আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
268 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু


১। ফেনী থেকে খুলনা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হই। পথে ঢাকায় বিরতি নেই আর কিছু কাজ সেরে সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ এর ট্রেইনে খুলনার ট্রেইনে উঠি। এর মধ্যে আমি যুহর  ও আসর কসর আদায় করি এবং মাগরিব জামায়াতে আদায় করি। আমার মাগরিবের সলাত কি আদায় হয়েছে জামায়াতে পড়ার জন্যে?

২। ফজর পর্যন্ত ট্রেইনে থাকতে হবে । ঈশা পড়তে পারব না।এই ভেবে মাগরিব এর পর পরই ঈশার সালাত ২ রাকআত কসর আদায় করি এবং বিতর পড়ে নেই। এভাবে কি আমার সালাত আদায় হয়েছে।
৩। সারারাত ট্রেইনে নির্ঘুম থাকার পর ফজর এর সময় পৌঁছাই। একটা হোটেলে উঠি। হোটেলে এসে দেখি নামাজের আর 4/5 মিনিট আছে। চোখেও প্রচুর ঘুম। তাড়াতাড়ি অযু করে নামাজ পড়ে শুয়ে গেলাম । তখন খেয়াল হলো, আমি তো এসেই ক্বিবলা না খেয়াল করেই পড়ে ফেলেছি। ঘুম চোখে ক্বিবলা কোন দিকে না জেনেই রুমে নামাজ পড়ে ফেলেছি।
তখনই কম্পাসে দেখি আমি যেদিকে ফিরে সলাত পড়েছি সেটা ছিল উত্তর-পশ্চিম দিক কোনাকুনি। আমার কি পুনরায় ঐ সালাত আদায় করতে হবে? অন্যান্য করনীয় কিছু কি আছে?

৪। ফরজ সলাতে যদি ভুলে ২য় রাকআতে ফাতিহার পর সূরা না পড়ে রুকু করে ফেলি, সাহু সিজদা দিতে হবে? সঠিক নিয়ম কি?

৫। অনেকসময় ১ম বৈঠকে তাশাহুদ এর সাথে দুরুদ ও দুআ মাসূরা পড়ে ফেলা হয় মনে ভুলে। ভুল টের পেলে ঐখানে চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে যাই। এই অবস্থায় কি সাহু সিজদা দিতে হবে?

৬। উমরী কাজা আদায় করতে হবে সেটা জানি। কিন্তু নিয়মিত নামাজ আদায় করার এক দেড় বছর পর যদি কেউ ফরজ গোসল সম্পর্কে জানতে পারে আর সে যদি এটা নিশ্চিত হয় তার বছরের পর বছর অনেক কারনে গোসল ফরজ হয়েছিল। কিন্তু এই টার্মটা না জানায় ফরজ গোসল না করে অনেক অনেক সালাত পড়েছে, এমতাবস্থায় তার করনীয় কি?

৭। একজন মুসলিম পরিবারের জন্ম নিয়ে জীবনের একটা সময় সংশয়বাদী বা মূর্তাদ হয়ে যায়। পরে সব বুঝার পর কালিমা পড়ে করে মুসলিম হয়।
এখন কি তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা হয়ে যাবে?
জীবনের যে কটি বছর মূর্তাদ ছিল, সেই সালাত আদায় করবে সে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/8508 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
তিন দিন বা তার সমপরিমাণ দূরত্বের অধিক সফর করলে কেউ মুসাফির হিসাবে গণ্য হবে।যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে-
أَقَلُّ مَسَافَةٍ تَتَغَيَّرُ فِيهَا الْأَحْكَامُ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ، هُوَ الصَّحِيحُ
সর্বনিম্ন দূরত্ব যার দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধানে  পরিবর্তন আসে।(তথা মানুষ মুসাফির হয়)তিন দিনের দূরত্ব।(তাবয়ীন) এটাই বিশুদ্ধ মত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৮)বিস্তারিত জানুন-১২৮১

তিনদিনের দূরত্বকে ফুকাহায়ে কেরাম ৭৭কিলো সমপরিমাণ নির্ধারণ করেন।তাই বর্তমানে কেউ ৭৭কিলো সমপরিমাণ সফর করলে সে শরয়ী মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/4429

মুসাফিরের নামায কসর/অর্ধেক করে পড়তে হয়।অর্থাৎ চার রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে দু রা'কাত পড়তে হবে।দুই রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে দুই রা'কাত পড়তে হবে। এবং তিন রা'কাত বিশিষ্ট নামাযে কোনো কসর নেই।তবে সুন্নাত নামায সমূহে কসরের বিধান প্রযোজ্য নয়,তথা পড়লে সম্পূর্ণই পড়তে হবে।এবং সাধারণত সুন্নাতকে তরক/পরিত্যাগ করা যাবে না।বরং সময় থাকলে সুন্নাত নামায সমূহকে পড়ে নেয়া উচিৎ।সময় সুযোগ না থাকলে অবশ্য সুন্নাত-কে পরিত্যাগ করার রুখসত রয়েছে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৭/৫১৭)তবে পড়ে নেয়াটা-ই উত্তম।কেননা বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাঃ সফরের সময় সুন্নাত পড়েছেন।(তিরমিযি-১/৭২)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) ফেনী থেকে খুলনা যদি ৭৭ কিলোমিটারের অধিক হয়, তাহলে আপনি মুসাফির । মুসাফির ব্যক্তি কসর সালাত আদায় করবে। আর জামাতের সাথে পড়লে সে পূর্ণ নামাযই পড়বে। যেহেতু আপনি একাকি কসর এবং জামাতের সাথে পূর্ণ নামায পড়েছেন, তাই আপনার নামায হয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নাই।
(২) ফজর পর্যন্ত ট্রেইনে থাকতে হবে । ঈশা পড়তে পারবেন না।এই ভেবে মাগরিব এর পর পরই ঈশার সালাত ২ রাকআত কসর আদায় করেছেন। যদি ইশার ওয়াক্তের পূর্বেই আদায় করে থাকেন, তাহলে আপনার উক্ত নামায আদায় হয় নাই। আপনার উক্ত নামায আবার কাযা আদায় করতে হবে। মাগরিবের এক ঘন্টা পর ইশার ওয়াক্ত হয়। 
(৩) যেহেতু উক্ত নামায কিবলার দিকে হয় নাই। তাই উক্ত নামাযকে আবার কাযা আদায় করতে হবে। 
(৪)ফরজ সলাতে যদি ভুলে ২য় রাকআতে ফাতিহার পর সূরা না পড়া হয়, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে। কেননা ফরযের প্রথম দুই রাকাতে সূরা মিলানো ওয়াজিব। 
(৫) যদি ১ম বৈঠকে তাশাহুদ এর সাথে দুরুদ ও দুআ মাসূরা পড়ে ফেলা হয়, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে। 
(৬) ফরয গোসলের নিয়ম না জানার কারণে যত নামায কে অতীতে পড়েছে, সেই সব নামাযকে সে এখন কাযা করবে। 
(৭) যদি সে মুরতাদ হয়ে যায়, তারপর সে তাওবাহ করে কালিমা পড়ে মুসলমান হয়, তাহলে তার পূর্বের গোনাহ মাফ হবে। তবে অতীতের নামাযকে আর কাযা করতে হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 210 views
...