আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
164 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (6 points)
১.সূরা বাকারার ২০১ আয়াত  এর দোয়া  তাহাজ্জুদ নামাজ এর  সিজদায় ১০ বার পড়লে কি যে কোন দোয়া কবুল হয় ? এটি কি সহীহ ?

২. সূরা বাকারার শেষ ২ আয়াত পাঠ করলে কি এটিই কি সবকিছুর জন্য যথেষ্ট যেমন কবরের আযাব মাফ হবে , জান্নাত নিশ্চিত, সকল প্রকার বিপদ ও ফিতনা থেকে রক্ষা হবে , জীবনে বরকত হবে  ইত্যাদি ?

৩.বিশিষ্ট সাহাবি হজরত উসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সকালে এ দোয়া তিনবার পাঠ করবে, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো আকষ্মিক দুর্ঘটনার শিকার হবে না। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় এ দোয়া তিনবার পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত কোনো আকষ্মিক দুর্ঘটনার শিকার হবে না।আবু দাউদ : ৫০৯০, তিরমিজি : ৩৩৮৮
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِى لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَىْءٌ فِى الأَرْضِ وَلاَ فِى السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
এ আমল কি সহীহ ?
এটা কি নিশ্চিত যে এর আমল দ্বারা কোন প্রকার বিপদ হবেনা ?

৪. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে  সাইয়িদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’।
এ হাদীসে দৃঢ় বিশ্বাস বলতে কি বুঝায় ?যত বড় কবীরা গুনাহকারী  থাকুক না কেন এর আমল কারী ঈমানের উপর মৃত্যুর তাওফীক লাভ করবে ? সে ক্ষেত্রে বন্দার হক থাকলেও আল্লাহ কোন না কোন উসিলায়  কি মাফ করে বিনা হিসাবে জান্নাতে দিবেন ?যারা জুলুম করেন তাদেরকেও ?

1 Answer

0 votes
by (574,440 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
কুরআন হাদীসে এর কোনো ভিত্তি নেই।

(০২)
এই আমলটি কোন ক্ষেত্রে যথেষ্ট হবে,বিষয়টি জানার জন্য উক্ত হাদীস ও তার ব্যখ্যা জানা প্রয়োজন। 
তাহলেই বিষয়টি  স্পষ্ট হবে,ইনশাআল্লাহ। 
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيدِ، عَنْ مَنْصُورِ بْنِ الْمُعْتَمِرِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ قَرَأَ الآيَتَيْنِ مِنْ آخِرِ سُورَةِ الْبَقَرَةِ فِي لَيْلَةٍ كَفَتَاهُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .

আহমদ ইবন মানী’ (রহঃ) ...... আবূ মাসঊদ আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাত্রে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করবে তা সে ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে।

সহীহ, সহীহ আবু দাউদ ১২৬৩, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৮৮১ [আল মাদানী প্রকাশনী]

ফাতহুল বারি গ্রন্থে আছেঃ 

قوله: ( كفتاه ) أي: أجزأتا عنه من قيام الليل بالقرآن، وقيل: أجزأتا عنه عن قراءة القرآن مطلقا سواء كان داخل الصلاة أم خارجها، وقيل: معناه: أجزأتاه فيما يتعلق بالاعتقاد لما اشتملتا عليه من الإيمان والأعمال إجمالا، وقيل: معناه: كفتاه كل سوء، وقيل: كفتاه شر الشيطان، وقيل: دفعتا عنه شر الإنس والجن، وقيل: معناه: كفتاه ما حصل له بسببهما من الثواب عن طلب شيء آخر، وكأنهما اختصتا بذلك لما تضمنتاه من الثناء على الصحابة بجميل انقيادهم إلى الله وابتهالهم ورجوعهم إليه، وما حصل لهم من الإجابة إلى مطلوبهم، وذكر الكرماني عن النووي أنه قال: كفتاه عن قراءة سورة الكهف وآية الكرسي. كذا نقل عنه جازما به، ولم يقل ذلك النووي وإنما قال ما نصه: قيل: معناه كفتاه من قيام الليل، وقيل: من الشيطان، وقيل: من الآفات، ويحتمل من الجميع. هذا آخر كلامه،
সারমর্মঃ
এখানে বিভিন্ন মতামত রয়েছে।
কেহ কেহ বলেছেন সারা রাত দন্ডায়মান অবস্থায় (নামাজে) কুরআন তিলাওয়াত করা থেকে যথেষ্ট হবে,কেহ কেহ বলেছেন নামাজ ও নামাজের বাহিরে কুরআন তিলাওয়াত এর ক্ষেত্রে যথেষ্ট হবে।
কেহ কেহ বলেছেন খারাপি থেকে যথেষ্ট হবে,কেহ কেহ বলেছেন শয়তানের খারাপি থেকে যথেষ্ট হবে,কেহ কেহ বলেছেন মানব ও জিনের খারাপি থেকে যথেষ্ট হবে,কেহ কেহ বলেছেন সুরা কাহাফ আর আয়াতুল কুরসি পাঠের থেকে যথেষ্ট হবে,কেহ কেহ বলেছেন তাহাজ্জুদ পড়া থেকে যথেষ্ট হবে,কেহ কেহ বলেছেন বালা মুছিবতের হাত থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে যথেষ্ট হবে,,,,,
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই /বোন, 
এটি সবকিছুর জন্য যথেষ্ট হবেনা।
কবরের আযাব মাফ  , জান্নাত নিশ্চিত এক্ষেত্রে যথেষ্ট হবেনা।
,
(০৩)
আমলটি সহীহ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مَوْدُودٍ، عَمَّنْ سَمِعَ، أَبَانَ بْنَ عُثْمَانَ، يَقُولُ: سَمِعْتُ عُثْمَانَ يَعْنِي ابْنَ عَفَّانَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ قَالَ بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ، ثَلَاثَ مَرَّاتٍ، لَمْ تُصِبْهُ فَجْأَةُ بَلَاءٍ، حَتَّى يُصْبِحَ، وَمَنْ قَالَهَا حِينَ يُصْبِحُ ثَلَاثُ مَرَّاتٍ، لَمْ تُصِبْهُ فَجْأَةُ بَلَاءٍ حَتَّى يُمْسِيَ،

আবান ইবনু উসমান (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, এবং তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেনঃ যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবেঃ ‘‘আল্লাহর নামে যাঁর নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।’’ সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না। অর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার উপর কোনো হঠাৎ বিপদ আসবে না।
(আবু দাউদ ৫০৮৮)

পূর্ণ বিশ্বাস রেখে আমল করতে পারেন।  
তবে এর খেলাফ হতেই পারেনা,বিষয়টি এমন নহে।
,
(০৪)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই দো‘আ পাঠ করবে, দিনে পাঠ করে রাতে মারা গেলে কিংবা রাতে পাঠ করে দিনে মারা গেলে, সে জান্নাতী হবে’।

اَللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّىْ لآ إِلهَ إلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِىْ وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوْذُبِكَ مِنْ شَرِّمَا صَنَعْتُ، أبُوْءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَىَّ وَأَبُوْءُ بِذَنْبِىْ فَاغْفِرْلِىْ، فَإِنَّهُ لاَيَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ

উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার পালনকর্তা। তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার দাস। আমি আমার সাধ্যমত তোমার নিকটে দেওয়া অঙ্গীকারে ও প্রতিশ্রুতিতে দৃঢ় আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট হ’তে তোমার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আমার উপরে তোমার দেওয়া অনুগ্রহকে স্বীকার করছি এবং আমি আমার গোনাহের স্বীকৃতি দিচ্ছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা কর। কেননা তুমি ব্যতীত পাপসমূহ ক্ষমা করার কেউ নেই’। 
 বুখারী, মিশকাত হা/২৩৩৫ ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৯, ‘ইস্তিগফার ও তওবা’ অনুচ্ছেদ-৪।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
খালেছ দিলে এটি পাঠ করা হলে তাহা তওবা হবে,সুতরাং কবিরা গুনাহ মাফ হয়ে যাবে,ইনশাআল্লাহ। 

তবে বান্দার হক মাফ হবেনা।
এক্ষেত্রে উক্ত আমলের পর বান্দার হক বাকি থাকলে সেটি পুরনের আগ পর্যন্ত সে জান্নাতে যেতে পারবেনা।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 160 views
...