আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
160 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।

১. ওয়াদা ভঙ্গের কাফফারা কি সাথে সাথেই দিতে হয়? যেমন আজ ওয়াদা ভঙ্গ করলে কি আগামীকালই কাফফারা দিতে হবে? নাকি কাফফারা দেয়ার নিয়ত নিয়ে নিজের সুবিধামতো সময়ে দিলেই চলবে?

২. ১০জনকে খাওয়ানোর মতো সামর্থ্য থাকলেও সেই অর্থ তার অন্য কাজে প্রয়োজন,  সেক্ষেত্রে সে কি বাধ্য ১০জন কে খাওয়াতে? নাকি ৩দিন রোজা রাখলেই চলবে?

৩. ৩টি রোজা কি পরপরই রাখতে হবে নাকি নিজের সুবিধামতো রাখা যাবে?

৪. একজন বালিগ তরুণ ওয়াদা ভঙ্গ করলে তার ১০জন কে খাওয়ানোর সামর্থ্য না থাকলেও সে তার বাবা-মার কাছ থেকে অর্থ নিয়ে খাওয়াতে পারে। সেক্ষেত্রে কি তাকে তার মা-বাবার কাছ থেকে অর্থ নিতে হবে নাকি রোজা রাখলেই চলবে?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,

لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَـكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الأَيْمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ ذَلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُواْ أَيْمَانَكُمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ

আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে,(১) দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক।(২)অথবা, তাদেরকে বস্তু প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে।(৩) যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে।.....এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা মায়েদা-৮৯)

مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا فَلْيَأْتِ الَّذِى هُوَ خَيْرٌ وَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি কোন কিছুর কসম খায়, তারপর এর বিপরীত কাজে কল্যাণ দেখে, তাহলে সে যেন উক্ত কল্যাণধর্মী কাজটি করে এবং স্বীয় কসমের কাফফারা প্রদান করে।{সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৩৬২,সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৩৫২,৪৩৪৭,মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-৫৯৩১}

হারেস রাহ. বলেন, হযরত আলী রা. কুরআন মজীদের আয়াত (তরজমা) (কসমের কাফফারা এই যে, দশজন মিসকীনকে মধ্যমমানের খাবার দেবে, যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে খাইয়ে থাক।) এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, দশ জনের প্রত্যেককে দিনে ও রাতে (দু’ বেলা) খাওয়াবে।-ইবনে কাসীর ২/১৪৩; জাসসাস ২/৪৫৭

বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত কাতাদা রাহ. বলেন, প্রত্যেক মিসকীনকে দিনে ও রাতে (দু বেলা) খাওয়াবে।(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৩৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৬১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৫)

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي آيَةِ كَفَّارَةِ الْيَمِينِ قَالَ: «هُوَ الْخِيَارُ فِي هَؤُلَاءِ الثَّلَاثِ الْأُوَلِ، فَإِنْ لَمْ يَجِدْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ فَصِيَامُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ مُتَتَابِعَاتٍ

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে কসমের কাফফারার আয়াত সম্পর্কে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রথম তিনটির বিষয়ে এখতিয়ার আছে। যদি তাতে সক্ষম না হয়, তাহলে লাগাতার তিনদিন রোযা রাখবে। [সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৩১৮২, মারিফাতুস সুনান ওয়াল আছার, হাদীস নং-১৯৫৭৫]

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১. ওয়াদা ভঙ্গের কোনো কাফফারা দিতে হয়না। কসম ভঙ্গের কাফফারা আছে। আর সাথে সাথেই দেওয়া আবশ্যক নয়। তবে খুব দ্রুত দেওয়াই উত্তম। প্রকাশ থাকে যে, কসম একমাত্র আল্লাহ তাআলার নামেই করা যায়। আল্লাহ তাআলা ব্যতিত অন্য কারো নামে কসম করা নাজায়েয। আর পিতা-মাতা বা অন্য কারো মাথা ছুয়ে কসম করা কুসংস্কারের অন্তর্ভুক্ত।


২. ১০জন মিসকীনকে দু বেলা তৃপ্তি সহকারে খানা খাওয়ানোর মতো সামর্থ্য থাকলে সে ক্ষেত্রে রোজা রাখলে হবে না ।

৩. হ্যাঁ, তিনটি রোজা লাগাতার রাখতে হবে।

৪. পিতাকে জানিয়ে তার থেকে টাকা নিয়েও কাফফারা আদায় করতে পারবে তবে নিজ থেকে অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে কাফফারা আদায়ের সামর্থ্য না থাকলে লাগাতার তিনটি রোযা রেখে কাফফারা আদায় করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...