ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি
ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
কুরআন স্পর্শ করার জন্য পবিত্র হওয়া আবশ্যক।
কিন্তু তিলাওয়াত করার জন্য অজু থাকা আবশ্যক নয়। তবে গোসল ফরজ অবস্থায় কুরআন
তিলাওয়াত জায়েজ নয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
لَّا
يَمَسُّهُ إِلَّا الْمُطَهَّرُونَ [٥٦:٧٩
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে
স্পর্শ করবে না। {সূরা ওয়াকিয়া-৭৯}
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ عَبْدِ
اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍأَنَّ فِي الْكِتَابِ الَّذِي كَتَبَهُ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِعَمْرِو بْنِ حَزْمٍ أَنْ
لَا يَمَسَّ الْقُرْآنَ إِلَّا طَاهِرٌ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবু বকর বিন হাযম বলেনঃ
রাসূল সাঃ আমর বিন হাযম এর কাছে এই মর্মে চিঠি লিখেছিলেন যে, পবিত্র হওয়া ছাড়া
কুরআন কেউ স্পর্শ করবে না”। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৬৮০, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-২৮৩০, মারেফাতুস সুনান
ওয়াল আসার, হাদীস নং-২০৯, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-১৩২১৭, আল মুজামুস সাগীর, হাদীস নং-১১৬২, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং-৪৬৫, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৬৬}
অন্য এক হাদীসে
এসেছে-
عَنِ
ابْنِ عُمَرَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ :« لاَ تَقْرَأُ
الْحَائِضُ وَلاَ الْجُنُبُ شَيْئًا مِنَ الْقُرْآنِ »
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ
ইরশাদ করেছেনঃ হায়েজা এবং গোসল ওয়াজিব হওয়া ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত করবে না। {সুনানে কুবরা
লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৫৩৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৩১, সুনানে দারা
কুতনী, হাদীস নং-১৯০০, মুসনান্না ইবনে
আবী শাইবা, হাদীস নং-১০৯৮}
★গাছপালা ও প্রাণহীন বস্তুর ছবি প্রস্তুত করা জায়েজ আছে।
হাদীস শরীফে এসেছে-
ﻋَﻦْ ﺳَﻌِﻴﺪِ
ﺑْﻦِ ﺃَﺑِﻲ ﺍﻟْﺤَﺴَﻦِ ﻗَﺎﻝَ : ﺟَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺇِﻟَﻰ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ :
ﺇِﻧِّﻲ ﺭَﺟُﻞٌ ﺃُﺻَﻮِّﺭُ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟﺼُّﻮَﺭَ، ﻓَﺄَﻓْﺘِﻨِﻲ ﻓِﻴﻬَﺎ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻟَﻪُ :
ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﻣِﻨْﻪُ، ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ : ﺍﺩْﻥُ ﻣِﻨِّﻲ . ﻓَﺪَﻧَﺎ ﺣَﺘَّﻰَ
ﻭَﺿَﻊَ ﻳَﺪَﻩُ ﻋَﻠَﻰَ ﺭَﺃْﺳِﻪِ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺃُﻧَﺒُّﺌُﻚَ ﺑِﻤَﺎ ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝِ
ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - . ﺳَﻤِﻌْﺖُ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ
ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻳَﻘُﻮﻝُ : " ﻛُﻞُّ ﻣُﺼَﻮِّﺭٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ،
ﻳَﺠْﻌَﻞُ ﻟَﻪُ ﺑِﻜُﻞِّ ﺻُﻮﺭَﺓٍ ﺻَﻮَّﺭَﻫَﺎ ﻧَﻔْﺴﺎً ، ﻓَﺘُﻌَﺬِّﺑُﻪُ ﻓِﻲ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ
. " ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ
ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪُ ، ﻓَﺄَﻗَﺮَّ ﺑِﻪِ ﻧَﺼْﺮُ ﺑْﻦُ ﻋَﻠِﻲٍّ .
ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ (
2225 ) ، ﻭﻣﺴﻠﻢ ﻭﺍﺍﻟﻔﻆ ﻟﻪ
হযরত সাঈদ ইবনে আবিল হাসান রাহ, থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি
ইবনে আব্বাস (রা.) এর নিকট এসে বলল, আমি এসব ছবি অঙ্কন করে থাকি; তাই এ ব্যাপারে
আপনি আমাকে ফাতাওয়া দিন। তিনি বললেন, তুমি আমার কাছে এসো। সে তার নিকটে এলে তিনি
বললেন, (আরও) নিকটে এসো।
সে (আরও) নিকটে এলো। পরিশেষে তিনি তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি রসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যা শুনেছি, তাই তোমাকে বলব। আমি
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি - প্রত্যেক ছবি
প্রস্তুতকারী জাহান্নামের অধিবাসী হবে। তার তৈরিকৃত প্রতিটি ছবিতে জীবন দেয়া হবে, সে সময়
জাহান্নামে তাকে ঐগুলো আযাব দিতে থাকবে। তিনি আরও বললেন, তোমাকে একান্তই
যদি (তা) করতে হয়, তাহলে গাছ (পালা)
এবং প্রাণহীন বস্তুর (ছবি) প্রস্তুত করো।[ইমাম মুসলিম (রহঃ) এ হাদীস পড়ে শুনালে] নাসর
ইবনু আলী (রহঃ) তার অনুমতি দিলেন। সহীহ বুখারী-[২২২৫]সহীহ মুসলিম [৫৪৩৩]
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১- ওজু না থাকলেও মোবাইল দেখে দেখে সূরা পড়া যাবে।
উল্লেখ্য যে, ওজু ছাড়া মোবাইলের স্ক্রীনে কুরআন শরীফের আয়াত স্পর্শ করা
জায়েজ। তবে না করাই সতর্কতা। (রদ্দুল মুহতার, ১/৩৪৮)
২- ওজু ছাড়া মুখস্ত সূরা পড়লেও ফজিলত পাওয়া
যাবে ইনশাআল্লাহ।
৩- হায়েজের সময় সূরা মূলক ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়বেন।
অর্থাৎ একটা একটা করে শব্দ পড়বেন। এভাবে পুরা সূরা পড়বেন। তবে পুরা আয়াত একবারে পড়া
যাবে না।
উল্লেখ্য যে, হায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত
অর্থাৎ পুরা আয়াত একবারে পড়া নিষিদ্ধ। তবে একটা একটা শব্দ করে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়া
নিষিদ্ধ নয়।
৪- ফেসবুকে খাবারের ছবি দেওয়া জায়েজ । তবে
যেহেতু ফেসবুকে খাবারের ছবি দেওয়ার দ্বারা গরীবদের আফসোসের ক্ষেত্র তৈরী হয়,তাই সতর্কতামূলক
এমন সব ছবি আপলোড না দেওয়াই উত্তম।