আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in পবিত্রতা (Purity) by (9 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
আমি এবং আমার  স্বামী এক বছর তিনমাস  আগে লুকিয়ে  ৩ জন স্বাক্ষীর সম্মুখে  বিয়ে করেছিলাম।
আমার স্বামী আগে তালাকের বিভিন্ন  মাসআলা  জানতো না।আমার  সাথে একটু ঝগড়া  হলেই, বিভিন্ন বাক্যের সাথে  তালাকের শর্ত যুক্ত  করে  দিতো এবং  আমিও  সেই  কাজ  করতাম।সেই অনুযায়ী  আমাদের  অনেক আগেই এক তালাক  বায়েন পতিত হয়ে  যায়।
আমরা পারিবারিকভাবে এখন আবার পুনরায়  বিয়ে  করতে চাচ্ছি, কিন্তু পূর্বের ঘটনাগুলো  বিপত্তি  হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমার  স্বামী  পূর্বে যেইসব বাক্যের সাথে শর্তযুক্ত করে তালাক দিতো,সেইসব বাক্য কি স্বাভাবিকভাবেই বলেছিল,নাকি সেইসব শর্তে যতবার ততবার উল্লেখ  করে  দিয়েছিলো,এখন আর মনে করতে পারতেছি  না।

যেমনঃ সে একবার  বলেছিলঃ " তুমি  যদি  আমার  বাবার ব্যাপারে আর কিছু  বলো,তাহলে তালাক।"

আমার  যতদূর  মনে পড়ে  সম্ভবত এভাবেই বলছে,কিন্তু  তাও মনে বারবার  সন্দেহ  আসতেছে যে আমার  স্বামী  যতবার বলবা ততবার তালাক এভাবে  বলে নাই তো.....

আমি  তাহলে এখন  কি  ধরে নিবো??? আগের ঘটনা  তো স্পষ্ট  মনে পড়তেছে না,অনেক চেষ্টা  করেও স্পষ্ট  মনে করতে  পারতেছি  না,অনেক চেষ্টা  করছি।

আরও  উল্লেখ্য  এই যতবার- ততবারের ব্যাপার এতদিন আমার মাথায় আসে নাই,সেদিন তালাক বিষয়ক একটা  ফতোয়াতে এমন জিনিস  দেখি,তারপরই আমার  মাথায়  এমন সন্দেহ  ঢুকে  যায়।

আরও  উল্লেখ  আমি প্রায়ই দৈনন্দিন  জীবনে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন  ব্যাপার নিয়ে  সন্দেহ  করে থাকি।যেমনঃ পরীক্ষা  দিয়ে  এসে  কমপক্ষে ২/৩ বার ভাবতে থাকি,রোল নাম্বার  ঠিক  মতো লিখছি কিনা,অতিরিক্ত  পেইজ মূল খাতায় লাগাইছি কি না।পরে দেখা যায় আমার  সন্দেহগুলো মিথ্যা  ছিল।

এখন আমাকে ইসলামের আলোকে সমাধান দেন।

আমি কি  ধরে নেবো,"যতবার  বলবা ততবার  তালাক  হবে এটা আমার  শয়তান  কর্তৃক আসা মনের  সন্দেহ, ওয়াসওয়াসা,মিথ্যা????

আমি আমার  পূর্বের স্বামীকেও জিজ্ঞেস  করতে পারতেছি  না, কারণ  আমি ওকে কোরআন শরীফ ছুঁয়ে আল্লাহর  নামে কথা দিছি পূর্বের বিয়ে,তালাক নিয়ে  ওকে আমি আর কিছু  জিজ্ঞেস  করবো না।

আরোও উল্লেখ আমি এর আগেও  ওকে একবার  কোরআন শরীফ ছুঁয়ে কথা দিছিলাম,কিন্তু  সেই শপথ  ভেঙে  তাকে আরেকটা বাক্য (যেহেতু সে অনেক বাক্যের সাথেই তালাক যুক্ত করেছিল আগে)  নিয়ে  জিজ্ঞেস  করেছিলাম,ঐ বাক্যের সাথে যতবার - ততবার উল্লেখ করেছিলো কিনা,সে উত্তর  দিয়েছিলোঃ" না,এভাবে  কখনোই  বলি নাই।"  কিন্তু  সেটা তো ঐ বাক্যের জন্য  প্রযোজ্য।

কিন্তু সেদিন  আমার  উপরের বাক্যটার কথা(মানে আজ যেটা আপনাকে বললাম)  সেটা মনে ছিলো না,তাই সেদিন  ওকে জিজ্ঞেস  করতে পারি নাই।
উপরের বাক্যটা আমার  আজ মনে আসছে।

এখন আমি  পুনরায়  শপথ  ভাঙতে  পারবো  না,চাই না।

আমি এটাও  মনে করতে  পারতেছি  না,জীবনের  প্রথম  সে কোন বাক্যটার সাথে তালাক যুক্ত  করে  আমাকে তালাক দিছিলো,সেটা যদি  মনে করতে পারতাম,তাও হইতো।তাহলে তো আমার তার তালাকের  শর্তযুক্ত করা প্রত্যেকটা বাক্য নিয়ে  ভাবতে হইতো না........
আমি এখন কি করি????

আমার এই অবস্থায় আপনি  আমাকে  ইসলামের  আলোকে  একটা সমাধান দিয়েন।
আমি চিরকাল  কৃতজ্ঞ থাকবো।

আমার কি করা  উচিত।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক শব্দ। এটি খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে সেই শর্ত পাওয়া গেলে বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

واذا اضافه إلى الشرط، وقع عقيب الشرط اتفاقا، مثل أن يقول لامرأته: إن دخلت الدار فأنت طالق، (الفتاوى الهندية، الفصل الثالث فى تعليق الطلاق-1/420، الهداية، كتاب الطلاق، باب الأيمان فى الطلاق-2/385، تبيين الحقائق، باب التعليق-3/109)
সারমর্মঃ
যদি তালাককে কোনো শর্তের সাথে যুক্ত করে,তাহলে শর্ত পাওয়ার পরেই তালাক পতিত হয়ে যাবে।
,

★প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ-
""আমার স্বামী আগে তালাকের বিভিন্ন  মাসআলা  জানতো না।আমার  সাথে একটু ঝগড়া  হলেই, বিভিন্ন বাক্যের সাথে  তালাকের শর্ত যুক্ত  করে  দিতো এবং  আমিও  সেই  কাজ  করতাম।

""যেহেতু সে অনেক বাক্যের সাথেই তালাক যুক্ত করেছিল আগে।

তার মানে আপনার স্বামী অনেক বাক্যের সাথে তালাক শর্ত করে দিয়েছে,আর আপনি সেই কাজ গুলো করেছেন।
,
সুতরাং এখানে যতবার ততবার শব্দ খোজার প্রয়োজনীয়তা নেই।
এখানে এই জাতীয় কোনো কাজের সাথে শর্ত যুক্ত তালাক যেহেতু আপনার স্বামী অনেক বার দিয়েছে,আর আপনিও সেই কাজ গুলি করেছেন,তাই এখানে তিন তালাক পতিত হয়ে আপনার বিবাহ সম্পর্ক পুরোপুরি ভাবে বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে।
,
শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত আপনাদের আর নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিলেও কোনো কাজ হবেনা।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম। 

আমদের  তো এক তালাক  বায়েন  পতিত  হয়েছে।কারন আমদের  সহবাস  ও খালওয়াতে  সহীহার আগেই তালাক  পতিত  হয়েছে,এবং সহবাস এবং খালওয়াতের আগে এক তালাক   বায়েনই পতিত  হয়। 


আপনি  কি দয়া করে আমার  সমস্যাটা আবার পরে নতুন  করে  উত্তর  দিবেন?

আপনি  তাহলে আমার  প্রকৃত  সমস্যাটা বুঝতে  পারতেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...