আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
411 views
in পবিত্রতা (Purity) by (75 points)

১।নাপাক কাপড় বালতির পানিতে প্রথমবার রেখে কচলানোর সময় হতের কব্জির উপর কয়েক ফোঁটা পানি লাগে ।এখন প্রথমবার ধোয়া শেষে কাপড় চিপড়ানোর সময় যদি ঐ পানি কাপড়ে লাগে তাহলে কি কোন সমস্যা হবে?

 

আবার দ্বিতীয়বার বালতির পানিতে কাপড় ধোয়ার সময় হাতের ঐ অংশ যদি বালতির পানিতে ডুবে যায়।তাহলে কি সমস্যা হবে?

 

২।প্রশাব-পায়খানা শেষে পানি ব্যবহার করার সময় পানির ছিটা পায়ে লাগে।তারপর আমি পায়ে জুতা পরা অবস্থায় পা বাথরুমের ফ্লোরে রেখে মগ দিয়ে পানি পায়ে ঢালি।পানি প্রবাহিত হয়ে ড্রেনে পরে যায়।

এখন আমি যদি পায়ে পানি ঢালা শেষে যে পানি প্রবাহিত হয়ে ড্রেনে পরে যাচ্ছিল তার উপর দিয়ে হেঁটে আসি,তাহলে কি আমার জুতা নাপাক হবে?

 

৩।কোথাও তরল নাপাকি লাগলে ,তা পাক করার জন্য যদি ঐ জায়গার উপর পানি ঢালি এবং পানি শুধু ঐ জায়গা না বরং এর আশেপাশের কিছু জায়গা দিয়েও প্রবাহিত হয়।

তাতে কি আশেপাশের জায়গা নাপাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রথমেই একটি মাসয়ালা জেনে নেইঃ
https://ifatwa.info/16102/ ফতোয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে, নাপাক কাপড় ধৌত করার সময় প্রত্যেকবার ভিন্নভাবে বালতি ধুয়ে পাক করার প্রয়োজন নেই। তৃতীয়বার কাপড়টি ধৌত করার পর তা পাক হয়ে যাবে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় বার বালতি থেকে পানি সবটুকু ফেলে দিয়ে পরবর্তী বারের জন্য পানি নেয়া প্রয়োজন। 
,
এখানে বালতি নাপাক হওয়ার বিষয়টা প্রয়োজনের খাতিরে রহিত হয়ে যাবে। অর্থাৎ এভাবে যদি আমরা বালতিকে নাপাক বলি, তাহলে একটি কাপড় পবিত্র করা জন্য অনেক পানির প্রয়োজনিয়তা দেখা দিবে। সুতরাং যত সামান্য পানি লেগে থাকার কারণে উক্ত বালতি নাপাক হবে না। 

উসূলঃ প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে সিদ্ধ করে দেয়

ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের  প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন।একেই পরিভাষায় জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন করে দেয়।
এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।
 যথাক্রমেঃ-
ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)
এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।

যেমনঃ-কোরআন থেকে.....
 ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻻَّ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﻣِﻤَّﺎ ﺫُﻛِﺮَ ﺍﺳْﻢُ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻗَﺪْ ﻓَﺼَّﻞَ ﻟَﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﺍﺿْﻄُﺮِﺭْﺗُﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻭَﺇِﻥَّ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻟَّﻴُﻀِﻠُّﻮﻥَ ﺑِﺄَﻫْﻮَﺍﺋِﻬِﻢ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻋِﻠْﻢٍ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑَّﻚَ ﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﻳﻦ
তরজমাঃ-কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন।(সূরা আন-আম-আয়াতঃ-১১৯)

(০১)
১ম বার কাপড় নিংড়ানোর সময়ে কবজিতে লাগা পানি যদি কাপড়ে লাগে,তাহলে প্রয়োজনের ভিত্তিতে সমস্যা ধরা হবেনা।

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে  প্রবাহিত হয়ে পানি ড্রেনে যাচ্ছিলো,সেই পানির উপর দিয়ে জুতা পায়ে হেটে আসার বিষয়টি।

এখানে দেখতে হবে যে পানি কি পরিমান ঢালা হয়েছে,যদি অল্প পানি ঢালা হয়,তাহলে তো নাপাকির উপত দিয়ে হেটে এসেছে,তাই জুতা নাপাক হবে।

আর যদি অনেক বেশি পানি ঢালা হয়,তাহলে নাপাকি আগেই ড্রেনে চলে যাওয়া সম্পর্কে ধারনা হলে সেই প্রবাহিত পানির উপর জুতা পায়ে হেটে আসলে জুতা নাপাক হবেনা।
,
(০৩)
হ্যাঁ, সেই আশেপাশের জায়গা নাপাক হবে।
২য় নং প্রশ্নের জবাবের ন্যায় এখানেও যদি বেশি পানি ঢালা হয়,যে ধারনা হয় যে নাপাকি চলে গিয়েছে,তাহলে আশেপাশের পানি নাপাক থাকবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...