আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
426 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (44 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাজ।

ছোটবেলায় আমাদেরকে  চার কালেমা/ ঈমানে মুফাসসাল,ঈমানে মুজাম্মাল এসব শিখানো হয়েছিলো।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাই।

এগুলোর ব্যাপারে তেমন কিছুই জানিনা উস্তাজ,শুধু ছোটবেলায়, মসজিদ/ মাদ্রাসায় উস্তাজরা মুখস্ত করিয়েছিলেন,আমরাও করেছিলাম।

এখন বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি

জাযাকাল্লাহু খইরন।

আসসালামু আলাইকুম।

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


মুজমাল হলো সংক্ষেপ। 
আর মুফাসসাল হলো বিস্তারিত।  
ঈমানে মুজমাল :

امنت بالله كما هو باسمائه وصفاته وقبلت جميع احكامه و اركانه

উচ্চারাণঃ- আমানতু বিল্লাহি কামা হুয়া বি আসমায়িহী ওয়া ছিফাতিহী ওয়াক্বাবিলতু জামিয়া আহ্কামিহী ও আরকানিহী।
অর্থঃ- সর্বমহান সুন্দর নাম ও গুণ বিশিষ্ট আল্লাহ্ তা'আলার উপর ঈমান আনলাম এবং তাঁর আদেশাবলী ও নিষেধসমূহ মেনে নিলাম।

ঈমানে মুফাসসাল :
امنت بالله وملئكته وكتبه ورسله واليوم الاخر والقدر خيره وشره من الله تعالى والبعث بعد الموت

উচ্চারণঃ-
আমানতু বিল্লাহি ওয়ামালাইকাতিহী ও কুতুবিহী ওয়াল ইয়াওমিল আখিরী ওয়াল ক্বাদরী খইরিহী ওয়া শাররিহী মিনাল্লাহি তা'আলা ওয়াল বা'ছি বা'দাল মাউত।
অর্থঃ-
প্রথমত- আমি ঈমান আনলাম আল্লাহ তা'আলার উপর;
দ্বিতীয়ত- ঈমান আনলাম তাঁর ফেরেশতারগণের উপর;
তৃতীয়ত- ঈমান আনলাম তাঁর কিতাব সমূহের উপর;
চতুর্থত- ঈমান আনলাম তাঁর রাসূলগণের উপর;
পঞ্চমত- ঈমান আনলাম আখিরাতের উপর;
ষষ্ঠত- ঈমান আনলাম তাক্বদীরের উপর;
সপ্তমত- ঈমান আনলাম মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত হওয়ার উপর।


মুজমাল সংক্রান্ত আয়াতঃ 
আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

آَمَنَ الرَّسُولُ بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ كُلٌّ آَمَنَ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْ رُسُلِهِ وَقَالُوا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ الْمَصِيرُ      

তরজমা: রাসূল ঈমান আনয়ন করেছেন ঐ সকল বস্তু সম্পর্কে যা তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও। সবাই ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগণের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর নবীগণের প্রতি। তারা বলে, আমরা তাঁর নবীগণের মাঝে কোন পার্থক্য করি না এবং তারা আরো বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা আপনার নিকট ক্ষমা চাই, ওহে আমাদের পালনকর্তা! আমরা সকলেই আপনারা দিকে প্রত্যাবর্তন করি। [সূত্র : সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৫।]

তারই বিস্তারিত হলো ঈমানে মুফাসসালঃ
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا     

“যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর, তাঁর ফেরেশতাগণের উপর, তাঁর কিতাবসমূহের ওপর এবং তাঁর রাসূলগণের ওপর ও কিয়ামত দিবসের ওপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে”। [সূত্র: সূরা নিসা, আয়াত ১৩৬।

হাদীসে জিবরাঈলে উল্লেখ আছে, হযরত জিবরাঈল আ. আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে ছদ্মবেশে এসে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ঈমান কাকে বলে? জবাবে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ

اَنْ تُؤ مِنَ بِا للّهِ وَمَلئِكَتِه وَكُتُبِه وَرُسُلِه والْيَؤمِ الاَخِرِ وَتُؤْمِنُ بِا لْقَدْرِ خَيْرِه وَ شَرِّه

ঈমানের হাকীকত হলো, তুমি মনে-প্রাণে বদ্ধমূলভাবে বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহ তা‘আলার ওপর, তাঁর ফেরেশতাগণের ওপর, আসমানী কিতাবসমূহের ওপর, আল্লাহ তা‘আলার নবী-রাসূলগণের উপর, কিয়ামত দিবসের ওপর এবং তাকদীরের ভালো-মন্দ সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হওয়ার ওপর।  [সূত্র: বুখারী খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১২ ও মুসলিম। মিশকাত শরীফ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১১] 

উল্লেখিত আয়াত ও অত্যন্ত প্রসিদ্ধ এ হাদীসটি ‘ঈমানে মুফাসসাল’-এর ভিত্তি। ঈমানে মুফাসসালের মাধ্যমে এ কথাগুলোরই স্বীকৃতি জানানো হয় এবং মনে-প্রাণে বদ্ধমূল বিশ্বাসের ঘোষণা করা হয় যে,

أَ مَنْتُ باِ للهِ وَ مَلأَئِكَتِه وَ كُتُبِهِ وَرُسُلِه وَالْيَوْ مِ الأخِرِ وَالقَدْرِ خَيْرِه وَشَرِّه مِنَ ا للهِ تَعَالي والْبَعْثِ بَعْدَا لْمَوْتِ

আমি ঈমান আনলাম বা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিশ্বাস করলাম-১. আল্লাহ তা‘আলাকে, ২. তাঁর ফেরেশতাগণকে, ৩। তাঁর প্রেরিত সকল আসমানী কিতাবকে, ৪. তাঁর প্রেরিত সকল নবী-রাসূলকে, ৫. কিয়ামত দিবসকে অর্থাৎ সমস্ত বিশ্বজগত একদিন শেষ হবে, তাও বিশ্বাস করি, ৬। তাকদীরকে বিশ্বাস করি অর্থাৎ জগতে ভালো-মন্দ যা কিছু হয়, সবই আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্ট, তাঁরই পক্ষ হতে নির্ধারিত এবং মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিন পুনর্বার জীবিত হতে হবে, তাও অটলভাবে বিশ্বাস করি। 

বিস্তারিত জানুনঃ  


ছোট বেলায় যে চার কালেমা শিখানো হয়েছিলোঃ

★কালিমা তাইয়্যেবা

لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ 
 উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। 

 অর্থ : আল্লাহ এক আর কোন মাবুদ নেই। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল। 
 
 
★কালিমা শাহাদৎ
 اشْهَدُ انْ لّآ اِلهَ اِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه، وَ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدً عَبْدُه وَرَسُولُه 


 উচ্চারণ : আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা শারীকালাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু। 

 অর্থ : আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। তিনি এক। তাঁহার কোন অংশীদার নেই, এবং আমি আরও সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, নিশ্চয়ই হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহ্র প্রেরিত বান্দা ও রাসূল। 
 
কালিমা তামজীদ

سُبْحَان لِلّه وَ الْحَمْدُ لِلّهِ وَ لآ اِلهَ اِلّا اللّهُ، وَ اللّهُ اَكْبَرُ وَلا حَوْلَ وَلاَ قُوَّة ِلَّا بِاللّهِ الْعَلِىّ الْعَظِيْم 

 উচ্চারণ : সুব্হানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আক্বার ওয়ালা হাওলা ক্বুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল্ আলিইল্ আযীম্। 

 অর্থ : মহিমা ও সকল প্রসংশা আল্লাহ্র জন্য, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই। আল্লাহ মহান, সর্বশক্তিমান ও সর্বক্ষমতাবান। আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ নয়। তিনিই মহান। 
 
কালিমা তাওহীদ

: لا الهَ اِلَّا اللّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيْكَ لَهْ، لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْى وَ يُمِيْتُ وَ هُوَحَىُّ لَّا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدًا ط ذُو الْجَلَالِ وَ الْاِكْرَامِ ط بِيَدِهِ الْخَيْرُ ط وَهُوَ عَلى كُلِّ شَئ ٍ قَدِيْرٌ ط 

 উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্ দাহু লা-সারিকা লা-হু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ইউহা ই ওয়া উ মিতু বি ইয়া সি হিল খাইরু ওয়া-হু-ওয়া আ-লা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর। 

 অর্থ : আল্লাহ এক আর কোন মাবুদ নেই তিনি এক তার কোন অংশীদার নেই। সমস্ত সৃষ্টি জগৎ এবং সকল প্রশংসা তাঁরই। তিনি জীবন হান করেন আবার তিনিই মৃত্যুর কারণ তার হাতেই সব ভাল কিছু এবং তিনিই সৃষ্টির সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (675,600 points)
–1
সংযোজন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...