আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
192 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
reshown by
আমি একটি মেয়ের বন্ধু মারফত সিভি দেখে ও তার ব্যাপারে যতটুকু জানা সম্ভব জেনে নিয়ে বিয়েতে আগ্রহী হই। উল্লেখ করার বিষয় আমি যা জেনেছি তার মাঝে কোন খারাপ দিক ছিল না। আবার এটাও জানিনা যে, আমাকে য্যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা পুরোপুরি সত্য নাকি মিথ্যা।
বিয়েতে আগ্রহী হবার পর মেয়ের পরিবারে আমি নিজেই বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই। উনারা রাজি হন। এরপর আমার মাকে নিয়ে দেখতে যাই। তারপর উনারা আসেন আমাদের বাসায়। আমার বাবা নেই। চাচারা রাজি নয়। মা রাজি, বোন - দুলাভাই রাজি।

আমি মেয়ের ব্যাপারে কয়েকবার ইস্তিখারা করেছি। প্রথমবার করেছি মেয়ে দেখতে যাবার সময়। তখন সব কিছু সহজ ই মনে হচ্ছিল।

আবার ইস্তিখারা করি মেয়ের ফ্যামিলি বাসায় আসার আগে, তখন চাচাদের কারণে মেয়ের ফ্যামিলি অপমানিত হয় তবে মেয়ের ফ্যামিলি বিয়ে ভেঙ্গে দেয় নি। তখনো আমার মন পজিটিভ ছিল।

এর কয়েক মাস পর আবার ইস্তিখারা করি। আমার মা, বোন, দুলাভাই রাজি। আমার মা খালি মেয়ের হাইট নিয়ে অসন্তুষ্ট। এছাড়া রাজি। আম্মু বলছে আমি যদি এ জায়গায় ঠিক থাকি তবে চাচারা না মানলেও আম্মু এনগেজমেন্ট করায়া রাখবে অন্তত। এতে মেয়ের ফ্যামিলিও রাজি।
কিন্তু এখন আমার মনে প্রচন্ড দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। আমি ছটফট করছি। অস্থির লাগছে। মনে হচ্ছে এই মেয়েকে বিয়ে করা ঠিক হবে? সারাজীবন হয়ত আফসোস করা লাগবে হাইট এর জন্য। আমি কেবল আবেগের বশেই বিয়েতে এগিয়েছি। ভাবনা চিন্তা না করে। আমি এখনো মানসিক ভাবে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত নই। আমি বিয়ের জন্য এগিয়ে ভুল করেছি।
উল্লেখ্য মেয়েকে যখন প্রথম দেখেছি তখন হাইট নিয়ে সমস্যা হয়নি। এরপর আরেকবার দেখা হয়েছে, তখন মন খারাপ হয়েছিল। পরে আরেকবার দেখা হয়েছে নিশ্চিত হতে, তখন আবার বেশি খারাপ লাগেনি।

এখন আবার আমার ফ্যামিলি পজিটিভ কিন্তু এখন দুশ্চিন্তা হচ্ছে। মনে হচ্ছে ভুল করছি।

আবার হাইট ছাড়া মেয়ের আর কোন চারিত্রিক সমস্যা চোখে পড়েনি। নামাজ পড়ে, পর্দা করে। মা মেয়ে দুজন ই। বাবা তাবলিগ করেন। সহজ সরল, মেয়ের ফ্যামিলিতে প্যাচ গোছ নাই। মেয়ের কোন দোষ চোখে পড়েনাই।

কিন্তু আমরা অনেক সময় নিয়ে ফেলেছি। আবার মেয়ের ফ্যামিলিকে বলেও ফেলেছি যে এনগেজমেন্ট করাব বাসায় কথা বলে। কিন্তু দুশ্চিন্তা ঘিরে ধরেছে।
একবার মনে হচ্ছে বিয়ে হলে সারা জীবন আফসোস করব, আরেকবার মনে হচ্ছে আমি যদি এখন না করে দিই তবে মেয়েটা তো কস্ট পাবে। এটাও মেনে নিতে কস্ট হবে। মনে হচ্ছে, মেয়ের ফ্যামিলিই যদি না করে দিত তবে ভাল হত। এতে আমরাও দায়ী থাকলাম না।

দিনশেষে বিভিন্ন দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতায় দিন কাটছে।

কি করব বুঝতে পারছিনা। আগে তো এত দুশ্চিন্তা হয়নি। হঠাৎ করে কেন হচ্ছে।

সর্বশেষ ইস্তিখারার পর তো আমার নিজের ফ্যামিলি এখন পর্যন্ত পজেটিভ। মেয়ের ফ্যামিলি পজিটিভ।আমি পুরোপুরি নিশ্চিত হলে তারা আগাবে। আমার ফ্যামিলি বলতেসে দেখ, মেয়েটা খাট। এটা ছাড়া আমাদের কোন সমস্যা নাই। তুমি যদি খুশি থাক তবেই আমরা খুশি। তুমি যদি এ জায়গায় নিশ্চিত থাক তবেই আমরা আগাব। তোমার হয়ত পরে অন্য মেয়েকে ভাল লাগতে পারে হাইটের কারণে,  বা আফসোস লাগতে পারে কেন একে বিয়ে করলাম। তখন কিন্তু বিষয় টা আরো খারাপ হবে।


এটাই সর্বশেষ ইস্তিখারার পরের ফলাফল

কিন্তু আমিই নিশ্চিত হতে পারছিনা। মানে একটা ব্যাপার আছেনা যে এই মেয়েকে বিয়ে করলেই আমি সারাজীবন খুশি থাকব, এই ব্যাপার টা আমার মাঝে কাজ করছেনা।  আমার মনে হচ্ছে ভুল করছি। আফসোস করতে হবে বিয়ে করলে। আবার মনে হচ্ছে মেয়ের আর মেয়ের ফ্যামিলির কোন দোষ নাই। এভাবে একটা মেয়েকে কস্ট দেয়াও ঠিক না। সর্বোপরি আমি নিশ্চিত না।

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আমি এ ব্যাপারে যত উপায়ে সম্ভব আল্লাহর সাহায্য চেয়েছি। আল্লাহর কাছে আমার মনের অবস্থা তুলে ধরেছি। আল্লাহর কাছে কান্না ও করেছি।ইস্তিখারার নামাজ পড়েছি, আযান আর ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দুয়া করেছি,সুরা বাকারার শেষ তিন আয়াত, সুরা ফাতিহা, দুরূদ যিকির ইত্যাদি সহ আমার জানা সমস্ত উপায়ে দুয়া করেছি। বৃষ্টির সময় ও দুয়া করেছি। আল্লাহর সাহায্য চেয়েছি, কল্যাণ চেয়েছি। আল্লাহর কাছে চেয়েছি আল্লাহ ই যেন ফয়সালা করে দেন এবং আমাদের মর্যাদা রক্ষা করেন এবং কল্যাণ ও সন্তুষ্টি দান করেন।

তারপরেও দুশ্চিন্তা কমছেনা।

এখানে আমার প্রশ্নঃ

১. আমার ইস্তিখারার ফলাফল কি নেগেটিভ নাকি পুরোটাই শয়তানের ওয়াসওয়াসা?

২. যেহেতু, ইস্তিখারা করে ফেলেছি তার মানে কি ব্যাপার টা এমন যে এখন যাই ই হবে তাতে আমার কল্যাণ হবে এবং কখনোই ক্ষতিগ্রস্ত হব না। ব্যাপার টা বর্তমানে আল্লাহর হাতে এবং আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যদি কল্যানকর হয় তবেই বিয়ে হবে নতুবা নয়। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।

৩. এত দুশ্চিন্তা নিয়ে ও যদি আমি বিয়েতে আগাই তবে কি তা ঠিক হবে? নাকি না আগানোই ভাল হবে? যেহেতু ইস্তিখারা করে ফেলেছি, আমি যতই বিয়েতে আগাই না কেন, যদি কল্যাণ কর না হয়ে থাকে এই বিয়ে, তবে হাজার চাইলেও বিয়ে হবেনা। আর বিয়ে হয়ে গেলে ধরে নিতে হবে এটাই আল্লাহর ইচ্ছা আর এতেই সর্বোত্তম কল্যাণ?

আশা করি, বিস্তারিত উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
আপনি ইস্তেখারার নামাজ পরে স্বপ্নযোগে কোনো কিছু দেখেছেন কিনা?
যদি দেখে থাকেন,তাহলে সেই অনুযায়ী আমল করতে পারেন।

যদি কোনো কিছুই দেখে না থাকেন,তাহলে যেহেতু আপনি তার উচ্চতার কারনে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন,তাই এটি কোনো সময় অশান্তির কারন হতে পারে।
বিধায় আপনার কাছে সমস্যাকর মনে হলে অন্যত্রে মেয়ে দেখতে পারেন।
এক্ষেত্রে পাত্রি দেখার আগে আপনি যেই উচ্চতা চাচ্ছেন,সেটি যাচাই করেই তারপর মেয়ে দেখবেন।
প্রয়োজনে আগে আপনার মা,বোন কে দিয়ে দেখাবেন।
,     
তবে কুফুর মিল থাকলে আপনি এই বিবাহও করতে পারেন,যেটি একান্তই আপনার ব্যাক্তিগত ইচ্ছা।
রাসূল সা: ‘কুফু’র বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابُورَ الرَّقِّيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ سُلَيْمَانَ الْأَنْصَارِيُّ أَخُو فُلَيْحٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلَانَ عَنْ ابْنِ وَثِيمَةَ النَّصْرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ خُلُقَهُ وَدِينَهُ فَزَوِّجُوهُ إِلَّا تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের নিকট এমন কোন ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এলে, যার চরিত্র ও ধর্মানুরাগ সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সাথে (তোমাদের মেয়েদের) বিবাহ দাও। তোমরা যদি তা না করো, তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ব্যাপক বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়বে।
(ইবনে মাজাহ ১৯৬৭,তিরমিযী ১০৮৪, ইরওয়াহ ১৮৬৮, সহীহাহ ১০২২।) 
,
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا الْحَارِثُ بْنُ عِمْرَانَ الْجَعْفَرِيُّ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَخَيَّرُوا لِنُطَفِكُمْ وَانْكِحُوا الْأَكْفَاءَ وَأَنْكِحُوا إِلَيْهِمْ
 ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ভবিষ্যত বংশধরদের স্বার্থে উত্তম মহিলা গ্রহণ করো এবং সমতা (কুফু) বিবচেনায় বিবাহ করো, আর বিবাহ দিতেও সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখো।
(ইবনে মাজাহ ১৯৬৮)
,
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
সহীহ : বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...