আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
208 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম শাইখ।
১/ আমরা হাদিস থেকে 'দব' - ব্যাপার জানতে পারি। রাসুলুল্লাহ ﷺ এর দস্তরখানে দব খাওয়া হয়েছে, যদিও তিনি তা খান নি। আমার প্রশ্ন হলো, হানাফী ফিক্বহের অনুসারী হিসাবে কি আমি দব খেতে পারব.?
২/ মানতের রোজার বিধান কি.? এটি কি সোম- বৃহষ্পতির সাথে রাখা যাবে.? দুইটার সাওয়াবই হবে, নাকি শুধুই মানতের রোজাটা হয়ে যাবে।

৩/ সমাজে প্রচলিত যে, একদিন রোজা রাখা যায়না। কমপক্ষে ২ দিন মিলিয়ে রাখতে হয়, এরূপ ধারণার সত্যতা আছে কি.? ১০ মহররম বাদে এমন কোন দিন আছে কি যেদিন একটি সিয়াম রাখা উচিৎ না, বরং আরেকদিন মিলিয়ে রাখতে হয়।
৪/ বিধর্মীদের উৎসবের দিনে সিয়াম রাখার বিধান কি হানাফীতে.?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)হানাফি ফিকহ অনুযায়ী দব বা গোইল সাফ খাওয়া হারাম। হানাফি ফিকহ ব্যতিত অন্যান্য ফিকহ মতে দব খাওয়া জায়েয। 
اخْتَلَفَ الْفُقَهَاءُ فِي الضَّبِّ: فَذَهَبَ الْجُمْهُورُ إِلَى إِبَاحَتِهِ، وَاسْتَدَلُّوا بِالْحَدِيثِ الْمَرْوِيِّ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَال: دَخَلْتُ أَنَا وَخَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ مَعَ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْتَ مَيْمُونَةَ، فَأُتِيَ بِضَبٍّ مَحْنُوذٍ، (3) فَرَفَعَ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهُ، فَقُلْتُ: أَحَرَامٌ هُوَ يَا رَسُول اللَّهِ؟ قَال: لَا، وَلَكِنَّهُ لَمْ يَكُنْ بِأَرْضِ قَوْمِي فَأَجِدُنِي أَعَافُهُ. قَال خَالِدٌ: فَاجْتَرَرْتُهُ فَأَكَلْتُهُ وَرَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْظُرُ.
وَذَهَبَ أَبُو حَنِيفَةَ إِلَى تَحْرِيمِهِ، وَاحْتَجَّ بِالْحَدِيثِ الْمَرْوِيِّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ابْنِ حَسَنَةَ: أَنَّهُمْ أَصَابَتْهُمْ مَجَاعَةٌ فِي إِحْدَى الْغَزَوَاتِ مَعَ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَجَدَ الصَّحَابَةُ ضِبَابًا فَحَرَشُوهَا وَطَبَخُوهَا، فَبَيْنَمَا كَانَتِ الْقُدُورُ، تَغْلِي بِهَا عَلِمَ بِذَلِكَ الرَّسُول صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَهُمْ بِإِكْفَاءِ الْقُدُورِ فَأَلْقُوا بِهَا. 
[«الموسوعة الفقهية الكويتية» (5/ 142)]

(২)মান্নতের রোযা রাখা ওয়াজিব। সোমবার এবং বৃহস্পতিবার রাখা যাবে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র মান্নতের রোযার সওয়াবই পাওয়া যাবে।

(৩)আশুরার রোজার ক্ষেত্রে এসেছে যে, কেবল ১০ তারিখ রোজা রাখা অনুত্তম। এর কারণ হল, বে, ইয়াহুদিরা আশুরার একদিন রোজা রাখত। তাদের সঙ্গে সাদৃশ্য না হয় সে দিকে খেয়াল রেখে আশুরার পূর্বের দিন ৯ তারিখ বা পরের দিন ১১ তারিখ অতিরিক্ত একটি রোজা রাখা উত্তম।

আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাযি. বর্ণনা করেন,
حِينَ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَوْمَ عَاشُورَاءَ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهُ يَوْمٌ تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ “فَإِذَا كَانَ الْعَامُ الْمُقْبِلُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ صُمْنَا الْيَوْمَ التَّاسِعَ”. قَالَ فَلَمْ يَأْتِ الْعَامُ الْمُقْبِلُ حَتَّى تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ
যখন রাসূলুল্লাহ ﷺ আশুরার রোজা রাখলেন এবং (অন্যদেরকে) রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এটিতো এমন দিন, যাকে ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা বড় জ্ঞান করে, সম্মান জানায়। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, আগামী বছর এদিন আসলে, আমরা নবম দিনও রোজা রাখব ইনশাল্লাহ। বর্ণনাকারী বলছেন, আগামী বছর আসার পূর্বেই রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর ওফাত হয়ে গিয়েছে। ( মুসলিম ১৯৪৬)

অনুরূপভাবে শুধু শুক্রবার বা শুধু শনিবার রোজা রাখা এবং এদিন সমূহকে রোযার জন্য নির্দিষ্ট করা মাকরূহে তানজিহী। হারাম বা মাকরূহে তাহরিমী নয়। (তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-৩১৫)

আবু হুরায়রা রাযি. বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি নবী ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে,
 لا يَصُومَنَّ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلا يَوْمًا قَبْلَهُ أَوْ بَعْدَهُ
তোমাদের কেউ যেন শুধু জুম‘আর দিনে রোজা না রাখে। কিন্তু তার পূর্বে একদিন অথবা পরের দিন (যদি রাখে তবে জুমু‘আর দিনে রোজা রাখা যায়)। (বুখারি ১৮৪৯,মুসলিম ১৯২৯)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আশুরা ব্যতিত বৎসরের অন্যান্য দিন একদিন করে রোযা অনুত্তম নয়। তবে কোনো একদিনকে রোযার জন্য নির্দিষ্ট করা যাবে না। 

(৪)বিধর্মীদের উৎসবের দিনে রোযা রাখা যাবে। তবে তাদের ধর্মীয় দিনের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন পূর্বক রোযা রাখা যাবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...