উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো নামাজের মধ্যে অজু ভেঙে যায়,(সে যদি মা'যুর না হয়)তাহলে সে সাথে সাথে অজু করার জন্য যাবে,
(জামাআতের সাথে নামাজ আদায় করলে কাতার ভেঙ্গে দিয়ে সে পিছনের কাতার ফাকা করে মসজিদ থেকে বের হবে)
এক্ষেত্রে নামাজ ভঙ্গকারী কোনো কাজ যেনো তার থেকে প্রকাশ না পায়, (যেমন কাহারো সাথে কথা বলা,ইত্যাদি) অজু করে এসে তার ছুটে যাওয়া আগে আদায় করবে,এক্ষেত্রে তাকে কিরাআত পড়তে হবেনা, তারপর ইমামের সাথে শরীক হয়ে তার সাথেই সালাম ফিরাইবে,আর যদি ইতিমধ্যে ইমাম সালাম ফিরিয়ে দেয়,তাহলে তার নামাজ পুরো করে সে নিজেই সালাম ফিরিয়ে দিয়ে নামাজ শেষ করবে।
★ উল্লেখ্য যে কাতার ফাকা করে অজু করতে যাওয়ার সময় সে যদি চায়,নাকে হাত দিতে পারে। যাতে করে মুছল্লিরা বুঝে নিবে যে তার অজু ভেঙ্গে গিয়েছে,তাতে সকলেই দ্রুত তার যাওয়ার জন্য জায়গা ফাকা করে দিবে।
সুনানে ইবনে মাজা তে আছেঃ
عن عائشۃ رضي اللّٰہ عنہا قالت: قال رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: من أصابہ قيء أو رعاف
أو قلس أو مذي، فلنصرف فلیتوضأ، ثم لیبن علی صلاتہ وہو في ذٰلک لایتکلم۔ (سنن ابن ماجۃ ۱؍۸۵ رقم: ۱۲۲۱)
যার নামাজের মধ্যে বমি ইত্যাদি আসে,তাহলে সে সেখান থেকে চলে যাবে। অজু করবে,এই অবস্থায় সে কোনো ভাবেই কথা বলবেনা। তারপর তার বাকি নামাজ আদায় করে নিবে।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরিতে আছেঃ
إذا أعاد بعد الوضوء ینبغي لہ أن یشتغل أولا بقضاء ما سبقہ الإمام بغیر قراء ۃ یقوم مقدار قیام الإمام ورکوعہ وسجودہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۹۲)
অজু করে আসার পর তার জন্য উচিত হলো প্রথমেই তার ছুটে যাওয়া নামাজ কিরায়াত বিহীন আদায় করা,,,,
মারাকিল ফালাহ গ্রন্থে আছেঃ
ویضع یدہ علیٰ أنفہ تسترا۔ (مراقي الفلاح ۳۳۲)
যার সারমর্ম হলো সে অজু করতে যাওয়ার সময় তার নাকের উপর হাত দিবে,,,
.
★★★আর আপনি যদি মা'যুর হোনঃ
অর্থাই যদি কোনো এক নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত ধারাবাহিক ভাবে আপনার
অজু ভেঙ্গে যেতে থাকে।যেমন মাগরিবের নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত তথা ১ঘন্টা৩০মিনিট ধারাবাহিক অজু ভেঙ্গে যেতে থাকে।
কোনো একটি সময় এমন না পান যে আপনি অযু করে ছোট কিরাত দিয়ে আপনার শুধু ফরজ নামাজটি পড়তে পারেন,
তাহলে এমতাবস্থায় আপনাকে মা'যুর বলে গণ্য করে মা'যুরের হুকুম আপনার উপর আরোপ করা হবে।
.
মাজূর ব্যক্তির বিধান হল, প্রতি নামাযের সময় হবার পর একবার অজু করা আবশ্যক। পরের নামাযের সময় আসা পর্যন্ত অজু পেশাব ঝরা ছাড়া অজু ভঙ্গের আর কোন কারণ না হলে অজু ভঙ্গ হবে না। বরং উক্ত অজু দিয়ে যত ইচ্ছে নামায পড়া যাবে, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি সব ইবাদতই করা যাবে। মন ছোট করা বা নিজেকে নাপাক মনে করার কোন প্রয়োজন নেই।
উদাহরণত
যোহর নামাযের সময় হয় কথার কথা ১২ টা সময়। আর আসর সময় হয় ৪ টা সময়।
আপনি ১২ টা সময় অজু করলেন। এখন এ অজু দিয়ে ৪টা পর্যন্ত ফরজ নামায এবং যত ইচ্ছে নফল নামায, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি সকল ইবাদত করতে পারবেন। বায়ু বের হতে থাকায় নতুন করে অজু করার কোন প্রয়োজন নেই।
কিন্তু যদি এর মাঝে আপনার অন্য কোন কারণে অজু ভঙ্গ হয়, যেমন পায়খানা করলেন, তাহলে আবার নতুন করে অজু করতে হবে। এ অজুও আসর নামায পর্যন্ত বাকি থাকবে।
আবার আসর সময় হয়ে গেলে সেই অজু ভেঙ্গে যাবে। নতুন করে অজু করলে তা থাকবে মাগরিব পর্যন্ত। আবার মাগরিব সময় হয়ে গেলে নতুন করে অজু করতে হবে। এভাবে প্রতি নামাযের জন্য একবার করে অজু করতে হবে। এক অজু দিয়ে সেই নামাযের সময় থাকতে সর্ব প্রকার ইবাদত করা যাবে। নতুন করে অজু করার প্রয়োজন নেই।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
وصاحب عذر من به سلس) بول لا يمكنه إمساكه (أو استطلاق بطن أو انفلات ريح أو استحاضة) أو بعينه رمد أو عمش أو غرب، وكذا كل ما يخرج بوجع ولو من أذن وثدي وسرة (إن استوعب عذره تمام وقت صلاة مفروضة
بأن لا يجد في جميع وقتها زمنا يتوضأ ويصلي فيه خاليا عن الحدث (ولو حكما) لأن الانقطاع اليسير ملحق بالعدم (وهذا شرط) العذر (في حق الابتداء، وفي) حق (البقاء كفى وجوده في جزء من الوقت) ولو مرة (وفي) حق الزوال يشترط (استيعاب الانقطاع) تمام الوقت (حقيقة) لأنه الانقطاع الكامل.
وحكمه الوضوء) لا غسل ثوبه ونحوه (لكل فرض) اللام للوقت كما في – {لدلوك الشمس} [الإسراء: 78]- (ثم يصلي) به (فيه فرضا ونفلا) فدخل الواجب بالأولى (فإذا خرج الوقت بطل) أي: ظهر حدثه السابق، (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الطهارة، مطلب فى احكام المعذور-1/504-505
যার সারমর্ম হলো
যার কোনো এক নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত ধারাবাহিক ভাবে পেশাব বের হতে থাকে,
কোনো একটি সময় এমন না পায় যে সে অযু করে শুধু ফরজ নামাজটি পড়তে পারে,
তাহলে এমতাবস্থায় তাকে মা'যুর বলে গণ্য করা হবে,,,
والله أعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ IOM