আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
231 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (58 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম,

একটি ছেলে আর মেয়ের পরিবারের মাঝে বিয়ের আলাপ চলছে। ছেলে দ্বীনের পথে আসার পর অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় বা শয়তানের ওয়াসওয়াসা জনিত কারণে অথবা ছেলের কোন গুণাহের কারণে এক পর্যায়ে ফ্রাস্ট্রেটেড আর ডিপ্রেসড হয়ে যায়। সেসম ছেলে অতিরিক্ত ডিপ্রেশনে থাকত এবং অতিরিক্ত রেগে যেত,উত্তেজিত হয়ে যেত। পরে ছেলেকে মানসিক ডাক্তার দেখানো হয়। এরপর ডাক্তার যে ওষুধ দেয় তাতে এক পর্যায়ে ছেলে সারাদিন ঘুমাত আর মাঝে মাঝে মেমরি লস হয়ে যেত। যদিও মানসিক ভাবে ছেলে উন্নতি করেছিল। মানসিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটা স্বাভাবিক। ওষুধ বন্ধ করার পর ছেলে ধীরে ধীরে অনেকটা ঠিক হয়ে যায়। ডাক্তার বলেছিল সারা জীবন নাকি ওষুধ খেয়ে যেতে হবে নাহলে নাকি অবস্থা এমন ই থাকবে। পরিবর্তন হবেনা। এক পর্যায়ে ছেলে ওষুধ বন্ধ করে দেয় এবং ওষুধের প্বার্শপ্রতিক্রিয়াও কমে যায়। ছেলে অনেক দিন স্বাভাবিক থাকে। তবে কিছুদিন পর ছেলে আবার হতাশা আর বিষন্নতায় ভোগা শুরু করে অতিরিক্ত চিন্তা ও দুশ্চিন্তার কারণে। ছেলে অনেক কান্নাকাটি করে ও মনযোগ দিতে পারেনা। ছেলের মুড এই ভাল এই খারাপ। দিনশেষে ছেলের এই সমস্যা গুলো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে হয়।
মেয়েকে এ ব্যাপার টি জানানো হয়েছে। মেয়ে ইস্তিখারার নামাজ পড়ে বলেছে সে এগোতে চায়। ছেলের পাশে থাকতে চায়।


ছেলের এই সমস্যা টি মেয়ের পরিবার কে এখনো জানানো হয়নি। মেয়েকে বলা হয়েছিল পরিবার কে জানাতে। কিন্তু মেয়ে রাজি হয়নি এ ভেবে যদি পরিবার না করে দেয়। মেয়ে চায়না মেয়ের পরিবার ব্যাপার টি জানুক।


এখন প্রশ্ন হল, এ অবস্থায় করণীয় কি?  ছেলের পরিবার থেকে কি মেয়ের পরিবার কে ব্যাপার টি জানানো উচিত?ঃঃজানালে কিভাবে জানানো লাগবে?

আর ব্যাপার টি পরিবার কে না জানালে কি প্রতারণা হবে?  যদিও মেয়ে সব জেনে রাজি আছে।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

মানব-মানবীর মিলনে যে সুখময় সংসার, এর রয়েছে অনেকগুলো পূর্বশর্ত। নিছক ভোগচাহিদা পূরণের জন্য তো বিয়ে নয়, বরং এ এক অমূল বাঁধন।

বিয়ে পরবর্তী জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার মধুময় সম্পর্ক অটুট রাখার ক্ষেত্রে বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর পরস্পরকে দেখে নেওয়া , একে অপরের সম্পর্কে জানার  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জীবনের এ অমূল্য অধ্যায় সম্পর্কে মানবতার ধর্ম ইসলাম উদাসীন নয়। এর প্রমাণ- স্বয়ং প্রিয়নবী (সা.) আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন বিয়ের আগে নিজের জীবনসঙ্গীকে দেখে নেওয়ার জন্য, বেছে নেওয়ার জন্য।হাদীসে বিয়ের জন্য দ্বীনদ্বার মহিলাকে খুজতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।যেমন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ)

চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী। কিন্তু তুমি দ্বীনদারীত্বকে অগ্রাধিকার দাও। {যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)

বুখারী, মুসলিম, তিরমিযীসহ অন্যান্য বর্ণনায় হযরত মুগিরা বিন শোবা (রা.) বলেন, আমি রাসূলের (সা.) কাছে গিয়ে এক নারীকে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। তিনি আমাকে বললেন, আগে যাও, তাকে দেখে নাও। কারণ এ দেখাদেখি তোমাদের বন্ধনকে অটুট রাখতে সহায়ক। (বুখারী-৪৮৩৩, তিরমিযী-১০৮৭, মুসলিম-১৪৩৪)

বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম করার ব্যাপারে কোন দ্বীনদার মানুষ যদি কারো কাছে পরামর্শ নেয় তবে পাত্র বা পাত্রীর দোষ-গুণ খুলে বলা অবশ্যই উচিৎ। (মিশকাতুল মাসাবীহ৩৩২৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

যখন কোন ছেলে মেয়ের বিয়ের আলোচনা হয় ,তখন পরস্পরে এক অপরের সম্পর্কে ভালোভাবে জানা ও খোজ খবর নেওয়া উচিৎ। ব্যক্তিগত ভাবে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে স্বীয় পরিবারকে নিজের ভালো লাগা  বা পছন্দ অপছন্দের বিষয়গুলি অবগত করা। প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উক্ত মেয়ের জন্য উচিৎ তার পরিবারকে ছেলের সমস্যা সম্পর্কে জানানো আবেগের বশবর্তি হয়ে নিজেই কোন ডিসিশন না নেওয়া। কারণ, বিয়ের পরবর্তি সময়ে এজাতীয় বিষয় নিয়ে দাম্পত্য জীবনে অশান্তি ও মনোমলিণ্যতা তৈরী হয় ,যা কখনই  কাম্য নয়। প্রয়োজনে ছেলে পক্ষ মেয়ের পরিবারকে উক্ত বিষয়ে অবগত করে বিয়ের দিকে অগ্রসর হবে । এতে উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন হলে তাতে আল্লাহ বরকত দানে করেন এবং উভয় পরিবারের সুসম্পর্ক বজায় থাকে অন্যথায় পরস্পরে ভুল বুঝাঝাবুঝি হয়, যা কখনো কখনো কলহ বিবাদ এমনকি বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত পৌছে যায়।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...