আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
624 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (1 point)
সমাজে  বহুল প্রচলিত  একটা  কুসংস্কার  আছে যে বাম চোখ  এর উপর লাফালে দুখ আসে৷ ডান চোখ  লাফালে ভাল খবর। কয়েক বার এটা  আমার সাথে  হয়েছেও। যখন ই বাম চোখ  এর উপর লাফিয়েছে আমার সাথে খারাপ কিছু হয়েছে অথবা  খারাপ  কোন  সংবাদ  পেয়েছি। এর পর থেকে চোখ  লাফালেই ভয় লাগে। এটা বিশ্বাস  করা কি ঠিক?

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)

بسم الله الرحمن الرحيم

 

 

জবাব,                                                                                                                                       

ইমরান বিন হুসাইন (রদ্বি, ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন,

 

لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَطَيَّرَ، أَوْ تُطُيِّرَ لَهُ أَوْ تَكَهَّنَ، أَوْ تُكُهِّنَ لَهُ أَوْ سَحَرَ، أَوْ سُحِرَ لَهُ-

 

, ‘‘সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি (কোন বস্ত্ত, ব্যক্তি কর্ম বা কালকে) অশুভ লক্ষণ বলে মানে অথবা যার জন্য অশুভ লক্ষণ দেখা (পরীক্ষা) করা হয়, যে ব্যক্তি (ভাগ্য) গণনা করে অথবা যার জন্য (ভাগ্য) গণনা করা হয়। আর যে ব্যক্তি যাদু করে অথবা যার জন্য (বা আদেশে) যাদু করা হয়।’’ (ত্বাবারানী ১৪৭৭০, সহীহুল জামে ৫৪৩৫ ,সিলসিলা ছহীহা ২১৯৫)

 

এগুলোতে বিশ্বাস করা শিরক। এভাবে শুভ অশুভ নির্ণয়ের বিধান প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ (স) বলেন,

 

اَلطِّيَرَةُ شِرْكٌ

 

কুলক্ষণে বিশ্বাস করা শিরক।[আবুদাঊদ, তিরমিযী; মিশকাত, ৪৫৮৪]

 

আব্দুল্লাহ বিন আমর বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স) একদা বললেন, কুলক্ষণ যে ব্যক্তিকে কোন কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে, নিশ্চয়ই সে শিরক করে। ছাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! উহার কাফফারা কি হবে? তিনি বললেন, ঐ ব্যক্তি বলবে-

 

اَللَّهُمَّ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُكَ وَلاَ طَيْرَ إِلاَّ طَيْرُكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ

 

হে আল্লাহ! আপনার কল্যাণ ছাড়া কোন কল্যাণ নেই। আপনার সৃষ্ট কুলক্ষণ ছাড়া কোন কুলক্ষণ নেই। আর আপনি ছাড়া কোন মাবূদও নেই    [আহমাদ ৭০৪৫, সিলসিলা ছহীহা ১০৬৫]

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

আমাদের সমাজে চোখ লাফানোর মত নানা কুসংস্কার প্রচলিত আছে (যেমনঃ চোখ লাফানো, পেচা ডাকা, পেছন থেকে ডাকা, কাক ডাকা ইত্যাদি)এগুলো আমাদের শির্কের দিকে নিয়ে যায়।এজাতীয় কুসংস্কার থেকে বিরত থাকার সর্বাত্নক চেষ্টা করতে হবে।

চোখের পাতা লাফানো একধরনের অসুখ। ডাক্তারী ভাষায় একে বলে মায়োকিমিয়া (Myokymia) মূলত পেশীর সংকোচনের কারণেই চোখের পাতা লাফায়। দুই-একবার হঠাৎ চোখের পাতা লাফালে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু সেটা যদি মাত্রাতিরিক্ত হয় এবং তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

(চোখের পাতা লাফায় কেন?

মানসিক চাপ: কঠিন মানসিক চাপের ভেতর দিয়ে গেলে শরীর বিভিন্ন উপায়ে তার প্রতিক্রিয়া দেখায়। চোখের পাতা লাফানো মানসিক চাপের লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে।

ক্লান্তি: পরিমিত ঘুমের অভাব বা অন্য কোন কারণে ক্লান্তি থেকেও চোখের পাতা লাফানো শুরু হতে পারে। ঘুমের অভাবে চোখের পাতা লাফালে পরিমিত ঘুম হলেই সেরে যাবে।

দৃষ্টি সমস্যা: দৃষ্টিগত কোন সমস্যা থাকলে চোখের উপর চাপ পড়তে পারে। টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের আলোও চোখের দৃষ্টিতে প্রভাব ফেলতে পারে। আর এই সব সমস্যা থেকে চোখের পাতা লাফানোর উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

চোখের শুষ্কতা: কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে, চোখে কন্ট্যাক্ট ল্যান্স ঠিকমতো না বসলে কিংবা বয়সজনিত কারণে চোখ শুকিয়ে যেতে পারে। আর এ কারণে চোখের পাতা লাফাতে পারে।

পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা: পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা চোখের পাতা লাফানোর একটি কারণ। বিশেষ করে ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে এমনটি হতে পারে।

এলার্জি: যাদের চোখে এলার্জি আছে, তারা চোখ চুলকায় বা হাত দিয়ে ঘষে। এতে চোখ থেকে পানির সঙ্গে কিছুটা হিস্টামিনও নির্গত হয়। হিস্টামিন চোখের পাতা লাফানোর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়।

ক্যাফিন এবং অ্যালকোহল: কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ মনে করেন, ক্যাফিন এবং অ্যালকোহল অতিরিক্ত সেবনে চোখের পাতা লাফাতে পারে।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...