আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (60 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম।
১।হাটু সতরের অন্তর্ভুক্ত কিনা এই বিষয়টা নিয়ে সম্ভবত মতভেদ আছে।এক্ষেত্রে কোন মতটি বেশি শক্তিশালী?আর হাটু সতরের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পক্ষে দলিলগুলো কী কী?

২।কারো কর্তৃপক্ষ তাকে কোন মুবাহ কাজের আদেশ দিলে সেটা কি তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যাবে?যেমন,স্কুল কর্তৃপক্ষ আদেশ দিল কালো মোজা পরে আসার জন্য।কালো মোজা পরাটা নিতান্তই একটা মুবাহ বিষয়, এক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষের আদেশের কারণে কি ছাত্রদের জন্য কালো মোজা পরাটা ওয়াজিব হয়ে যাবে?না পরলে কি গুনাহ হবে?

৩।যদি কর্তৃপক্ষ কোন মুস্তাহাব কাজের আদেশ দেয়,তখন সেই আদেশ পালন করা মুস্তাহাবই থাকবে নাকি ওয়াজিব হয়ে যাবে?

৪।উপরিউক্ত পরিস্থিতিগুলোতে যদি কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র আদেশ দিয়েই বসে থাকে, কিন্তু সেই আদেশ কে পালন করল কে করলোনা তা নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যাথা নেই, তখনও কি একই হুকুম হবে?

৫।কর্তৃপক্ষের আদেশ যদি পার্থিব দিক দিয়ে ক্ষতিকর হয় তখন হুকুম কী?

 

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

সতর মানেই ঢাকনা। যা ঢেকে রাখতে হবে সেটার নামই সতর। তাই সতর কতটুকু তার প্রমাণের দ্বারাই তা ঢেকে ঢাকা আবশ্যক হবার প্রমাণবাহী।

হাদীসে এসেছে-আমর বিন শুয়াইব তার সনদে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-

فَإِنَّ مَا أَسْفَلَ مِنْ سُرَّتِهِ إِلَى رُكْبَتَيْهِ مِنْ عَوْرَتِهِ

পুরুষের নাভির নিচ থেকে তার উভয় হাটু পর্যন্ত হল সতর। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৭৫৬}

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «عَوْرَةُ الرَّجُلِ مِنْ سُرَّتِهِ إِلَى رُكْبَتِهِ»

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, পুরুষের সতর হল নাভি থেকে নিয়ে হাটু পর্যন্ত। {মুসনাদুশ শামীন-১৪৩}

হাদীস শরীফে এসেছে,রাসূলুল্লাহ সাঃবলেন-

لا طاعة في معصية إنما الطاعة في المعروف

গোনাহের কাজে কারো বশ্যতা স্বীকার করা যাবে না।(শরীয়ত যাদের বিধিনিষেধ মেনে চলার আদেশ দিয়েছে তাদের) আদেশ শুধুমাত্র বৈধ ও নেকীর কাজে মানা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্য এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,

لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো বিধিনিষেধ কে মান্য করা যাবে না।(মুসনাদে আহমাদ-১০৯৮)

 চার মাযহাবের গ্রহণযোগ্য ফেকহী গ্রন্থ 'আল-মা'সুআতুল ফেকহীয়্যায়(২৮/৩২৭)' বর্ণিত রয়েছে,

"طاعة المخلوقين - ممّن تجب طاعتهم – كالوالدين ، والزّوج ، وولاة الأمر : فإنّ وجوب طاعتهم مقيّد بأن لا يكون في معصية ، إذ لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق" انتهى

শরীয়ত কর্তৃক যাদের বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।যেমনঃ মাতাপিতা,স্বামী,এবং রাষ্ট্রীয় প্রধান বা তাদের আদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ।তাদের বিধিনিষেধ আমলে নেয়া তখনই ওয়াজিব যখন তা শরীয়ত বিরোধী হবে না।কেননা 'সৃষ্টিকর্তার নাফরমানীতে কোনো সৃষ্টজীবের অনুসরণ করা যায় না'(মর্মে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে)

এমনকি মাতাপিতার আদেশকে মান্য করার ক্ষেত্রেও মূলত তিনটি মূলনীতি অনুসরণীয়ঃ

(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।

(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।

(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা তাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/1707

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

১. উক্ত বিষয়ে মতোবিরোধ থাকলেও সতর্কতা ও অধিক তাকওয়ার দিক থেকে হাটু সতরের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দলীলগুলোই বেশী প্রাধান্য পায়।

২. মুবাহ কাজে কর্তৃপক্ষ কোন আদেশ দিলে তা মান্য করা ওয়াজিব হয়ে যায়। কেননা উক্ত কাজে শরীয়তে কোন বাধা নিষেধ নেই। এমন বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মান্য করা আবশ্যক।

,৪ ও৫. যদি আদশটি অপশন্যার না হয় তাহলে তা মান্য করা আবশ্যক ।তবে যদি করা না করার ইখতিয়ার বা স্বাধীনতা থাকে তাহলে তা মান্য করা উচিৎ না মানলে কোন গুনাহ হবে না । এবং যে কাজে আপনি পরোকালে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কবোধ করছেন এমন ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের হুকুম মান্য করা আবশ্যক নয়। কারণ, আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো বিধিনিষেধ কে মান্য করা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...