আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (44 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারাকাতুহ।
আমার দাদীর বয়স ৮৮+।তিনি করোনা পজিটিভ হন ৩দিন পূর্বে এবং তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে যেখানে একজন মহিলার সাথে একজন মহিলা থাকবে (যতদিন রোগী সুস্থ না হন)এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়।আমার বয়স ২০+।আমাকে তার সাথে রাখতে আমার বাবা সিদ্ধান্ত নেন।আমি রাজি হয়েছিলাম।আমার দাদীর বয়স বেশি হওয়ায় তিনি শারিরীক দুর্বলতার সাথে মানসিকভাবেও কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে।

আমি নিকাবসহ পর্দা করার চেষ্টা করি।সেখানে একটি মাত্র মহিলা ওয়াশরুম ছিল যা আমাদের ওয়ার্ড থেকে কিছুটা দূরে।আমি নামাজ পড়ার জন্য সেভাবে সুযোগ করতে পারিনি।বাহিরে অজু করতে পারতাম না কারন পুরুষরা যাওয়া আসা করে।গেলে ওয়াশরুমে যেতে হবে যেটা কিছুটা দূরে।একবার অজু করে এসেছিলাম মাগরিবের ওয়াক্তে কিন্তু নামাজ পড়িনি।জোহর থেকে মাগরিব কাজা হয়েছিল।আমি যথাসম্ভব নিকাব পড়েছিলাম সেখানে,শুধু একবার নিকাব খুলেছিলাম,মাস্ক পড়া ছিল।পুরুষ কর্মীরা বেডের পাশের জায়গা পরিষ্কার করতে আসে হঠাৎ  করে।আমি কেবল মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিলাম শুধু সেসময়।নিকাব পড়িনি।কিছু চুল বেড়িয়ে ছিল কি না বলতে পারিনা।যতটুকু সময় ছিলাম ( দুপুর ২টার পর থেকে রাত ৯টার পর পর্যন্ত) হস্পিটালে বোরকা খুলিনি।ওয়াশরুমএ ব্যতিরেকে যা ছিল ১০/১৫ মিনিটের জন্য।

সন্ধ্যার দিকে সেখানে আমাদের ওয়ার্ডে একজন বৃদ্ধা মহিলা ভর্তি হন যার সেবার জন্য ছিল তার ছেলে।

আমার দাদী দুইদিন বাড়িতে অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন।আমি চেষ্টা করেছিলাম তার সেবা যতটুকু করতে পারি, করার।

আমার বাবা একজন আয়াকে রাত ৯টার পর সেবার জন্য নিযুক্ত করেন আমার পরিবর্তে।কিন্তু তিনি একদমই হিজাবি নন।শাড়ি পরেন।আমাকে নিয়ে আসেন বাবা তাকে রেখে।

আমি বাসায় ফিরে খাওয়া শেষে এশার ফরজ নামাজ আদায় করেছি।তারপর ধীরে ধীরে কাজা আদায় করার চেষ্টা করেছি এবং শেষে বিতর।

আমার দাদীর ১১ ছেলেমেয়ে, তারাও বয়স্ক, আবার আমার মত নাতি নাতনিরা আছে কিন্তু কেন জানিনা বিভিন্ন কারন দর্শিয়ে সেবার জন্য কাউকে পাওয়া যায়নি।

আমার বাবা ক্যান্সার থেকে আরোগ্য লাভ করেছে আল্লহর অশেষ রহমতে গতবছর।তিনি সেখানে সেবার জন্য থাকতে পারেননি যদিও তার ইচ্ছা ছিল।ডাক্তার মামা নিষেধ করেছেন এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও,ফুপি,চাচারা।

বর্তমানে বিভিন্ন কাহিনির পর সেই আয়া মহিলার পরিবর্তে এখন আমার একজন চাচা আছেন সেবার জন্য।সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আমার আরেকজন চাচা যদি সুযোগ পান(হস্পিটালে ঢোকার) তাহলে চেষ্টা করবেন সেবা করার।

১)আমার সেখানে থাকলে ২৪/৭ বোরকা পড়ে থাকতে হত,হয়ত ঘুমাতাম বোর্কা পড়ে।জানিনা নামাজগুলো আদায় করতে পারতাম কি না।আমার সত্যিই করোনার ভয় ছিল না।

আমার পরিবর্তে সেখানে একজন বেপর্দা আয়া নিযুক্ত করা কি গুনাহ এর কাজ হয়েছে?

২)আমি আমার দাদীর সেবা করতে একদম কষ্ট বোধ করিনা।না কোনো রোগীর,তবে ছেলেদের মধ্যে শুধু যারা আমার মাহরাম ইন শা আল্লহ।কিন্তু আমার পর্দা আর নামাজ নিয়ে আমি নিশ্চয়তা দিতে পারতাম না সেখানে।

আমার কি হাস্পাতালে তার সেবার জন্য সেভাবেই কষ্ট সহ্য করে থাকাটা উচিৎ ছিল?যদিও আমি বলতে পারিনা আমি পারতাম কি না।

৩)আমার জন্য কি পর্দা, নামাজের মত  ফরজ দাদীর সেবা করা যেভাবেই হোক সেভাবেই?

৪)আমি সিস্টারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম নামাজের জন্য কোনো জায়গা হবে কি না।তারা বলেছিল একটা কেবিন ফাকা আছে।  আমি বলেছিলাম আমি যতক্ষন নামাজ পড়ব ততক্ষন তাদের মধ্যে কেউ আমার দাদীর পাশে থাকতে পারবে কি না।তারা জানিয়েছিল তারা কোনো রিস্ক নিতে পারবেনা কারন হাস্পাতালে বিভিন্ন সময় বিভিন্নজন কে কাজে লাগে বা এমারজেন্সি থাকে বা এরকম কিছু।আর আমার নামাজগুলোকে আমি কাজা করেছিলাম এই ভেবে যে তার(দাদীর) জীবন এর ব্যাপার এবং পর্দার কোনো কাজা নেই।নামাজ হয়ত ইন শা আল্লহ কাজা করে পড়ে নিতে পারব।

এতে কি গুনাহ হয়েছে?

৫)আমি জানতে চাই,আল্লহর নির্দেশ অনুযায়ী  আমার আনুমানিক কি করা উচিত ছিল।

৬)পরিশেষে আমার কোনো কাজে গুনাহ হলে তা আমাকে জানান এবং তা থেকে ক্ষমা পাওয়ার উপায়ও জানান।

৭)আমার সেবা করতে কোনোই সমস্যা নাই।হাসপাতালে কাউকে পরবর্তীতে সেবা দিতেও আমার কোনো সমস্যা নাই ইন শা আল্লহ।কিন্তু সেখানে আশা করি আমার পরিবর্তে কাউকে রেখে নামাজ এর সুযোগ পাব।আমি বুঝতে পারছিনা আমি আত্মীয়তার হক্ব আদায় এ ব্যর্থ কি না?

1 Answer

0 votes
by (721,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনার ফ্যমিলির পুরুষ সদস্য থাকতে যেমন আপনার বাবা, চাচা, ভাই, চাচাতো ভাই , ফুফাতো ভাই ইত্যাদি থাকতে আপনার উপর আপনার দাদির সেবা করা হাসপাতালে গিয়ে ওয়াজিব নয়। কেননা নারীদের জন্য হাসপাতাল নিরাপদ নয়। তাই আপনি বাসায় এসেছেন, এবং আপনার পরিবর্তে আয়া বা আপনার চাচাগণ সেই দায়িত্ব আঞ্জাম দিচ্ছেন, এতে আপনার কোনো গোনাহ হবে না। 
নামায কাযা হয়েছিল, এখন নামায গুলো কাযা আদায় করে নিন। এবং দাদির জন্য আল্লাহর কাছে দু’আ করুন। সম্ভব হলে দিনে দু একবার দেখে আসুন। রাত থাকার জন্য কোনো পুরুষকে প্রেরণ করুন। 

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...