ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি
ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
স্বামী-স্ত্রী
একজন আরেক জনের পোষাক সরূপ। তাই তারা একে অপরে পোষাকের মত মিলে মিশে থাকবে।
আল্লাহ তায়ালা
বলেন -
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ
إِلَىٰ نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ
اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا
عَنكُمْ ۖ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ
রোযার রাতে তোমাদের
স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ
এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা
আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি
তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের
স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)
★ তালাক দেওয়ার
অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى
النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي
زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ
فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا
النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ
يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ
ইবনু আব্বাস
(রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার
সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়।
রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেন,
অতঃপর বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]
★ স্বামীর ডাকে
সাড়া দেওয়া স্ত্রীর উপর আবশ্যক।
হাদীসটি তিরমিযী
শরীফে এসেছে -
عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقٍ، عَنْ
أَبِيهِ، طَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
" إِذَا الرَّجُلُ دَعَا زَوْجَتَهُ لِحَاجَتِهِ فَلْتَأْتِهِ وَإِنْ كَانَتْ
عَلَى التَّنُّورِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ
তালক ইবনু আলী
রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেন, ‘স্বামী যদি মনোবাসনা
পূরণের জন্য তার স্ত্রীকে ডাকে তবে সে যদি চুলার কাছেও থাকে তবুও যেন অবশ্যই সাড়া
দেয়। ’ ইমাম আবূ ইসা(রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি
হাসান-গারীব।
- মিশকাত ৩২৫৭, সহিহাহ ১২০২, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৬০ [আল মাদানী
প্রকাশনী]
★ বিনা কারণে তালাক
আবেদন কারী মহিলা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
ﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ ﺳَﺄَﻟَﺖْ ﺯَﻭْﺟَﻬَﺎ ﻃَﻼَﻗًﺎ
ﻓِﻰ ﻏَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﺑَﺄْﺱٍ ﻓَﺤَﺮَﺍﻡٌ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ . ‘
যে মহিলা বিনা
কারণে তার স্বামীর নিকটে তালাক্ব চায়, তার জন্য
জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম’।
[আবুদাউদ হা/২২২৬; তিরমিযী হা/১১৮৭; ইবনু মাজাহ
হা/২০৫৫; মিশকাত হা/৩২৭৯, সনদ ছহীহ।].
আরো জানুন - https://ifatwa.info/13733/
সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে স্ত্রীকে মহব্বত করবেন। তাকে ভালবাসবেন। তার ভরণপোষণ ও খোরাকীতে কোনো
প্রকার ত্রুটি করা যাবে না। তাকে নাসিহা করুন। সকল চেষ্টার পর যদি সে অবাধ্য থাকে,তাহলে আপনি তাকে
তালাকও দিতে পারেন।
২) ইবাদতের সকল
শর্ত মেনে ইবাদত করলে আশা করা যায় তাঁর ইবাদত কবুল হবে ইনশাআল্লাহ।
৩) প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে আপনি যতদিন তালাক দিবেন না ততদিন পর্যন্ত সে আপনার স্ত্রী হিসেবে থাকবে।
৪) তাকে নাসিহা
করবেন এবং চেষ্টা করবেন আপনার সাথে রাখার। সকল চেষ্টার পর যদি সে অবাধ্য থাকে,তাহলে আপনি তাকে
তালাকও দিতে পারেন। এক্ষেত্রে বিনা কারণে তালাক চাওয়ার গোনাহ স্ত্রীর-ই হবে। তবে
বিশেষ কোনো কারণ থাকলে ভিন্ন কথা।