বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
প্রথমেই আমরা ওয়াতনে আসলি তথা স্থায়ী নিবাস সম্পর্কে জেনে নেইঃ
স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী/স্বামী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।
وَالْوَطَنُ الْأَصْلِيُّ هُوَ وَطَنُ الْإِنْسَانِ فِي بَلْدَتِهِ أَوْ بَلْدَةٍ أُخْرَى اتَّخَذَهَا دَارًا وَتَوَطَّنَ بِهَا مَعَ أَهْلِهِ وَوَلَدِهِ، وَلَيْسَ مِنْ قَصْدِهِ الِارْتِحَالُ عَنْهَا بَلْ التَّعَيُّشُ بِهَا وَهَذَا الْوَطَنُ يَبْطُلُ بِمِثْلِهِ لَا غَيْرُ، وَهُوَ أَنْ يَتَوَطَّنَ فِي بَلْدَةٍ أُخْرَى وَيَنْقُلَ الْأَهْلَ إلَيْهَا فَيَخْرُجَ الْأَوَّلُ مِنْ أَنْ يَكُونَ وَطَنًا أَصْلِيًّا حَتَّى لَوْ دَخَلَهُ مُسَافِرًا لَا يُتِمُّ (البحر الرائق، كتاب الصلاة، باب المسافر-2/136، حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح، باب صلاة المسافر-429، شرح منية المصلى-541)
সারমর্মঃ
ওয়াতনে আসলি বলা হয়, নিজ শহরে অথবা অন্য শহরে যেখানে মানুষ নিজে,নিজের সন্তান পরিবার নিয়ে থাকার জন্য ঘর বানায়।
সেখান থেকে চলে যাওয়ার যদি নিয়ত না থাকে,সেখানেই জীবন যাপনের নিয়ত থাকে।
فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)
ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা।
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এখানে ছেলে বা মেয়ে হিসেবে জন্ম মূল বিষয় নয়।
মূল বিষয় হলো ব্যাক্তি যেখানেই স্থায়ী থাকার নিয়ত করে,সেটিই সে নিজের ঠিকানা/ভোটার আইডি কার্ড এ লেখে।
যদি কেহ তার স্থায়ী ঠিকানাকে পরিবর্তন করে অন্যত্রে করে ফেলে,সে সেই অন্যত্রের নামই দেয়।
এখানে ছেলে বা মেয়ে হিসেবে জন্ম মূল বিষয় নয়।
,
ছেলে যদি নিজের স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করে অন্যত্রে গিয়ে থাকে,তাহলে সে সেই অন্য এলাকার নামই লেখে।
মেয়েরাও একই।
,
তবে নিজ এলাকা ছেড়ে দূর দূরান্তে বিবাহে বসার সময় যেহেতু মেয়েদের অন্য এলাকায় (স্বামীর বাসায়) যেতে হয়,সেখানেই সে আজীবন থাকে,সেটিকে স্থায়ী বাসা বানিয়ে ফেলে,এমনকি বাবার বাসা সফরের দুরত্বে হলে বাবার বাসায় বেড়াতে এসে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে তাকে বাবার বাসায় মুসাফিরের ন্যায় কসর আদায়ের বিধান হয়,তাই মেয়েদের ঠিকানাই বেশি পরিবর্তন হয়।
ছেলেদের তো বিবাহের পর মেয়ের বাসায় স্থায়ী ভাবে সাধারণত থাকতে হয়না।
তারা নিজ বাসাতেই স্থায়ী ভাবে থাকে,তাই তাদের ঠিকানা পরিবর্তন করতে হয়না।
কেননা তারা নিজ স্থায়ী ঠিকানা চেঞ্জ করেনি।
পক্ষান্তরে মেয়েটি যেহেতু বিবাহের পর নিজ স্থায়ী ঠিকানা চেঞ্জ করে ফেলেছে,তাই তার ঠিকানা পরিবর্তন করেই লিখতে হয়।
,
যদি কোনো মেয়ে বিবাহের পরও নিজ বাবার বাসাতেই স্থায়ী ভাবে থাকে,তাহলে তাকে যেমন ঠিকানা পরিবর্তন করতে হয়না।
ঠিক কোনো ছেলে যদি বিবাহের পর স্ত্রী বাসায় স্থায়ী ভাবে থাকে (ঘর জামাই যেটিকে বলে) তাহলে সেই ছেলেকে তার ঠিকানা পরিবর্তন করতে হয়।
সাথে সাথে চাকুরী ইত্যাদির কারনে কোনো ছেলে /মেয়ে যদি অন্যত্রে স্থায়ী ভাবে বাসা নিয়ে থাকে,তাহলেও তাকে ঠিকানা পরিবর্তন করে নিতে হয়।
,
বিঃদ্রঃ ইসলাম মেয়েদের ঠিকানা পরিবর্তন করে লেখাকে বাধ্যতামূলক নিয়ম বানায়নি।
এটি সাধারণত নিজের বর্তমান ও স্থায়ী পরিচয় প্রকাশের সহজ মাধ্যম হওয়ায় সকলে করে থাকে।