আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
228 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (4 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

শায়েখ আমার স্ত্রীর সাথে আমার চার বছর সংসার। আমাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে একজনের বয়স তিন বছর অন্যজনের বয়স দেড় বৎসর। এই চার বছর সংসারে আমার স্ত্রী আমার সাথে প্রায়শই ঝগড়া করত ছোটখাটো বিষয় নিয়ে যা আমি সহ্য করে যেতাম, যখন যা চাইতো তাই তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা করে দিতে হতো সংসারে অশান্তি হতো আমি তাই করতাম। আমি মনে করেছিলাম সন্তান হলে ওর সমস্যা গুলো আস্তে আস্তে কমে আসবে কিন্তু দুইটা সন্তান হওয়ার পরেও সমস্যা আরও বেড়ে গেল। ওর অত্যন্ত রাগ, যখন রাগ উঠে তখন আমার গায়ে হাত তুলে, মোবাইল ভাঙ্গে প্লেট ভাঙ্গে ঘড়ি ভাঙ্গা এই ধরনের কার্যকলাপ করে। ১) গত আড়াই মাস আগে ও রাগ করে বিনা অনুমতিতে আমার ঘর ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে যায় আমার সন্তানদেরকে নিয়ে এবং আমার সংসার আর করবে না বলে। এখনোও আমার নিষেধ উপেক্ষা করে তার বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাসায় বেড়াচ্ছে। স্ত্রী এমন অবাধ্য হলে শরীয়তের হুকুম কি? এবং আপনার পরামর্শ চাই।

২) এভাবে স্বামীর অসন্তুষ্টির মধ্যে যদি আমার স্ত্রী থাকে তাঁর ইবাদত কবুল হবে?

৩) এখন প্রায় আড়াই মাস হয়ে গেছে ও বাবার বাড়ি। আমি ওকে আনতেছি না এবং ও আসতে চাচ্ছেনা এভাবে যদি 3 হায়েজ অতিক্রম হয়ে যায় তাহলে শরীয়তের হুকুম কি? অথবা এভাবেও কতদিন বাবার বাড়িতে আমার স্ত্রী হয়ে থাকতে পারবে শরীয়তের হুকুম জানতে চাচ্ছি?

৪) আমার স্ত্রী প্রায় সময় তালাক চায় এ বিষয়ে কিছু বলবেন

জাযাকুমুল্লাহ
by (4 points)
শাইখ আরেকটা বিষয় মিস হয়ে গেছে সেটি হলো আমার স্ত্রী বিয়ের পর থেকে আমার তালাক তাইতো।।।

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

স্বামী-স্ত্রী একজন আরেক জনের পোষাক সরূপ। তাই তারা একে অপরে পোষাকের মত মিলে মিশে থাকবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন -

 

أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ

 

রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)

 

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-

 

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

 

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বললেন, হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]

 

স্বামীর ডাকে সাড়া দেওয়া স্ত্রীর উপর আবশ্যক।

হাদীসটি তিরমিযী শরীফে এসেছে -

 

عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقٍ، عَنْ أَبِيهِ، طَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا الرَّجُلُ دَعَا زَوْجَتَهُ لِحَاجَتِهِ فَلْتَأْتِهِ وَإِنْ كَانَتْ عَلَى التَّنُّورِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

 

তালক ইবনু আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘স্বামী যদি মনোবাসনা পূরণের জন্য তার স্ত্রীকে ডাকে তবে সে যদি চুলার কাছেও থাকে তবুও যেন অবশ্যই সাড়া দেয়। ’ ইমাম আবূ ইসা(রহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান-গারীব।

 - মিশকাত ৩২৫৭, সহিহাহ ১২০২, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৬০ [আল মাদানী প্রকাশনী]

 

বিনা কারণে তালাক আবেদন কারী মহিলা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

 ﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ ﺳَﺄَﻟَﺖْ ﺯَﻭْﺟَﻬَﺎ ﻃَﻼَﻗًﺎ ﻓِﻰ ﻏَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﺑَﺄْﺱٍ ﻓَﺤَﺮَﺍﻡٌ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ . ‘

যে মহিলা বিনা কারণে তার স্বামীর নিকটে তালাক্ব চায়, তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম’

[আবুদাউদ হা/২২২৬; তিরমিযী হা/১১৮৭; ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫; মিশকাত হা/৩২৭৯, সনদ ছহীহ।].

 

আরো জানুন - https://ifatwa.info/13733/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্ত্রীকে মহব্বত করবেন। তাকে ভালবাসবেন। তার ভরণপোষণ ও খোরাকীতে কোনো প্রকার ত্রুটি করা যাবে না। তাকে নাসিহা করুন। সকল চেষ্টার পর যদি সে  অবাধ্য থাকে,তাহলে আপনি তাকে তালাকও দিতে পারেন।

 

২) ইবাদতের সকল শর্ত মেনে ইবাদত করলে আশা করা যায় তাঁর ইবাদত কবুল হবে ইনশাআল্লাহ।

 

৩) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যতদিন তালাক দিবেন না ততদিন পর্যন্ত সে আপনার স্ত্রী হিসেবে থাকবে।

 

৪) তাকে নাসিহা করবেন এবং চেষ্টা করবেন আপনার সাথে রাখার। সকল চেষ্টার পর যদি সে  অবাধ্য থাকে,তাহলে আপনি তাকে তালাকও দিতে পারেন। এক্ষেত্রে বিনা কারণে তালাক চাওয়ার গোনাহ স্ত্রীর-ই হবে। তবে বিশেষ কোনো কারণ থাকলে ভিন্ন কথা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...