আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
814 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আমি একজন প্র্যাকটিসিং মুসলিমাহ। ।আমার পরিবার মোটেও দ্বীনি না
একদিন একটা হুজুর টাইপের ছেলের সাথে আমার পরিচয় হয়। সে ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট বয়। তাই তার সাথে গল্প করতে চাইতাম। ছেলেটা আমাকে একদিন বলল ইসলাম বলতে কি বোঝ।। আমি বললাম আমাদের ধর্ম। এভাবেই আমার ইসলামিক ক্লাস নিতো। হয়তো আল্লাহ তাকে পাঠিয়েছেন আমার হেদায়েতের মাধ্যম হিসেবে। আস্তে আস্তে জিন্স পড়া ছাড়লাম, ঢেলা জামা পড়া শুরু করলাম, লিপস্টিক পারফিউম বাদ দিলাম, ছেলেদের সব গুলোকে আনফ্রেন্ড করলাম। কেউ কেউ অনেক কাছের ছিল আমার বাড়ির সাথে তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল তাদের জন্য আলহামদুলিল্লাহ একটুও খারাপ লাগে নি। কারন আমি রেগে ছিলাম শয়তানের উপর।। এতদিন আমাকে পথভ্রষ্ট করে রাখার জন্য।।তাকে হারালে আমি একপ্রকার শান্তি পেতাম।
যাইহোক এরপর আমার উপর নির্যাতন শুরু হলো। পড়তে চাইলাম লং বোরকা নেকাপ সহ। আমাকে পড়তে দেওয়া হলো না। জোর করে একদিন পড়ে ক্যাম্পাসে চলে গেছি। নিজেকে হেফাজতে আনলাম। আমার বাবা মা এর ফল স্বরূপ আমার অনেক নাম দিলেন আমি ভন্ড হুজুর, হাজি, ভন্ড পির, দরবেশ আরো অনেক কিছু।।
এগুলো কিছু মনে হতো না এরপর শুরু হলো আমাকে নামায পড়তে দেওয়া যাবে না। আমাকে নামাযে দেরি হলে মারতে আসতো। আমার অনেক সময় নিয়ে নামায পড়তে ভালো লাগে। এটা আমার দোষ। অনেক বাজে বাজে গালি দিত। এগুলো কিছু মনে হতো না। কোরআন পড়তে দেখলে গালি দেওয়া শুরু করতো। আমার হিজাব পায়ের নিচে রেখে খুচতো ।আমার তাহাজ্জুতে উঠা যাবে না। যদিও চুপ করে উঠতাম একটু শব্দ পেলেই হলো এমন ভয়ংকর ভাবে চিল্লাচিল্লি করতো। আমি নিজের ঘরে পাপসের উপর ওজু করতাম। এরপর আমার ফোন নিয়ে নেওয়া হল। আমাকে ঘড়ি দেওয়া হলো না তাহাজ্জুতে উঠে যেন নামায না পড়তে পারি তাই। আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আমি একদিন ও মিস করি নাই।। আমি কেমনে জানি জাগা পেয়ে যেতাম। নিজেকে বোঝাতাম সাহাবীদের আমলেও তো অ্যালার্ম ছিল না তারা কি উঠে নি।।
এরপরে ও যখন দেখলো আমি ছাড়ছি না এরপর আমাকে খেতে দেওয়া বন্ধ করে দিল।। ৩,৪ দিন আমি খেতাম না। আমার একটা বান্ধবী আমাকে চুপ করে বিস্কুট দিয়ে যেতো। ৩ দিন পর যদিও একবেলা চুরি করে খেতাম। আমার রুম থেকে কোরআন সরিয়ে নেওয়া হলো। তাও দেখে যে আমি চুপি চুপি মনে মনে তেলোয়াত করে পড়ি।
এরপর আমার খালা ঘোষনা দিলেন আমি জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। এটাই কমতি ছিল আর কি।
আমাকে একটা রুমে বন্ধ করে ফেলা হলো প্রায় ৫ মাস আমি সূর্যের আলো দেখি নি।
এরপর আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হলো আমাকে আমার একটা আত্মীয় উনার বাসাই নিয়ে গেলেন এক কাপড়ে। তার বাসায় প্রায় ১৫ দিন ছিলাম। এরপর আমার বাবা মা উনাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেললেন। তখন তারা আমাকে সাফ জানিয়ে দিলেন যে আমাকে উনারা রাখবেন না সম্পর্ক নষ্ট করতে চান না। আমি চলে গেলাম বাসায়।
এরপর আমাকে নানা রকম কবিরাজি জিনিস খাওয়ানো শুরু করা হলো যেমন পরা পানি আমার খাবার পানি আমার গোসলের পানি সব পরা।মিষ্টি পরানো ছানা পরানো মাথায় দেওয়া তেল পরানো আমার খাওয়ার তেল পরানো আমার ভাত তরকারি সব পরানো।। আমার বিছানা ঘরের মেঝে বালিস কম্বল সবে পরা পানি ছিটানো।
আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ প্রায় ৬ মাস ধরে এগুলো আমার কিছু হয় নাই। আমাকে আবার বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হলো। আর একটা আত্মীয় তাদের বাসায় নিয়ে গেলেন। ওখানেও ওরা ঝগড়া শুরু করে দিল।। ওখান থেকেও চলে আসলাম। এর মধ্যে তো আমাকে পিটানো ছিলোই। একটুতেই আমাকে মারতো। আমার গাল ফেটে রক্ত বের হত। এখনও দাগ আছে।
যাইহোক বর্তমানে আমাকে একটা কবিরাজের ফল আর ফলের বিজ আর কিসের জানি শেকর বেটে ভাতের সাথে মিসিয়ে খাওয়ানো হয়। কবিরাজ বলেছেন আমাকে নাকি টোটালি পাগল করে দিবেন ।তারপর উনি আমাকে অটোসাজেশন দিয়ে আমার বাবা মায়ের মতো করে দিবেন।
প্রায় ১ বছর হলো এভাবে আজেবাজে জিনিস খাওয়ায়।। কখনো কারো থেকে ভালো পরামর্শ পাই নি।।। কি করতে হবে।।
আর তারা আমাকে কোন টাকা দেয় না ।।আমার লিখাপড়ার সামগ্রী থেকে শুরু করে আমার ব্রাশ শ্যাম্পু সব আমার টাকা দিয়ে কেনা লাগে।। আমার এস এস সি ও এইচ এস সি তে বোর্ড বৃত্তি ছিলো আলহামদুলিল্লাহ। ।এখন আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আমাকে পরীক্ষা করার জন্য অনেক রোগ বালাই দিচ্ছেন আলহামদুলিল্লাহ।। ডাক্তারের পিছে ঔষধে অনেক টাকা যাচ্ছে।। এমন অবস্থায় আমি যদি তাদের টাকা চুরি করি তাহলে কি আমার জন্য তা হারাম হবে? আসলে তারা যান আমার যেন দুনিয়ার উপর টাকার উপর লোভ লালস্যা আসুক। আমি যেন এগুলো সহ্য করতে না পেরে তাদের বলি যে আমাকে বেদ্বীনের সাথে বিয়ে দাও।। যদি একটু জানাতেন আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো।। জাযাকুমুল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি যদি এখন আপনার মাতা পিতার টাকা চুরি করেন, এবং তারা সামান্য ঢের পেয়ে যায়, তাহলে আপাকে তো তারা গালমন্দ করবে এবং সাথে সাথে ইসলামকেও তারা গাল মন্দ করবে। আপনার সাথে সাথে তারা ইসলামকে কলুষিত করবে। সুতরাং চুরি করা যাবে না। বরং তাদেরকে হেকমতের সাথে বুঝাতে থাকুন। হুট করে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিবেন না। বরং বিভিন্ন হেকমত ও পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিবেন। 
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ ۗ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।
الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো।
أُولَـٰئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِّن رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُونَ
তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েত প্রাপ্ত। (সূরা বাকারা-১৫৫-১৫৬-১৫৭)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি ধর্ সহকারে পরিস্থিতির মুকাবেলা করুন। সম্ভব হলে কোনো পর্দা সম্মত চাকুরীর ব্যবস্থা করুন। হ্যা, বর্ণিত পরিস্থিতিতে নিজ অতি প্রয়োজনিয় জরুরত পুরা করতে আপনার জন্য যদিও বাবার টাকা চুরি করা জয়েয, তথাপিও এমন রাস্তার দিকে অগ্রসর হওয়া আপনার জন্য কখনো উচিৎ হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 
by (1 point)
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান মুহতারাম ।। আমাকে অনলাইন কোন জব দেওয়া যাবে কি? 
by (597,330 points)
আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করুক।আমীন।
by
আসসালামু আ'লাইকুম, 

এই আপুর কি অবস্থা উস্তাজ, ওনার মেইল আমাকে দেয়া যাবে?  ওনার সিচুয়েশন যদি এখনো খারাপ থাকে আল্লাহর ইচ্ছেতে আমি ওনার রিজিক এর উসিলা হতে চাই৷  জাজাকাল্লাহু খইরন৷ 
by (597,330 points)
আপনি এই নাম্বারে যোগাযোগ করবেন।আপনাকে উনার ঠিকানা দেয়া হবে।+8801303998736

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...