আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
243 views
in সালাত(Prayer) by (80 points)
edited by
কয়েকদিন আগে আসরের নামাজে ইমাম দ্বিতীয় রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়তে ভুলে যায় তাও শেষে সাহু সিজদা দেয়।আমি ৩য় রাকাতে ইক্তেদা করি অর্থাৎ আমি মাসবূক ছিলাম।তাই ইমাম যখন শেষে সাহু সিজদা দেয় তখন আমি দ্বিধায় পরে যাই যে ইমামের সাথে একদিকে সালাম ফিরবো নাকি না।আমার পাশের এক লোক ছিল সে ইমামের সাথে একবার সালাম ফিরেনি কিন্তু ইমামামের সাথে সিজদা করেছেন। সেও মাসবূক ছিল।তাই আমি তার মত করি।

এখানে সাহু সিজদা দেয়ার আগে ইমামের সাথে একবার সালাম কি ফিরান লাগতো?আমার কি নামাজ আবার পড়তে হবে?এটা কয়েকদিন আগে ঘটনা

আরেকটা হলো বছর ৩/৪ আগের কথা।তখন আমি ফরজ গোছল সম্পর্কে তেমন জানতাম না।একদিন আমি সারাদিনের ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি।এরপর রাতে বেলা দেখি সকালেই আমার সপ্নদোষ হয়ে ছিল।তখন এ ব্যাপারে তেমন জানতাম না দেখে পাত্তা দেই নাই। অর্থাৎ আমার ৩/৪ বছর আগের ওই দিনের ৫ ওয়াক্তের নামাজ কাযা বাকি।এখন আমি কি করবো? ওই ৫ ওয়াক্ত কি একসাথে আদায় করব?নাকি ফযরের সাথে ফজর যোহরের সাথে জোহর আসরের সাথে আসর এভাবে? যেহেতু আমার কেবল ৩/৪ বছর আগের ঐদিনের মাত্র ৫ ওয়াক্তের কাযা বাকি তাহলে তো আমি সাহেবে তারতিল হব তাহলে কি আমার এতদিনের কোনো নামাজ হয় নি? আগে আমি সাহেবে তারতিলের হুকুম জানতাম না কারণ তখন আমি সালাফী আলেমদের অনুসরন করতাম তখনও হানাফিফিকহ সম্পর্কে জানতাম না।আমি যদি সাহেবে তারিতিল হয়ে থাকি তাহলে সেইদিনের ৫ ওয়াক্তের সাথে পরের দিনের আর এক ওয়াক্ত যোগ করে কি সাহেবে তারতিলের হুকুম মুক্ত হওয়া যায়? কারন ওই ৫ ওয়াক্তের কাযা আদায় না করলে তো স্বাভাবিক ভাবে আমার পরের ওয়াক্তের নামাজও হয়নি। এভাবে তো ৬ ওয়াক্তের বেশি নামাজ কাযা হয়ে যায় তখন কি আমি সাহেবে তারতিল থাকবো?

এখন ওই নামাজ কিভাবে পড়বো একটু  বিস্তারিত জানান দয়া করে।

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 



(০১)
মাসবুক ব্যাক্তির নামাজের বিধান সংক্রান্ত  হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

وَعَنِ الْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ اَنَّه غَزَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ ﷺ غَزْوَةَ تَبُوْكَ قَالَ الْمُغِيْرَةُ فَتَبَرَّزَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ قِبَلَ الْغَائِطِ فَحَمَلْتُ مَعَه اِدَوَاةً قَبْلَ الْفَجْرِ فَلَمَّا رَجَعَ اَخَذْتُ اُهْرِيْقُ عَلى يَدَيْهِ مِنَ الاِدَاوَةِ فَغَسَلَ يَدَيْهِ وَوَجْهَه وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِّنْ صُوْفٍ ذَهَبَ يَحْسِرُ عَنْ ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَ كُمُّ الْجُبَّةِ فَاَخْرَجَ يَدَيْهِ مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ وَاَلْقَى الْجُبَّةَ عَلى مَنْكِبَيْهِ فَغَسَلَ ذِرَاعَيْهِ ثُمَّ مَسَحَ بِنَاصِيَتِه وَعَلَى الْعِمَامَةِ ثُمَّ اَهْوَيْتُ لَانْزِعَ خُفَّيْهِ فَقَالَ دَعْهُمَا فَاِنِّىْ اَدْخَلْتُهُمَا طَاهِرَتَيْنِ فَمَسَحَ عَلَيْهِمَا ثُمَّ رَكِبَ وَرَكَبْتُ فَانْتَهَيْنَا اِلَى الْقَوْمِ وَقَدْ قَامُوْا اِلَى الصَّلَاةِ وَيُصَلِّىْ بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمنِ بْنِ عَوْفٍ وَّقَدْ رَكَعَ بِهِمْ رَكْعَةً فَلَمَّا اَحَسَّ بالنَّبِىِّ ﷺ ذَهَبَ يَتَاَخَّرُ فَاَوْمَا إِلَيْهِ فََاَدْرَكَ النَّبِىُّ ﷺ اِحْدَىِ الرَّكْعَتَيْنِ مَعَه فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ النَّبِىُّ ﷺ وَقُمْتُ مَعَه فَرَكَعْنَا الرَّكْعَةَ الَّتِىْ سَبَقَتْنَا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ 

মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাবূক যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। মুগীরাহ্ বলেন, একদিন ফজরের (ফজরের) সলাতের আগে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানার উদ্দেশে বের হলেন। আর আমি তাঁর পেছনে একটি পানির পাত্র বহন করে গেলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে আসার পর আমি তাঁর দুই হাতের কব্জির উপর পানি ঢালতে লাগলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর দুই হাত ও চেহারা ধুলেন। তখন তাঁর গায়ে একটি পশমের জুববাহ্ ছিল। তিনি তাঁর (জুববার আস্তিন গুটিয়ে) হাত দু’টি খুলতে চাইলেন। কিন্তু জুববার আস্তিন খুব চিকন ছিল। তাই জুববার ভেতর দিক দিয়েই তাঁর হাত দু’টি বের করে নিজের দুই কাঁধের উপর রেখে দিলেন এবং হাত দু’টি (কনুই পর্যন্ত) ধুলেন। অতঃপর মাথার সামনের দিক (কপাল) ও পাগড়ীর উপর মাসাহ করলেন। তারপর আমি তাঁর মোজাগুলো খুলতে চাইলাম। তিনি বললেন, এগুলো এভাবে থাকতে দাও, আমি এগুলো পবিত্রাবস্থায় (অর্থাৎ- উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে) পরেছি। তিনি এগুলোর উপর মাসাহ করলেন। অতঃপর তিনি সওয়ারীর উপর আরোহণ করলেন, আমিও আরোহণ করলাম এবং আমরা একটা দলের কাছে পৌঁছে গেলাম। তখন তারা সলাতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, আর ‘আবদুর রহমান ইবন ‘আওফ (রাঃ) তাদের সলাতের ইমামাত করছিলেন এবং তাদের নিয়ে এক রাক্‘আত সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ও করে ফেলেছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন বুঝতে পেরে তিনি পেছনে সরে আসতে চাইলেন। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্থানে (স্থির থাকতে) ইশারা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে দুই রাক্‘আতের মধ্যে এক রাক্‘আত সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেলেন। তিনি সালাম ফিরালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। আর এক রাক্‘আত ছুটে যাওয়া সলাত (সালাত/নামায/নামাজ) আমরা আদায় করলাম।
(মুসলিম ২৭৪, নাসায়ী ১০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৫১৪৩, ইবনু মাজাহ্ ১২৩৬।)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
শরীয়তের বিধান হলোঃ- মাসবুক সেজদায়ে সাহুর সালামে ইমামের সাথে শরীক হবেনা।
অর্থাৎ সে সালাম ফিরাবেনা।
অবশ্য তার জন্য ইমামের সাথে সেজদাহ করা আবশ্যক।
যদি মাসবুক ইমামের সাথে ভুলে সালাম ফিরিয়ে দেয়,তাহলেও তার নামাজ হয়ে যাবে।

قال ابن عابدین :(قولہ والمسبوق یسجد مع إمامہ) قید بالسجود لأنہ لا یتابعہ فی السلام، بل یسجد معہ ویتشہد فإذا سلم الإمام قام إلی القضاء۔( الدر المختار مع رد المحتار : ۸۲/۲، کتاب الصلاة، باب سجود السہو ، ط: دار الفکر، بیروت ) 
সারমর্মঃ
মাসবুক ব্যাক্তি ইমামের সালামের অনুকরণ করবেনা,বরং সে ইমামের সাথে সালাম ফিরাবে,তাশাহুদ পড়বে,তারপর যখন ইমাম সালাম ফিরাবে,তখন অবশিষ্ট নামাজ আদায়ের জন্য দাড়িয়ে যাবে।    

আরো জানুনঃ 
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত আপনার কাজ পুরোপুরি বিশুদ্ধ।
,
(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনি উক্ত বিষয় জানেননা,তাই আপনার ৩/৪ বছরের নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।
আপনি এখন যেহেতু উক্ত বিধান সম্পর্কে  অবগত হয়েছেন,তাই আপনি এখন সেই ৫ ওয়াক্তের নামাজ এক সাথে দ্রুত কাজা আদায় করে নিন।
,
তারপর ফরজ নামাজ আদায় করুন।


في المجتبی: من جہل فریضۃ الترتیب لایجب علیہ کالناسي، وہو قول جماعۃ من أئمۃ بلخ۔ وقال الشامي في ہامشہ: نقلہ قاضي خاں في شرحہ عن الحسن بن زیاد، وقال: وکثیر من المشائخ أخذوا بقولہ، ومثلہ في التاتارخانیۃ (منحۃ الخالق مع البحر الرائق / باب قضاء الفوائت ۲؍۱۴۹ رشیدیۃ)
সারমর্মঃ
 কেহ যদি তারতিবের এই আবশ্যকীয়তা সম্পর্কে না জানে,তাহলে তার উপর তারতিব ওয়াজিব নয়,যেমন ভুলে যাওয়া ব্যাক্তির ন্যায়।  
  
বিস্তারিত জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...