بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ইসলামী জীবন দর্শনে বিশুদ্ধ আকিদার গুরুত্ব অত্যন্ত ব্যাপক ও
অপরিহার্য। এ বিষয়টি পার্থিব ও পারলৌকিক সম্পর্কিত সকল বিষয়ে সুদৃঢ় ও মজবুত দিক নির্দেশনা
প্রদান করে। মুসলমানদের প্রাত্যহিক জীবনে যেসব ইবাদত (নামায, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি) করা হয় সব কিছু কবুলের জন্য বিশুদ্ধ আকিদা প্রয়োজন।
প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ
أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً ۖ
وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
‘‘যে কোন নর-নারী সৎ কাজ করবে ঈমানদার অবস্থায় অবশ্যই আমি (আল্লাহ্)
তাকে পবিত্র উন্নত সমৃদ্ধ জীবন দান করব। এবং
প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত। ’’ [সূরা নাহল: ৯৭]
এ আয়াতে নেক আমল কবুলের জন্য ঈমান তথা বিশুদ্ধ আকিদার শর্ত জুড়ে
দেয়া হয়েছে। আর আকিদা সহিহ ও একনিষ্ঠ হলে সকল ইবাদত কবুলের নিশ্চয়তা রয়েছে। তাছাড়া
ইন্তিকালের পর কবরে মুনকার নাকিরের প্রশ্নোত্তর হবে আকিদা সম্পর্কিত। আখিরাতের প্রথম
পর্যায়ে (কবরে) আমল সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন করা হবে না। তিনটি প্রশ্নই আকিদা বিষয়ক। যেমন: من ربك (তোমারপ্রভু কে?) ২. وما دينكতোমার ধর্ম কী?), ৩. وما كنت تقول فى حق هذا
الرجل الذى بعث فيكم- (এ ব্যক্তি সম্পর্কে
(নবীজিকে ইঙ্গিত করে) তোমার অভিমত কি? যাকে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল?)
এতে যারা
দুনিয়াতে বিশুদ্ধ আকিদার সঙ্গে আমল করেছে তারা তিনটি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারবে।
এবং কিয়ামতে সংঘটিত হওয়ার আগ পর্যন্ত শান্তির স্বর্গীয় পরিবেশে কবর জীবন কাটাতে পারবে।
পক্ষান্তরে যারা বিশুদ্ধ আকিদা পোষণ করবে না তারা কবরে সঠিক জবাব দিতে
ব্যর্থ হবে। ফলে কবর জীবন হবে তাদের জন্য এক কষ্টের কারাগার। আকিদা সহীহ না থাকার কারণে
তাদের উভয় জগতে রয়েছে লাঞ্ছনা ও শাস্তি। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-
مُذَبْذَبِيْنَ بَيْنَ
ذَالِكَ لَا اِلَى هَؤُلَاءِ وَلَا اِلَى هَؤُلَاءِ
‘‘মাঝখানে দোদুল্যমান থাকে, না এদিকের ও দিকের।’’ [সূরা নিসা: ১৪৩] অর্থাৎ দুই রকম
আকিদা পোষণকরী উভয় জগতে বৃথা।
সুতরাং ইসলামী আকীদা সম্পর্কে ইলম অর্জন করা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। ইসলামী আকীদা বিষয়ে প্রথম বই লেখেন ইমাম আবু হানিফা( র:)। বইটি আল ফিকহুল আকবার নামে পরিচিত।আকীদা বিষয়ে অসংখ্য বই লেখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাচীন কয়েকটি বই হল - ইমাম আহমাদ লিখিত "আস-সুন্নাহ", ইমাম আবু দাউদ সুলাইমান লিখিত "আস-সুন্নাহ", ইমাম আবু জাফর ত্বহাবী লিখিত "আকীদাতু আহলিস সুন্নাহ" এছাড়া আরো অনেক বই রয়েছে।
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি ইমান সম্পর্কে জানতে ইমাম আবু জাফর ত্বহাবী (র: )এর লিখিত (আকীদাতু ত্বহাবী, বাংলা ট্রান্সলেশন আছে),বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম মাওলানা আ:মালেক সাহেব কর্তৃক রচিত (ইমান সবার আগে) ও মাওলানা হেমায়েত সাহেব কর্তৃক রচিত (ইসলামী আকীদা ও ভ্রান্তমতবাদ )বইগুলো অধ্যায়ন করতে পারেন।এছাড়াও পূর্বেল্লিখিত বইগুলির বাংলানুবাদ পড়তে পারেন।