বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ-
যে ব্যক্তি কুরবানি
দেওয়ার ইচ্ছা করেছে, তার জন্য জিলহজ্ব মাসের চাঁদ
উঠার পর থেকে কুরবানি করার আগ পর্যন্ত শরীরের পশম, চুল- নখ ইত্যাদি কাটা
থেকে বিরত থাকা মুস্তাহাব।
তবে যদি এর উপর আমল করতে গিয়ে নখ কাটা ও নাভির নিচের
পশম পরিষ্কার এর মেয়াদ ৪০ দিন অতিক্রম হয়ে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই ৪০ দিনের
ভেতরে নখ ও নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করে নেবে। (শরহুল মুনইয়া ৫৭৩; রদ্দুল মুহতার, ৩/৬৬)
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، تَرْفَعُهُ قَالَ "
إِذَا دَخَلَ الْعَشْرُ وَعِنْدَهُ أُضْحِيَّةٌ يُرِيدُ أَنْ يُضَحِّيَ فَلاَ
يَأْخُذَنَّ شَعْرًا وَلاَ يَقْلِمَنَّ ظُفُرًا " .
উম্মু সালামাহ্ (রাযিঃ)
হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন (যিলহাজ্জ মাসের) প্রথম দশদিন উপস্থিত হয় আর কারো নিকট কুরবানীর
পশু উপস্থিত থাকে, যা সে যাবাহ করার নিয়্যাত
রাখে, তবে সে যেন তার চুল ও নখ না
কাটে। (মুসলিম শরীফ ৫০১২; নাসায়ী ৪৩৬৪, ইবনু মাজাহ্ ৩১৪৯, আহমাদ ২৬৪৭৪, সুনানুল কুবরা লিল
বায়হাক্বী ১৯০৪৩, শু‘আবুল ঈমান ৬৯৪৮, ইরওয়া ১১৬৩,
সহীহ আল জামি‘ ৫২০)
অন্য এক হাদীসে এসেছে-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ
الْعَاصِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِرَجُلٍ:
أُمِرْتُ بِيَوْمِ الْأَضْحَى عِيدًا جَعَلَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لِهَذِهِ
الْأُمَّةِ، فَقَالَ الرَّجُلُ: أَرَأَيْتَ إِنْ لَمْ أَجِدْ إِلَّا مَنِيحَةً
أُنْثَى أَفَأُضَحِّي بِهَا؟ قَالَ: لَا، وَلَكِنْ تَأْخُذُ مِنْ شَعْرِكَ،
وَتُقَلِّمُ أَظْفَارَكَ، وَتَقُصُّ شَارِبَكَ، وَتَحْلِقُ عَانَتَكَ، فَذَلِكَ
تَمَامُ أُضْحِيَّتِكَ عِنْدَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ : আব্দুল্লাহ
বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাকে কুরবানীর দিবসে ঈদ (পালনের) আদেশ করা হয়েছে।
যা আল্লাহ এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন। এক সাহাবী আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানিহা
থাকে (অর্থাৎ অন্যের থেকে নেওয়া দুগ্ধ দানকারী উটনী) আমি কি তা কুরবানী করতে পারি? নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, তবে তুমি চুল, নখ ও মোঁচ কাটবে এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে।
এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৭৮৯;
সুনানে নাসায়ী, হাদীস ৪৩৬৫]
অন্য এক হাদীসে এসেছে-
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ أَنَسٌ
وُقِّتَ لَنَا فِى قَصِّ الشَّارِبِ وَتَقْلِيمِ الأَظْفَارِ وَنَتْفِ الإِبْطِ
وَحَلْقِ الْعَانَةِ أَنْ لاَ نَتْرُكَ أَكْثَرَ مِنْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً
হযরত আনাস বিন মালিক
রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের জন্য মোচ, নখ কর্তন এবং বগলের চুল ও অবাঞ্ছিত লোম কাটার সময়
নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সেটি হল, যেন তা চল্লিশ দিনের
উর্দ্ধে না যায়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৫৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৯৫
আরো বিস্তারিত জানতে-https://ifatwa.info/2241/
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
কুরবানিদাতার জন্য
জিলহজ্ব মাসের চাঁদ উঠার পর থেকে কুরবানি করার আগ পর্যন্ত শরীরের পশম, চুল- নখ ইত্যাদি না কাটা একটি মুস্তাহাব আমল । আবশ্যকীয়
নয় । সুতরাং যদি আপনার নখ জিলহজ্ব মাস শুরু হওয়ার এত আগে কেটে থাকেন যে কুরবানী করা
আগ পর্যন্ত না কাটলে ৪০ দিন অতিবাহিত হয়ে যাবে তাহলে অবশ্যই এখন আপনার নখ কেটে ফেলবেন
বরং এক্ষেত্রে কাটা জরুরী । আর যদি ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে
আপনি উক্ত মুস্তাহাবের উপর আমল করতে পারেন।