بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
মানব-মানবীর মিলনে যে
সুখময় সংসার, এর রয়েছে অনেকগুলো পূর্বশর্ত। নিছক ভোগচাহিদা
পূরণের জন্য তো বিয়ে নয়, বরং এ এক অমূল বাঁধন।
বিয়ে পরবর্তী জীবনে স্বামী-স্ত্রীর
মধ্যকার মধুময় সম্পর্ক অটুট রাখার ক্ষেত্রে বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর পরস্পরকে দেখে
নেওয়া , একে অপরের সম্পর্কে জানার গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রয়েছে। জীবনের এ অমূল্য অধ্যায় সম্পর্কে মানবতার ধর্ম ইসলাম উদাসীন নয়। এর প্রমাণ-
স্বয়ং প্রিয়নবী (সা.) আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন বিয়ের আগে নিজের জীবনসঙ্গীকে দেখে নেওয়ার
জন্য, বেছে নেওয়ার জন্য।হাদীসে বিয়ের জন্য দ্বীনদ্বার মহিলাকে
খুজতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।যেমন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ
اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : (
تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ،
وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ)
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে
সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী।
কিন্তু তুমি দ্বীনদারীত্বকে অগ্রাধিকার দাও। {যদি তা না করো তবে
তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক
ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)
বুখারী, মুসলিম, তিরমিযীসহ অন্যান্য বর্ণনায় হযরত মুগিরা বিন
শোবা (রা.) বলেন, আমি রাসূলের (সা.) কাছে গিয়ে এক নারীকে বিয়ে
করার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। তিনি আমাকে বললেন, আগে যাও,
তাকে দেখে নাও। কারণ এ দেখাদেখি তোমাদের বন্ধনকে অটুট রাখতে সহায়ক।
(বুখারী-৪৮৩৩, তিরমিযী-১০৮৭, মুসলিম-১৪৩৪)
বৈবাহিক সম্পর্ক কায়েম
করার ব্যাপারে কোন দ্বীনদার মানুষ যদি কারো কাছে পরামর্শ নেয় তবে পাত্র বা পাত্রীর
দোষ-গুণ খুলে বলা অবশ্যই উচিৎ। (মিশকাতুল মাসাবীহ৩৩২৪)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
যখন কোন ছেলে মেয়ের বিয়ের
আলোচনা হয় ,তখন পরস্পরে এক অপরের সম্পর্কে ভালোভাবে জানা
ও খোজ খবর নেওয়া উচিৎ। ব্যক্তিগত ভাবে যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে স্বীয় পরিবারকে
নিজের ভালো লাগা বা পছন্দ অপছন্দের বিষয়গুলি
অবগত করা। প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উক্ত মেয়ের জন্য উচিৎ তার পরিবারকে ছেলের সমস্যা সম্পর্কে
জানানো । আবেগের বশবর্তি হয়ে নিজেই কোন
ডিসিশন না নেওয়া। কারণ, বিয়ের পরবর্তি সময়ে এজাতীয় বিষয় নিয়ে
দাম্পত্য জীবনে অশান্তি ও মনোমলিণ্যতা তৈরী হয় ,যা কখনই কাম্য নয়। প্রয়োজনে ছেলে পক্ষ মেয়ের পরিবারকে উক্ত
বিষয়ে অবগত করে বিয়ের দিকে অগ্রসর হবে । এতে উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন হলে
তাতে আল্লাহ বরকত দানে করেন এবং উভয় পরিবারের সুসম্পর্ক বজায় থাকে । অন্যথায় পরস্পরে ভুল বুঝাঝাবুঝি হয়, যা কখনো কখনো কলহ
বিবাদ এমনকি বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত পৌছে যায়।