেন,
এখানে ইসলাম প্রচার ও তাবলীগের মূলনীতি বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ, তা হবে হিকমত, সদুপদেশ ও নম্রতার উপর ভিত্তিশীল এবং আলোচনার সময় সদ্ভাব বজায় রাখা, কঠোরতা পরিহার করা ও নম্রতার পথ অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়।
দায়ীর কাজ উল্লিখিত নীতি অনুসারে উপদেশ ও প্রচার করা। হিদায়াতের রাস্তায় পরিচালিত করা আল্লাহর আয়ত্তাধীন। আর তিনিই জানেন যে, কে হিদায়াত গ্রহণকারী, আর কে তা গ্রহণকারী নয়।

অন্য আয়াতে আছে- 
(وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِمَّنْ دَعَا إِلَى اللَّهِ)
 অর্থাৎ কথা-বার্তার দিক দিয়ে সে ব্যক্তির চাইতে উত্তম কে হবে, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়? [ফুসসিলাতঃ ৩৩]

আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا بَعَثَ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِهِ فِى بَعْضِ أَمْرِهِ قَالَ بَشِّرُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا وَيَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا.
‘নবী করীম (ছাঃ) যখন কোন ছাহাবীকে কোন কাজে প্রেরণ করতেন তিনি বলতেন তোমরা সুসংবাদ দাও ভয় দেখিও না। সহজতা অবলম্বন কর, কঠিনতা নয়’ (মুসলিম হা/৪৬২২)।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
 আপনি যদি ঐ বোনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন,তাহলে তাকে কে দাওয়াত দিবে? কে তাকে হাত ধরে দ্বীনের পথে আনার চেষ্টা করবে? এটা উম্মতে মুহাম্মাদ হিসেবে নিজেরই দায়িত্ব। তাকে দূরে সরিয়ে দিলে দাওয়াত দেওয়া সম্ভব নয়।
তাই যেই পদ্ধতিতে আপনি আল্লাহর রহমতে দ্বীনের পথে এসেছেন,সে পদ্ধতির দিকে ধীরে ধীরে তাকে আনার আপ্রান চেষ্টা করতে হবে ও আল্লাহ তায়ালার কাছে তার জন্য বেশী বেশী দোয়া করতে হবে।ইনশাআল্লাহ সেও একদিন পরিপূর্ণ  দ্বীনের পথে আসবে।     
তবে যদি তার সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখতে গিয়ে নিজের ঈমান আমলের হুমকি বলে মনে হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে  তার সাথে আগের মতো আড্ডা,কথাবার্তা বলা কম করে দিবেন। আগের মত তার সাথে আড্ডা,কথাবার্তা না বললে গুনাহ হবেনা,তবে সাক্ষাৎ হলে সালাম চালিয়েই যেতে হবে।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...