আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ। আমার জিজ্ঞাসাগুলো হলো-

1। অনেক সময় দেখা যায়, গ্রামের সকল নামাজি মুসল্লি একসাথে কোন কারণে সফরে বাইরে থাকলো, এমতাবস্থায় গ্রামের মসজিদে  আজান বা নামাজ পড়ার মত কেউ থাকলো না। এটাতে কি নিয়ম?

2। এমন হতে পারে যে, মুয়াযযিন কোন এক কারণে সময়মত যুহরের আজান দিতে পারে নি। অতপর একজন মুসল্লি মসজিদে নামাজ আদায়ের উদ্দ্যশ্যে আসলো এবং সে মনে করলো মসজিদে আজান  হয়েছে। তাই সে নামাজ পড়ে নিল। এখন কি তার নামাজ হবে?
3। ধরুন, আমি জানলাম এখন মসজিদে গেলে কোন জামাত পাবো না। কিংবা মসজিদের জন্য নির্ধারিত কোন ইমাম নেই।(ক্ষেত্রঃআমার বাসার সামনেই মসজিদ) এমতাবস্থায় ফরজ সালাত কি আমি তবুও মসজিদে গিয়ে আদায় করবো নাকি বাসায় সুন্নতের সাথে পড়ে নিব?
4। ধরুন, আমার এক অমুসলিম বন্ধু আছে। একদিন সে দেখলো আমি কুরআন পড়ছি। এতে সে কিছুটা আকৃষ্ট হয়ে নিজেও পড়ে দেখতে চাইল এবং বলল আমার কুরআন মজিদ(অনুবাদসহ) সে কিছুদিনের জন্য ধার চায়। এখন আমি কি তাকে তা দিব? আমি জানি যে, কুরআন  স্পর্শ  করতে অ্যযু লাগে।  সে তো ওযু না করেই কুরআন পড়ছে৷ এতে কি হবে? আবার অনেকে শুনা যায় কুরআন পড়ার ফলে আলহামদুলিল্লাহ ইসলাম গ্রহণ করার প্রতি আগ্রহ পায়। কিন্তু তখন তো সে ওজু না করে কুরআন পড়ত(হার্ড কপি)। এটারই বা বিধান কি?

 আশা করি, হুজুর বুঝিয়ে বলবেন একটু।

1 Answer

0 votes
by (657,800 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মসজিদ আবাদের গুরুত্ব অপরিসীম। 
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ       

إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللهَِّ مَنْ آَمَنَ بِاللهَِّ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآَتَى الزَّكَاةَ وَلمَْ يخَْشَ إِلَّا اللهََّ فَعَسَى أُولَئِكَ أَنْ يَكُونُوا مِنَ
( المُْهْتَدِينَ ﴿ ١٨ ﴾. (سورة التوبة : ١٨

নি:সন্দেহে তারাইতো আলাহর মসজিদ আবাদ করবে, যারা ঈমান আনে আলাহ ও আখেরাতের প্রতি এবং সালাত কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আলাহ ব্যতীত অন্য কাউকেই ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা সৎপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (তাওবা : ১৮)

প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি সকাল অথবা সন্ধ্যায় মসজিদে যায়, তার জন্য আল্লাহ মেহ্মানীর উপকরণ প্রস্তুত করেন। যখনই সে সেখানে যায়, তখনই তার জন্য ঐ মেহ্মানীর উপকরণ প্রস্তুত করা হয়।” (বুখারী ৬৬২, মুসলিম, সহীহ ৬৬৯নং)

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এভাবে এলাকার সকল নামাজিদের সফরে যাওয়া,মসজিদে নামাজ আযান বন্ধ রাখার অনুমতি ইসলাম প্রদান করেনা।

তবে এক্ষেত্রে মসজিদে জামাত, আযান না হওয়ায় এলাকার মহিলাদের বাসায় নামাজ আদায়ে কোনো সমস্যা হবেনা।
তাদের নামাজ হয়ে যাবে।
(০২)
হ্যাঁ, তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। 

নামাজের সময় হলেই নামাজ পড়া যাবে।  নামাযের অন্যতম একটি শর্ত হল, সময় হওয়া। আযান হোক বা না হোক।
,
 আল্লাহ তাআলা বলেন, 
إِنَّ الصَّلَاةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَابًا مَّوْقُوتًا
“নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।” (সূরা নিসা: ১০৩)

তবে আযানের পর নামাজ পড়া সুন্নাত।
ওয়াক্ত আসার পর বিনা ওযরে কেহ আযানের আগে নামাজ পড়লে সেটি মাকরুহ হবে।
তবে নামাজ হয়ে যাবে।
(০৩)
জামাত পাওয়া যাবেনা,জানলেও মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়াই উত্তম। 

রাসুলুল্লাহ সাঃ  বলেন “যে ব্যক্তি কোন ফরয নামায আদায়ের উদ্দেশ্যে স্বগৃহে থেকে ওযু করে (মসজিদের দিকে) বের হয় সেই ব্যক্তির সওয়াব হয় ইহ্রাম বাঁধাহাজীর ন্যায়। আর যে ব্যক্তি কেবলমাত্র চাশতের নামায পড়ার উদ্দেশ্যেই বের হয়, তার সওয়াব হয় উমরাকারীর সমান। এক নামাযের পর অপর নামায; যে দুয়ের মাঝে কোন অসার (পার্থিব) ক্রিয়াকলাপ না থাকে তা এমন আমল যা ইল্লিয়্যীনে (সৎলোকের সৎকর্মাদি লিপিবদ্ধ করার নিবন্ধ গ্রন্থে) লিপিবদ্ধ করা হয়।” (আবূদাঊদ, সুনান, সহিহ তারগিব ৩১৫নং)

★মসজিদের ইমাম নির্দিষ্ট না থাকা বাড়িতে নামাজ আদায়ের ওযর হবেনা।
শুধু এই কারনে বাড়িতে নামাজ আদায় করলে গুনাহ হবে।

(০৪)
আল্লাহ্ তাআলা বলেন:

وَ اِنۡ اَحَدٌ مِّنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ اسۡتَجَارَکَ فَاَجِرۡہُ حَتّٰی یَسۡمَعَ کَلٰمَ اللّٰہِ ثُمَّ اَبۡلِغۡہُ مَاۡمَنَہٗ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّہُمۡ قَوۡمٌ لَّا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶﴾ 

 “আর মুশরিকদের মধ্যে কেউ আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করলে আপনি তাকে আশ্রয় দিন; যাতে সে আল্লাহ্র বাণী শুনতে পায়। তারপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌঁছিয়ে দিন। কারণ তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা জানে না।”[সূরা তওবা, আয়াত: ৬]

অমুসলিমকে কুরআন পড়তে দেওয়া জায়েজ আছে।
হতে পারে এর বরকতে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে হেদায়েত দিবেন।
,

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি তাকে কুরআন পড়তে দিবেন।    
তবে তাকে কুরআন দেওয়ার আগে তাকে পবিত্র হয়ে পবিত্র স্থানে কুরআন পড়ার অনুরোধ করবেন।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 112 views
...