ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
মানব বা প্রাণী আকৃতির পুতুল ও শোপিস ঘরে ঢুকানো আর মূর্তি প্রবেশ করানো একই
বিধান। এসবই হারাম।
ছোট বাচ্চাদের খেলনা ঘোড়া, পুতুলের ক্ষেত্রেও একই হুকুম।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা নগরীতে প্রবেশ
করলেন তখন বাইতুল্লাহর আশে পাশে তিনশ ষাটটি মূর্তি বিদ্যমান ছিল। তিনি প্রত্যেক
মূর্তির দিকে হাতের লাঠি দিয়ে আঘাত করছিলেন এবং বলছিলেন:
جاء الحق وزهق الباطل، إن الباطل كان زهوقا، جاء الحق وما يبدئ
الباطل وما يعيد.
সত্য এসেছে, মিথ্যা
বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। সত্য আগমন করেছে আর মিথ্যা
না পারে কোনো কিছু সূচনা করতে, না পারে
পুনরাবৃত্তি করতে। (সহীহ বুখারী হা. ২৪৭৮, ৪২৮৭, ৪৭২০; সহীহ মুসলিম হা. ১৭৮১)
আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল্লাহ্য় প্রবেশ করে
ইবরাহীম আ. ও মারইয়াম রা.-এর ছবি দেখলেন। তখন তিনি বললেন, এঁরা তো (যাদের চিত্র এই লোকেরা অঙ্কন করেছে)
(আল্লাহর এই বিধান) শুনেছেন যে, ফেরেশতারা
সে গৃহে প্রবেশ করেন না, যাতে কোনো
চিত্র থাকে। (সহীহ বুখারী হা. ৩৩৫১;সহীহ ইবনে
হিববান
হা. ৫৮৫৮)
হযরত আমর ইবনে আবাসা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে প্রেরণ করেছেন আত্মীয়তার
সম্পর্ক বজায় রাখার, মূর্তিসমূহ
ভেঙ্গে ফেলার এবং এক আল্লাহর ইবাদত করার ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুকে শরীক না করার
বিধান দিয়ে।’ (সহীহ মুসলিম হা. ৮৩২)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
إن الذين يصنعون هذه الصور يعذبون يوم القيامة يقال لهم : أحيوا ما
خلفتم.
‘যারা এই সব প্রতিকৃতি প্রস্তুত করে তাদেরকে কিয়ামতের দিন আযাবে নিক্ষেপ করা
হবে। তাদেরকে বলা হবে, যা তোমরা
সৃষ্টি করেছিলে তাতে প্রাণ সঞ্চার কর।’ (সহীহ বুখারী হা. ৫৯৫১; সহীহ মুসলিম হা. ২১০৭)
আবু যুরআ রাহ বলেন-
دخلت مع أبي هريرة في
دار مروان، فرأى فيها التصاوير، فقال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول :
قال الله عز وجل : ومن أظلم ممن ذهب يخلق خلقا كخلقي فليخلقوا ذرة، وليخلقوا حبة،
أو ليخلقوا شعيرة.
আমি আবু হুরায়রা রা.-এর সঙ্গে মারওয়ানের গৃহে প্রবেশ করলাম। সেখানে কিছু
চিত্র তাঁর দৃষ্টিগোচর হল। তিনি তখন বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা বলেন-
ومن أظلم ممن ذهب يخلق خلقا كخلقي
ওই লোকের চেয়ে বড় জালেম আর কে যে আমার সৃষ্টির মতো কোনো কিছু সৃষ্টি করতে
চায়। (তাদের যদি সামর্থ্য থাকে তবে) সৃষ্টি করুক একটি কণা, একটি শষ্য কিংবা একটি যব! (সহীহ মুসলিম হা.
২১১১; সহীহ বুখারী
হা. ৫৯৫৩)
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
لا تدخل الملائكة بيتا فيه تماثيل أو تصاوير
‘ফেরেশতারা
ওই ঘরে প্রবেশ করেন না যাতে মূর্তি বা ছবি রয়েছে।’ (সহীহ মুসলিম ২১১২)
আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/4001/
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যদি নামাজের সঠিক নিয়ম-পদ্ধতি অনুসরণ করে নামাজ
আদায় করেন,তাহলে তা কবুলও হবে
ইনশাআল্লাহ । তবে যদি নামাজের সামনে থাকে তাহলে নামাজ মাকরুহ হবে।
উল্লেখ্য যে, আপনি আপনার রুমমেট হিন্দুদেরকে ইসলামের দিকে
দাওয়াত দিতে পারেন এবং বুঝিয়ে (জোরপূর্বক নয়) মূর্তিগুলো ঘর থেকে বের করে দিতে
বলতে পারেন।
আরো একটি বিষয় হলো, হিন্দুদের সাথে একই রুমে থাকলে অনেক সময়
ঈমান-আমলে ত্রুটি হয়। তাই অন্যত্র রুম ভাড়া নেওয়া আপনার জন্য উত্তম হবে।
২. আজে বাজে চিন্তা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। দোয়া দরুদ পড়ে ঘুমানোর
চেষ্টা করবেন। বিশেষ করে সূরা ফাতিহা, সূরা ইখলাছ, ফালাক, নাস ও আয়াতুল কুরসী পড়ে
ঘুমাবেন এবং ঘন ঘন স্বপ্নদোষ হওয়ার ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শও নিবেন।