উত্তর
وعليكم السلام ورحنة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আপনার বাসার ছাদের উপর যদি বাহিরের লোকজনের নামাজ পড়তে আসার অনুমতি থাকে (যেটাকে ইযনে আম বলা হয়),কোনো বাধা না দেওয়া হয়,তাহলে আপনার বাসার ছাদের উপর ঈদের নামাজ পড়া যাবে।
ঈদের নামাজে খুতবা দেওয়া সুন্নাত।
খুতবার ভিতর সুন্নাত হলো
উভয় খুতবা আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা,রাসুল সাঃ এর উপর দরুদ,রাসুল সাঃ এর জন্য রিসালাতের শাহাদাত দেওয়া,কুরআনের আয়াত,উম্মতের জন্য দুয়া সম্বলিত হতে হবে।
বাদাইউস সানায়ে' গ্রন্থে আছেঃ
المسنون فی الخطبۃ الاولیٰ ان تکون مشتملۃ علی الحمد والصلوٰۃ والتشہد ، والتذکیر والقرآن والثانیۃعلی الحمد والصلوٰۃ والتشہد والدعاء والقرآنة
۔ (بدائع الصنائع ص۵۹۱ جلد۱ سنن الخطبۃ)
যার সারমর্ম হলো
খুতবার ভিতর সুন্নাত হলো
উভয় খুতবা আল্লাহ তায়ালার হামদ ছানা,রাসুল সাঃ এর উপর দরুদ,কুরআনের আয়াত, দুয়া সম্বলিত হতে হবে।
সুতরাং উপরোক্ত কিতাব যদি এমন হয়,তাহলে খুতবার সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।
,
★ঈদের নামাজে খুতবা দেওয়া সুন্নাত,এবং এটা নামাজের পর দেওয়া সুন্নাত।
বুখারী শরীফে আছেঃ
أخرج البخاري ومسلم عن ابن عمر رضي اللّٰہ عنہما قال: کان النبي صلی اللّٰہ علیہ وسلم وأبوبکر وعمر یصلون العیدین قبل الخطبۃ۔ (صحیح البخاري، باب الخطبۃ بعد العید ۱؍۱۳۱ رقم: ۹۶۳، صحیح مسلم / صلاۃ العیدین ۱؍۲۹۰ رقم: ۸۸۸)
রাসুল সাঃ,আবু বকর রাঃ এবং ওমর ফারুক রাঃ ঈদের নামাজ খুতবা প্রদানের পূর্বেই পড়তেন।
,
★ঈদের খুতবার ক্ষেত্রে মুসতাহাব হলো প্রথম খুতবার শুরুতেই লাগাতার ৯ বার তাকবীর (তাকবীরে তাশরিক) এবং ২য় খুতবার শুরুতেই লাগাতার ৭ বার তাকবির পড়া।
তবে ভিন্ন পদ্ধতিতে পড়া যেমন মাঝে মাঝে পড়া,এটাও ছহিহ আছে।
তাকবির পড়া সুন্নাত।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
ویستحب أن یستفتح الأولیٰ بتسع تکبیرات تتری أي متتابعات والثانیۃ بسبع ہو السنۃ۔ (الدر المختار / کتاب الصلاۃ، باب صلاۃ العیدین ۲؍۱۷۵ کراچی)
১ম খুতবার শুরুতে ৯ বার,এবং ২য় খুতবার শুরুতে লাগাতার ৭ বার তাকবীর পড়া মুসতাহাব।
আর তাকবির পড়া সুন্নাত।
★ঈদ, জুমআর খুতবা অন্য কোন ভাষায় প্রদান করার নজীর ইসলামে নেই। আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় খুতবা প্রদান করা রাসূল সাঃ এবং পরবর্তীতে কোন সাহাবী থেকেই প্রমাণিত নয়।
নবীজী সাঃ এর মৃত্যুকালের শেষ সময়ে আরবের বাহিরের অনেক অনারবী মুসলমানই মসজিদে নববীতে এসে নামায পড়তো। কিন্তু কোনদিনও কোন জুমআর খুতবা অন্য ভাষায় অনুবাদ করা হয়নি।
সাহাবায়ে কেরামের জমানায় এর কোন নজীর পাওয়া যায় না। হযরত উমর রাঃ এর জমানায় অনারবী মানুষে ভরে গিয়েছিল মদীনা। কিন্তু কোনদিন মসজিদে নববীতে জুমআর খুতবা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় দেয়া হয়েছে বা দোভাষী দিয়ে অন্য ভাষায় তা অনুবাদ করা হয়েছে এর কোন নজীর নেই।
সেই সাথে সাহাবায়ে কেরাম বিভিন্ন দেশে দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে গেছেন। সেসব রাষ্ট্রে ইসলামের আলো ছড়িয়েছেন। কিন্তু অনারবী রাষ্ট্রে এসে আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা দিয়েছেন বা তাদের আরবী খুতবা অন্য ভাষায় অনুবাদ করে জুমআর সময় শুনানো হয়েছে এর কোন নজীর নেই।
নামাযের কিরাত যেমন আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় পড়া বিদআত। ঠিক তেমনি জুমআর খুতবা আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় দেয়া বিদআত।
কুরআনে খুতবাকে জিকির বলা হয়েছে।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ [٦٢:٩]
মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। ( সুরা জুমা আয়াত ৯ )
আই আয়াতের মধ্যকার যিকরুল্লাহ দ্বারা প্রায় সকল মুফাসসিরদের মতে খুতবা উদ্দেশ্য । (তাফসিরে রাযি ১/৪৪৬, তাফসিরে রুহুল মাআনি ২৮/১০২, তাফসিরে ইবনে আব্বাস রাঃ)
হাদিসেও খুতবাকে যিকির হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
فإذا خرج الإمام حضرت الملائكة يستمعون الذكر
যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন তখন ফেরেশতারা এসে যিকির শুনে অর্থাৎ খুতবা শোনে । (বোখারি ১/৩০১, মুসলিম হাদিস নং ৮০৫)
সুতরাং কুরআন তিলাওয়াত ও জিকির যেমন অন্য ভাষায় দেয়া হয় না।তেমনি খুতবাও অন্য ভাষায় দেওয়া হবেনা।
,
★উল্লেখ্য যে কিছু উলামায়ে কেরাম এবং আহলে হাদীসদের নিকটে নিজ মাতৃভাষায় খুতবা দেওয়া সুন্নাত।
সুতরাং তাদের মত অনুসারীরা সেই মত অবলম্বন করতে পারবেন।
এটাও ছহীহ আছে।