আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
160 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আমাদের বাড়িতে দুটি বিড়াল আছে।বিড়াল গুলোর খাওয়া বাবদ প্রতি মাসে প্রায় এক থেকে দুই হাজার টাকার মত খরচ হয়।এখন প্রশ্ন হচ্ছে এভাবে বিড়াল এর পিছনে টাকা খরচ করার জন্য কি আমরা গুনাহগার হচ্ছি? এই টাকা কোনো অসহায় গরীব মানুষকে সদকাহ করে দিলে কি আরো ভালো হতো?নাকি পশুপাখির প্রতি দয়া দেখানো হিসেবে বিড়াল গুলোকে রেখে দেওয়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

প্রাণীদের বন্দী করে লালন পালন করা ও পোষা জায়েয রয়েছে। শুকুর এবং কয়েক শ্রেণীর কুকুর ব্যতীত তাছাড়া অন্যান্য প্রাণীকে পোষা ও লালন পালন করার সাধারণ বিধান হল,বৈধতা।

বিড়ালকে রাসূলুল্লাহ সাঃ মহব্বত করতেন। আবু-হুরায়রা রাযি বিড়ালকে সর্বদা সাথে রাখতেন বলেই উনার নাম বিড়াল ওয়ালা বা বিড়ালের মালিক বলে রাসূলুল্লাহ সাঃ উনাকে নাম দিয়েছিলেন।

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে,

عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ الله عَنْه قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحْسَنَ النَّاسِ خُلُقًا ، وَكَانَ لِي أَخٌ يُقَالُ لَهُ أَبُو عُمَيْرٍ ، وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَالَ : ( يَا أَبَا عُمَيْرٍ ، مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ ؟ نُغَرٌ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ )

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবচেয়ে অধিক সদাচারী ছিলেন। আমার এক ভাই ছিল; ‘তাকে আবূ ‘উমায়র’ বলে ডাকা হতো। আমার ধারণা যে, সে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে তাঁর নিকট আসতো, তিনি বলতেনঃ হে আবূ ‘উমায়র! কী করছে তোমার নুগায়র? সে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলতো।(সহীহ বোখারী-৬২০৩,সহীহ মুসলিম-২১৫০)

প্রাণী লালন-পালন কয়েকটি শর্তে ভিত্তিতে জায়েয।

(১) প্রাণীকে নিয়মিত খাবার দাবার প্রদান করতে হবে।

হযরত ইবনে উমর থেকে বর্ণিত,

عن ابن عمر رضي الله عنهما قال : قال النبي صلى الله عليه وسلم : ( دخلتِ امرأةٌ النارَ في هِرَّة حبَسَتْها، لا هي أطعَمَتْها ولا هي ترَكَتْها تأكُلُ مِن خَشَاش الأرض حتى ماتَتْ )

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।(সহীহ বোখারী-৩৩১৮,সহীহ মুসলিম-২২৪২)

হযরত জাবের রাযি থেকে বর্ণিত

عن جابر بن عبد الله رضي الله عنهما عن رَسُولِ الله صلى الله عليه وسلم : ( أنَّهُ نَهَى أنْ يُقْتَلَ شَيْءٌ مِنَ الدَّوَابِّ صَبْراً )

রাসূলুল্লাহ সাঃ বন্দী করে বোকা রেখে কোনো প্রাণীকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।(সহীহ মুসলিম-১৯৫৯)

(২) প্রাণীকে কোনো প্রকার কষ্ট দেয়া যাবে না।

عن جابر بن عبد الله رضي الله عنهما قال : ( نَهَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَن الضَّرْبِ في الوَجْهِ ، وَعَن الوَسْمِ في الوَجْهِ )

রাসূলুল্লাহ সাঃ মুখে প্রহার করা  এবং মুখে ট্যাটু অঙ্কন করা যাবে না। (সহীহ মুসলিম-২১১৬)

অপর  এক হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ عُذِّبَتْ امْرَأَةٌ فِيْ هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ فَدَخَلَتْ فِيْهَا النَّارَ لَا هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلَا سَقَتْهَا إِذْ حَبَسَتْهَا وَلَا هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ

 আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক নারীকে একটি বিড়ালের কারণে আযাব দেয়া হয়েছিল। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল। সে অবস্থায় বিড়ালটি মরে যায়। মহিলাটি ঐ কারণে জাহান্নামে গেল। কেননা সে বিড়ালটিকে খানা-পিনা কিছুই করাইনি এবং ছেড়েও দেয়নি যাতে সে যমীনের পোকা-মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকত। (বুখারী শরীফ ৩৪৮২.আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২৩৩)

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

আপনি বিড়াল পোষতে পারবেন এবং বিড়াল এর পিছনে টাকা খরচ করলে  আপনার কোনো গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। বরং আরো সাওয়াব পাবেন। তবে শর্ত হল, আপনি এর যথাযথ হক আদায় পূর্বক বিড়ালকে লালন পালন করতে হবে।

উল্লেখ্যে যে, বিড়াল পোষতে গিয়ে তার পিছনে একেবারে খুব বেশী খরচ না করে অসহায় গরীব দু:খীদের দান করলে আরো বেশী সাওয়াব হবে ইনশাআল্লাহ। কারণ মানুষ হলো আশরাফুল মাখলূকাত। অনেক মানুষকে এমন পাবেন যারা দিনে ঠিকমত এক দুই বেলা খানাও পায় না।

আপনি বিড়ালকে হাড়, মাছের কাটা ইত্যাদি খাওয়ানোর অভ্যাস করালে আর তার পিছনে তেমন কোনো খরচ করাও লাগবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...