আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
211 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম, শাইখ।
বিভাগ ক :

আমি এর আগে একবার প্রমিস করেছিলাম অনেকটা এভাবে "আল্লাহ, আমি কখনো অনলাইনে ভয়েস মেসেজ দিবো না।"
এখন আমার একটি ইম্পর্ট্যান্ট দ্বীনি ওয়ার্কশপে যেখানে শুধু ওস্তাযাই শুনে থাকেন, স্কলারশিপে  রেকর্ডেড আলোচনা পাওয়ার জন্য ভয়েস মেসেজ দিতে হবে।

প্রশ্ন হলো

১) আমার ওই কথাটাকি আল্লাহর নামে কসম হয়েছে?

২)যদি হয়ে থাকে তাহলে এখন আমি তো একটি ভালো কাজের জন্য ভয়েস মেসেজ দিতে চাচ্ছি, এক্ষেত্রে কি আমি কসমটি ভাঙতে পারি?

৩)আমাকে কি এর জন্য কোনো কাফফারা দিতে হবে?

৪)আমি স্টুডেন্ট,কি কাফফারা দিতে হবে?

৫)এর আগেও হয়তো আমি না বুঝে এভাবে কসম করে ফেলেছি, আল্লাহর কাছে প্রমিস করেছি,যে অমুক কাজটি করবো না,কিন্তু কি কাজ মনে নেই।এক্ষেত্রে একবারে সবগুলার কাফফারা দিয়ে দিলেই কি হবে?মানে যেমন ৩ টি রোজা রাখলেই কি সবগুলার কাফফারা হয়ে ?

৬)এক্ষেত্রে কি কোনো সওয়াবের নিয়ত করা যাবে?এবং সবগুলা কাফফারার নিয়ত একসাথে করা যাবে কি

৭)কাফফারা আদায়ের পরই কি ভয়েস মেসেজ দিতে পারবো,তার আগে নয়?

৮)কাফফারা আদায় করলেও কি কবিরা গুনাহ হবে কসম ভঙ্গের জন্য?

বিভাগ খ:

আমার সাথে আমার বাবার একটু কথা কাটাকাটি হয় আজকে।তো এরপর বাবার সাথে কথা বলেছি, তবে মুখ ভার করে ছিলাম।

সন্ধ্যায় বাবা আবার কথা বললে আমি সেটার জবাব দিই নি।জবাব দরকারো ছিলো না,তাই।

পরে বাবা বাইরে চলে গেলে আমার মা আমাকে অনেকক্ষণ বকাবকি করে,চুপ করে থাকা ও কথা না বলার জন্য।কিন্তু আমি চুপ করে ছিলাম।কথা বলি নি।আমার চুপ করা দেখে মেবি মায়ের আরো রাগ উঠে গিয়েছিলো।তারপর এক পর্যায়ে আমার মা আমাকে লানত দিয়ে ফেলে। আমাকে বলে যে মা যতটা কষ্ট পায় তার থেকেও যেন বেশি কষ্ট আমি পাই।এমনকি আমি যেন সে কষ্ট সহ্য ও করতে পারি না।

মায়ের এভাবে দেয়া লানত কি কবুল হয়ে যাবে?

এর আগেও অনেক লানত দিয়েছে,সেগুলা কি আমার জীবনে প্রভাব ফেলবে?

আমার কি করা উচিত্ত?তারা রাগারাগি করলে যদি আমি চুপ থাকি, কখনো তর্ক না করি,শুধু বেশি কথা না বলি যদি তাহলেও কি তাদের লানত আমার ওপর বর্তাবে?

বিঃদ্রঃ তিনি আমার সৎ বাবা,কিন্তু আমাকে অনেক ভালোবাসেন।

আর এমন কথা আছে যে, যে যেমন করবে সে তেমন ফল পাবে,তাহলে যদি আমি মা বাবার কষ্ট না বুঝি, তাহলে কি আমার সন্তানরাও এমন হবে?

জাযাকাল্লাহ খায়ের

1 Answer

0 votes
by (696,600 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/3101 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
কসম সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণনা করা হয় যে,
(أَمَّا تَفْسِيرُهَا شَرْعًا) فَالْيَمِينُ فِي الشَّرِيعَةِ عِبَارَةٌ عَنْ عَقْدٍ قَوِيَ بِهِ عَزْمُ الْحَلِفِ عَلَى الْفِعْلِ أَوْ التَّرْكِ كَذَا فِي الْكِفَايَةِ.
ইয়ামিন বা কসম হল, যে ইবারত বা বাক্যমালার দ্বারা কসমকারী কোনো জিনিষ করা বা না করার শপথ করবে,
وَهِيَ نَوْعَانِ: يَمِينٌ بِاَللَّهِ تَعَالَى، أَوْ صِفَتِهِ، وَيَمِينٌ بِغَيْرِهِ، وَهِيَ تَعْلِيقُ الْجَزَاءِ بِالشَّرْطِ كَذَا فِي الْكَافِي.
(أَمَّا الْيَمِينُ بِغَيْرِ اللَّهِ فَنَوْعَانِ) : أَحَدُهُمَا الْيَمِينُ بِالْآبَاءِ، وَالْأَنْبِيَاءِ، وَالصَّوْمِ، وَالصَّلَاةِ، وَسَائِرِ الشَّرَائِعِ، وَالْكَعْبَةِ، وَالْحَرَمِ، وَزَمْزَمَ، وَنَحْوِ ذَلِكَ، وَلَا يَجُوزُ الْحَلِفُ بِشَيْءٍ مِنْ ذَلِكَ.
، وَالثَّانِي الشَّرْطُ، وَالْجَزَاءُ، وَهَذَا النَّوْعُ يَنْقَسِمُ إلَى قِسْمَيْنِ: يَمِينٌ بِالْقُرَبِ، وَيَمِينٌ بِغَيْرِ الْقُرْبِ أَمَّا الْيَمِينُ بِالْقُرَبِ فَهُوَ أَنْ يَقُولَ: إنْ فَعَلْت كَذَا فَعَلَيَّ صَوْمٌ، أَوْ صَلَاةٌ، أَوْ حَجَّةٌ، أَوْ عُمْرَةٌ، أَوْ بَدَنَةٌ، أَوْ هَدْيٌ، أَوْ عِتْقُ رَقَبَةٍ، أَوْ صَدَقَةٌ، أَوْ نَحْوُ ذَلِكَ، وَأَمَّا الْيَمِينُ بِغَيْرِ الْقُرَبِ فَهِيَ الْحَلِفُ بِالطَّلَاقِ، وَالْعَتَاقِ هَكَذَا فِي الْبَدَائِعِ.
কসম দুই প্রকারঃ (১) আল্লাহ বা তার সিফাতের উল্লেখপূর্বক কসম করা (২) আল্লাহ ব্যতীত ভিন্ন কিছু দ্বারা কসম করা। আর তা হচ্ছে, শর্ত ও জাযা ।
আল্লাহ ব্যতীত ভিন্ন কিছু দ্বারা কসম করা আবার দুই প্রকার। যথাঃ (১) বাপ,দাদা ও নবী এবং নামায রোযা ইত্যাদির নাম উল্লেখপূর্বক কসম করা। এটা নাজায়েয। (২) শর্ত এবং জাযা উল্লেখপূর্বক কসম করা। তা আবার দুই প্রকার, যথা- (ক) যেখানে জাযা কোনো প্রকার ইবাদত থেকে হবে, যেমন যদি আমি ঐ কাজ করি, তাহলে আমার উপর রোযা ওয়াজিব। (খ) অথবা জাযা ইবাদতের মধ্য থেকে হবে না। যেমন, আমি যদি ঐ কাজ করি তাহলে আমার স্ত্রী তালাক বা আমার গোলাম আযাদ। 
(وَأَمَّا رُكْنُ الْيَمِينِ بِاَللَّهِ) فَذِكْرُ اسْمِ اللَّهِ، أَوْ صِفَتِهِ، وَأَمَّا رُكْنُ الْيَمِينِ بِغَيْرِهِ فَذِكْرُ شَرْطٍ صَالِحٍ، وَجَزَاءٍ صَالِحٍ كَذَا فِي الْكَافِي
«الفتاوى الهندية» (2/ 51)
কসমের রুকুন হল, আল্লাহ শব্দ বা আল্লাহর কোনো সিফাত তাতে উল্লেখ থাকা। আর বিশুদ্ধ ও উপযোক্ত শর্ত এবং জাযা উপস্থিত থাকা। ( ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/৫১)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
"আল্লাহ, আমি কখনো অনলাইনে ভয়েস মেসেজ দিবো না।"
এই শব্দ দ্বারা কসম হয়ে যাবে। সুতরাং

(১)জ্বী, কসম হবে।
(২)কসম ভাঙ্গলে কাফফারা দিতে হবে।
(৩)জ্বী, কাফফারা দিতে হবে।
(৪)জ্বী, স্টুডেন্ট হলেও কাফফারা দিতে হবে।
(৫) যেহেতু রোযার ব্যাপারে কয়েকটা রোযার একটি কাফফারাই আসে, তাই কিয়াসের তাকাযা হল, সবগুলি কসমের একটি কাফফারাই আসবে।
(৬)জ্বী, করা যেতে পারে।
(৭)আগেও দিতে পারবেন, এবং পরেও পারবেন।
(৮)কাফফারা আদায় করে নিলে আর গোনাহ হবে না।



বিভাগ (খ)

আপনার উচিৎ আপনার মা বাবার সাথে উত্তম আচরণ করা।তারা যখন কথা বলতে চাইবে, তখন তাদের সাথে কথা বলা।তাদের কথার জবাব দেয়া। তাদের কথা জবাব না দেয়ার কারণে তারা যদি কষ্ট পেয়ে আপনাকে লা'নত দেয়, তাহলেও আপনার ক্ষতি হতে পারে।তাই আপনি ভবিষ্যতে তাদের কথা শুনবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (26 points)
জাযাকাল্লাহ খায়ের। 
বিভাগ খ এর প্রশ্নগুলোর উত্তর দেননি।দয়া করে আন্সারগুলা দিবেন,ইন শা আল্লাহ 
by (696,600 points)
জবাব দেয়া হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...