আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
276 views
in পবিত্রতা (Purity) by (19 points)
edited by
আস্সালামুয়ালাইকুম।

এক ব্যাক্তি বায়ুজনিত রোগে আক্রান্ত।খুব বেশি সময় অযু ধরে রাখতে পারেন না। নামায বা তিলাওয়াতের জন্য তিনি কি প্রথম অযু পানি দিয়ে করে পরের সময়গুলোতে তাইয়ুম্যম করতে পারবেন?

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তায়াম্মুম শুধু ঐ ব্যক্তিই করতে পারবে,যে যেকোনোভাবেই পানির উপর সামর্থ রাখেনা,বা পানি ব্যবহারএর দ্বারা প্রান নাশ,কঠিন অসুস্থ হয়ে যাওয়া বা অসুখ বেড়ে যাওয়ার ভয় হচ্ছে,শুধু মাত্র সে ব্যাক্তিই নামাজ,কুরআন তেলাওয়াতের জন্য  তায়াম্মুম করতে পারবে,অন্য কাহারো জন্য তায়াম্মুম করা বৈধ হবেনা।      

হ্যাঁ আপনি যদি মা'যুর হোন,তাহলে আপনি প্রত্যেক ওয়াক্তে একবার অজু করে নিবেন, তারপর সেই অজু দিয়ে ঐ ওয়াক্তের ভিতর যতখুশি নামাজ,কুরআন তেলাওয়াত আদায় করতে পারবেন।

প্রথমবার অজু করবেন,তারপর বায়ুজনিত কারনে তায়াম্মুম করবেন,এটা জায়েজ নেই।

মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা তে আছেঃ

 عن الحسن وابن سیرین أنہما قالا: لا یتیمم مارجاً أن یقدر علی الماء في الوقت۔ (مصنف ابن أبي شیبۃ، الطہارۃ / باب من قال لا یتیمم مارجاً أن یقدر علی الماء ۲؍۱۹۱ رقم: ۱۷۱۲)

যার সারমর্ম হলো যেই ব্যক্তি ওয়াক্তের ভিতরেই পানি পাওয়ার আশা রাখে,সে তায়াম্মুম করতে পারবেনা। 

আবু দাউদ শরীফে আছেঃ

عن عمرو بن العاص رضي اللّٰہ عنہ قال: احتلمت في لیلۃ باردۃ في غزوۃ ذات السلاسل فاشفقت أن أغتسل، فأہلک فتیممت ثم صلیت بأصحابي الصبح فذکروا ذٰلک لرسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم فقال: یا عمر! صلیت بأصحابک، وأنت جنب، فأخبرتہ بالذي منعني من الاغتسال وقلت: إني سمعت اللّٰہ، یقول: {وَلَا تَقْتُلُوْا اَنْفُسَکُمْ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمْ رَحِیْمًا} فضحک رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم ولم یقل شیئاً۔ (سنن أبي داؤد، الطہارۃ / باب إذا خاف الجنب البرد أ یتیمم؟ ۱؍۴۸ رقم: ۳۳۴)

যার সারমর্ম হলো কঠিন অসুস্থতার ভয় হলে ফরজ গোসল না করে তায়াম্মুম করা জায়েয আছে।   
ফাতওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   
من عجز عن استعمال الماء لبعدہ میلا أو لمرض یشتد أو یمتد بغلبۃ ظن أو قول حاذق مسلم ولو بتحرک أو برد یہلک الجنب أو یمرضہ ولو في المصر…، ونقل الشامي: فصار الأصل أنہ متی قدر علی الاغتسال بوجہ من الوجوہ لا یباح لہ التیمم إجماعاً۔ (شامي ۱؍۳۹۵-۳۹۸ زکریا۔

যার সারমর্ম হলো  যে ব্যাক্তি এক মাইল দুরত্বের কারনে পানির উপর সামর্থ রাখেনা,বা কোনো মুসলিম অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক   পানি ব্যবহারএর দ্বারা প্রান নাশ,কঠিন অসুস্থ হয়ে যাওয়া বা অসুখ বেড়ে যাওয়ার ভয় হচ্ছে,শুধু মাত্র সে ব্যাক্তিই   তায়াম্মুম করতে পারবে।

★আর আপনি যদি মা'যুর হোনঃ

অর্থাই  যদি কোনো এক নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত ধারাবাহিক ভাবে আপনার

বায়ু বের হতে থাকে।যেমন মাগরিবের নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত তথা ১ঘন্টা৩০মিনিট ধারাবাহিক বায়ু নির্গত হতে থাকে। 

কোনো একটি সময় এমন না পান যে আপনি অযু করে ছোট তেলাওয়াত দিয়ে  আপনার শুধু ফরজ নামাজটি পড়তে পারেন,
তাহলে এমতাবস্থায় আপনাকে মা'যুর বলে গণ্য করে মা'যুরের হুকুম আপনার উপর আরোপ করা হবে।
.
মাজূর ব্যক্তির বিধান হল, প্রতি নামাযের সময় হবার পর একবার অজু করা আবশ্যক। পরের নামাযের সময় আসা পর্যন্ত অজু পেশাব ঝরা ছাড়া অজু ভঙ্গের আর কোন কারণ না হলে অজু ভঙ্গ হবে না। বরং উক্ত অজু দিয়ে যত ইচ্ছে নামায পড়া যাবে, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি সব ইবাদতই করা যাবে। মন ছোট করা বা নিজেকে নাপাক মনে করার কোন প্রয়োজন নেই।

উদাহরণত
যোহর নামাযের সময় হয় কথার কথা ১২ টা সময়। আর আসর সময় হয় ৪ টা সময়।
আপনি ১২ টা সময় অজু করলেন। এখন এ অজু দিয়ে ৪টা পর্যন্ত ফরজ নামায এবং যত ইচ্ছে নফল নামায, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি সকল ইবাদত করতে পারবেন। বায়ু বের হতে  থাকায় নতুন করে অজু করার কোন প্রয়োজন নেই।


কিন্তু যদি এর মাঝে আপনার অন্য কোন কারণে অজু ভঙ্গ হয়, যেমন পায়খানা করলেন, তাহলে আবার নতুন করে অজু করতে হবে। এ অজুও আসর নামায পর্যন্ত বাকি থাকবে।
আবার আসর সময় হয়ে গেলে সেই অজু ভেঙ্গে যাবে। নতুন করে অজু করলে তা থাকবে মাগরিব পর্যন্ত। আবার মাগরিব সময় হয়ে গেলে নতুন করে অজু করতে হবে। এভাবে প্রতি নামাযের জন্য একবার করে অজু করতে হবে। এক অজু দিয়ে সেই নামাযের সময় থাকতে সর্ব প্রকার ইবাদত করা যাবে। নতুন করে অজু করার প্রয়োজন নেই।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   

وصاحب عذر من به سلس) بول لا يمكنه إمساكه (أو استطلاق بطن أو انفلات ريح أو استحاضة) أو بعينه رمد أو عمش أو غرب، وكذا كل ما يخرج بوجع ولو من أذن وثدي وسرة (إن استوعب عذره تمام وقت صلاة مفروضة
بأن لا يجد في جميع وقتها زمنا يتوضأ ويصلي فيه خاليا عن الحدث (ولو حكما) لأن الانقطاع اليسير ملحق بالعدم (وهذا شرط) العذر (في حق الابتداء، وفي) حق (البقاء كفى وجوده في جزء من الوقت) ولو مرة (وفي) حق الزوال يشترط (استيعاب الانقطاع) تمام الوقت (حقيقة) لأنه الانقطاع الكامل.
وحكمه الوضوء) لا غسل ثوبه ونحوه (لكل فرض) اللام للوقت كما في – {لدلوك الشمس} [الإسراء: 78]- (ثم يصلي) به (فيه فرضا ونفلا) فدخل الواجب بالأولى (فإذا خرج الوقت بطل) أي: ظهر حدثه السابق، (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الطهارة، مطلب فى احكام المعذور-1/504-505

যার সারমর্ম হলো 

 যার কোনো এক নামাযের পূর্ণ ওয়াক্ত ধারাবাহিক ভাবে পেশাব বের হতে থাকে,

কোনো একটি সময় এমন না পায় যে সে অযু করে শুধু ফরজ নামাজটি পড়তে পারে,

তাহলে এমতাবস্থায় তাকে মা'যুর বলে গণ্য করা হবে,,, 

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
মুফতী ওলি উল্লাহ 
ইফতা বিভাগ IOM     


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 137 views
+1 vote
1 answer 259 views
...