আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু 'আলাইকুম,
আমার এক বোন একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটে অধ্যয়নরত আছে।যেখানে সেখানকার পোশাক পড়ে ক্লাস করতে হয় (কামিজের উপর এপ্রোন,এমনিতে হিজাব, নিকাব করার সুযোগ আছে)। তার বাধ্যতামূলকভাবে হোস্টেলে থাকা লাগে।সে এমনিতে পরিপূর্ণ পর্দা মেনে চলে,কিন্তু এই পড়াশোনার খাতিরে তার পক্ষে অনেক সময় এটা মানা সম্ভব হচ্ছে না। দীন পালনের জন্য আর দীনি ছেলে বিয়ে করার জন্য মেয়েটার, পরিবার তার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখে নি।এখন বৈবাহিক জীবনে কোনো সমস্যা হলে মায়ের ফ্যামিলিতেও ফিরে যেতে পারবে না। সে মনেপ্রাণে চায় সার্টিফিকেটের খাতিরে পড়াশোনাটা অন্তত কমপ্লিট করতে,চাকরী করার কোনো ইচ্ছাই তার নেই। কিন্তু তার হাসবেন্ড চাচ্ছে না সে দুনিয়াবী শিক্ষার খাতিরে হোস্টেলে থাকুক। হাসবেন্ডের কথা না মানার জন্য সে কি গুনাহগার হবে?তার কি পড়াশোনা বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত?

1 Answer

0 votes
by (713,640 points)



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
গোনাহের কাজ ব্যতীত ভাল ও উত্তম কাজে মাতাপিতা ও স্বামীর আদেশকে মান্য করা ওয়াজিব।
হাদীস শরীফে এসেছে,রাসূলুল্লাহ সাঃবলেন- 
لا طاعة في معصية إنما الطاعة في المعروف
গোনাহের কাজে কারো বশ্যতা স্বীকার করা যাবে না।(শরীয়ত যাদের বিধিনিষেধ মেনে চলার আদেশ দিয়েছে তাদের) আদেশ শুধুমাত্র বৈধ ও নেকীর কাজে মানা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্য এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো বিধিনিষেধ কে মান্য করা যাবে না।(মুসনাদে আহমাদ-১০৯৮)

চার মাযহাবের গ্রহণযোগ্য ফেকহী গ্রন্থ 'আল-মা'সুআতুল ফেকহীয়্যায়(২৮/৩২৭)' বর্ণিত রয়েছে,
"طاعة المخلوقين - ممّن تجب طاعتهم – كالوالدين ، والزّوج ، وولاة الأمر : فإنّ وجوب طاعتهم مقيّد بأن لا يكون في معصية ، إذ لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق" انتهى
শরীয়ত কর্তৃক যাদের বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।যেমনঃ মাতাপিতা,স্বামী,এবং রাষ্ট্রীয় প্রধান বা তাদের আদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ।তাদের বিধিনিষেধ আমলে নেয়া তখনই ওয়াজিব যখন তা শরীয়ত বিরোধী হবে না।কেননা 'সৃষ্টিকর্তার নাফরমানীতে কোনো সৃষ্টজীবের অনুসরণ করা যায় না'(মর্মে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে)

মাতাপিতা ও স্বামীর আদেশকে মান্য করা মূলত তিনটি মূলনীতির আলোকে হয়ে থাকে।
(১) তাদের আদেশ কোনো মুবাহ বিষয়ে হতে হবে।কোনো ওয়াজিব তরকের ব্যাপারে হতে পারবে না।এবং কোন হারাম কাজের জড়িত হওয়ার জন্যও হতে পারবে না।
(২)যে কাজের আদেশ তারা দিবেন,এতে তাদের ফায়দা থাকতে হবে,বা শরীয়তের পছন্দসই কাজ হতে হবে।
(৩)যে কাজের আদেশ দিচ্ছেন,তা আদেশকৃত ব্যক্তিরবর্গের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
ঐ বোনের উচিৎ নিজ স্বামীকে রাজি ও খুশী করে তার অনুমতি সাপেক্ষ্যে নার্সিং কলেজে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া।স্বামীরও উচিৎ এ মহৎ কাজের জন্য নিজ স্ত্রীকে অনুমতি দিয়ে দেওয়া।কেননা মহিলা রোগীর জন্য মহিলা সেবিকা/নার্স হওয়া অত্যান্ত জরুরী বিষয়।সুতরাং স্বামীর উচিৎ এরকম কাজের প্রস্তুতির জন্য নিজ স্ত্রীকে অনুমতি  দিয়ে দেয়া।
স্বামীকে বুঝানোর পরও যদি স্বামী তার স্ত্রীকে অনুমতি না দেয়,তাহলে স্ত্রীর জন্য তখন নার্সিং কলেজে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...