ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
তিন দিন বা তার সমপরিমাণ দূরত্বের অধিক সফর করলে কেউ মুসাফির হিসাবে গণ্য হবে।যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে-
أَقَلُّ مَسَافَةٍ تَتَغَيَّرُ فِيهَا الْأَحْكَامُ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ، هُوَ الصَّحِيحُ
সর্বনিম্ন দূরত্ব যার দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধানে পরিবর্তন আসে।(তথা মানুষ মুসাফির হয়)তিন দিনের দূরত্ব।(তাবয়ীন) এটাই বিশুদ্ধ মত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৮)বিস্তারিত জানুন-১২৮১
তিনদিনের দূরত্বকে ফুকাহায়ে কেরাম ৭৭কিলো সমপরিমাণ নির্ধারণ করেন।তাই বর্তমানে কেউ ৭৭কিলো সমপরিমাণ সফর করলে সে শরয়ী মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/4429
মুসাফিরের নামায কসর/অর্ধেক করে পড়তে হয়।অর্থাৎ চার রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে দু রা'কাত পড়তে হবে।দুই রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে দুই রা'কাত পড়তে হবে। এবং তিন রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে কোনো কসর নেই।তবে সুন্নাত নামায সমূহে কসরের বিধান প্রযোজ্য নয়,তথা পড়লে সম্পূর্ণই পড়তে হবে।এবং সাধারণত সুন্নাতকে তরক/পরিত্যাগ করা যাবে না।বরং সময় থাকলে সুন্নাত নামায সমূহকে পড়ে নেয়া উচিৎ।সময় সুযোগ না থাকলে অবশ্য সুন্নাত-কে পরিত্যাগ করার রুখসত রয়েছে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৭/৫১৭)তবে পড়ে নেয়াটা-ই উত্তম।কেননা বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাঃ সফরের সময় সুন্নাত পড়েছেন।(তিরমিযি-১/৭২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) ফেনী থেকে খুলনা যদি ৭৭ কিলোমিটারের অধিক হয়, তাহলে আপনি মুসাফির । মুসাফির ব্যক্তি কসর সালাত আদায় করবে। আর জামাতের সাথে পড়লে সে পূর্ণ নামাযই পড়বে। যেহেতু আপনি একাকি কসর এবং জামাতের সাথে পূর্ণ নামায পড়েছেন, তাই আপনার নামায হয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নাই।
(২) ফজর পর্যন্ত ট্রেইনে থাকতে হবে । ঈশা পড়তে পারবেন না।এই ভেবে মাগরিব এর পর পরই ঈশার সালাত ২ রাকআত কসর আদায় করেছেন। যদি ইশার ওয়াক্তের পূর্বেই আদায় করে থাকেন, তাহলে আপনার উক্ত নামায আদায় হয় নাই। আপনার উক্ত নামায আবার কাযা আদায় করতে হবে। মাগরিবের এক ঘন্টা পর ইশার ওয়াক্ত হয়।
(৩) যেহেতু উক্ত নামায কিবলার দিকে হয় নাই। তাই উক্ত নামাযকে আবার কাযা আদায় করতে হবে।
(৪)ফরজ সলাতে যদি ভুলে ২য় রাকআতে ফাতিহার পর সূরা না পড়া হয়, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে। কেননা ফরযের প্রথম দুই রাকাতে সূরা মিলানো ওয়াজিব।
(৫) যদি ১ম বৈঠকে তাশাহুদ এর সাথে দুরুদ ও দুআ মাসূরা পড়ে ফেলা হয়, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে।
(৬) ফরয গোসলের নিয়ম না জানার কারণে যত নামায কে অতীতে পড়েছে, সেই সব নামাযকে সে এখন কাযা করবে।
(৭) যদি সে মুরতাদ হয়ে যায়, তারপর সে তাওবাহ করে কালিমা পড়ে মুসলমান হয়, তাহলে তার পূর্বের গোনাহ মাফ হবে। তবে অতীতের নামাযকে আর কাযা করতে হবে না।