আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
496 views
in সালাত(Prayer) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম।
অজু করার ক্ষেত্রে হাত-পা-মুখ ধৌত করার সময় এর সাংখ্যিক মান কতটা গুরুত্বপূর্ণ -

- কেউ যদি তিনবারের বেশি/কম ধৌত করে ফেলে ইচ্ছায়/অনিচ্ছায়
- মাথা মাসাহ করার সময় কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা অধিকতর সহীহ
- মুখ ও নাকে পানি দেওয়ার সময় সঠিক পদ্ধতি কি এবং পানি ভেতরে না নিয়ে উপরি উপরি ব্যবহার করলে কতটা সঠিক হবে

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
এক বার করে ধোয়া ফরজ।
তিনবার ধোয়া সুন্নাত।
কেউ যদি তিনবারের বেশি/কম ধৌত করে ফেলে ইচ্ছায়/অনিচ্ছায়,তাহলে সমস্যা নেই।
তবে বিনা ওযরে তিনবারের বেশি ধোয়া ইসরাফ(অনার্থক পানি খরচের) শামিল হওয়ায়ে মাকরুহে তাহরিমি।  


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَجُلاً أَتَى النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ كَيْفَ الطُّهُورُ؟ فَدَعَا بِمَاءٍ فِي إِنَاءٍ، فَغَسَلَ كَفَّيْهِ ثَلَاثًا، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلَاثًا، ثُمَّ غَسَلَ ذِرَاعَيْهِ ثَلَاثًا، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، فَأَدْخَلَ إِصْبَعَيْهِ السَّبَّاحَتَيْنِ فِي أُذُنَيْهِ، وَمَسَحَ بِإِبْهَامَيْهِ عَلَى ظَاهِرِ أُذُنَيْهِ وَبِالسَّبَّاحَتَيْنِ بَاطِنَ أُذُنَيْهِ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلَاثًا ثَلَاثًا ثُمَّ قَالَ " هَكَذَا الْوُضُوءُ فَمَنْ زَادَ عَلَى هَذَا أَوْ نَقَصَ فَقَدْ أَسَاءَ وَظَلَمَ " . أَوْ " ظَلَمَ وَأَسَاءَ " . - حسن صحيح 
‘আমর ইবনু শু‘আইব (রহঃ) সূত্রে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! পবিত্রতা অর্জন (অযু) কিভাবে করতে হয়? তিনি এক পাত্র পানি আনালেন। তারপর উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। এরপর তিনবার মুখমন্ডল ধুলেন। এরপর তিনবার উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ধুলেন। এরপর মাথা মাসাহ্ করলেন এবং উভয় শাহাদাত আঙ্গুলি কানে প্রবেশ করালেন। বৃদ্ধাঙ্গলি দিয়ে কানের বহিরাংশ মাসাহ্ করলেন আর শাহাদাত অঙ্গুলি দিয়ে কানের ভেতরের অংশ মাসাহ্ করলেন। সবশেষে উভয় পা তিনবার করে ধুলেন। অতঃপর বললেনঃ এভাবেই অযু করতে হয়। যে ব্যক্তি এর চেয়ে বেশি বা কম করবে সে তো মন্দ ও জুলুম করল।
(আবু দাউদ ১৩৫.নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ উযুতে বাড়াবাড়ি করা, হাঃ ১৪০), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, হাঃ ৪২২), আহমাদ (২/১৮০), ইবনু খুযাইমাহ (১৭৪)

এক বার করে ধোয়া সংক্রান্তও হাদীস আছে।
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سُفْيَانَ، حَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِوُضُوءِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم؟ فَتَوَضَّأَ مَرَّةً مَرَّةً . -

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অযু সম্পর্কে অবহিত করব না? অতঃপর তিনি অযুর (প্রত্যেক অঙ্গ) একবার করে ধুলেন।
বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ উযুর অঙ্গগুলো একবার একবার করে ধোয়া, হাঃ ১৫৭), আবু দাউদ ১৩৮.তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ উযুর অঙ্গগুলো একবার করে ধোয়া, হাঃ ৮০) ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ উযুর অঙ্গগুলো একবার একবার করে ধোয়া, হাঃ ৪১১, غرفة غرفة শব্দে), আহমাদ (১/২৩৩)
,
(০২)
মাথা মাসেহ করার জন্য হাত সামনের দিক থেকে পেছনে আসবে এবং পেছনের দিক থেকে সামনে আসবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

قِيْلَ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَاصِمٍ كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللهِ ﷺ يَتَوَضَّأُ فَدَعَا بِوَضُوءٍ فَأَفْرَغَ عَلى يَدَيْهِ فَغَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ تَمَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثَلَاثًا ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَه ثَلَاثًا ثُمَّ غَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَه بِيَدَيْهِ فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِه ثُمَّ ذَهَبَ بِهِمَا إِلى قَفَاهُ ثُمَّ رَدَّهُمَا حَتّى رَجَعَ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ. 

 ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু ‘আসিম (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতেন? (এ কথা শুনে) তিনি উযূর জন্য পানি আনালেন, তারপর দুই হাতের উপর তা ঢাললেন এবং দুই হাত (কব্জি পর্যন্ত) দু’বার ধুয়ে নিলেন। এরপর তিনবার করে কুলি করলেন ও নাকে পানি দিলেন। তারপর তিনবার মুখ ধুলেন। তারপর হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুলেন। এরপর দুই হাত দিয়ে ‘মাথা মাসাহ’ করলেন। (মাসাহ এভাবে করলেন) দুই হাতকে মাথার সম্মুখভাগ হতে পেছনের দিকে নিয়ে আবার পেছন হতে সম্মুখভাগে নিয়ে এলেন। তারপর আবার উল্টো দিকে যেখান থেকে শুরু করেছিলেন সেখানে দুই হাত নিয়ে এলেন। অতঃপর দুই পা ধুলেন।
(নাসায়ী ৯৭,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩৯৭)
,
★সুতরাং মাথা মাসাহ করার পদ্ধতি হলোঃ দুই হাত দিয়ে মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে পেছনের ভাগ পর্যন্ত মাসেহ করা। এরপর হাতদ্বয় যে স্থান থেকে শুরু করেছে সে স্থানে ফিরিয়ে আনা। 

(০৩)
গড়গড়িয়ে কুলি করার চেষ্টা করা।
নাকে এক হাত দিয়ে পানি নিয়ে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল অ কনিষ্ঠ আঙ্গুল দ্বারা নাক পরিস্কার করবে।
,     
পানি ভেতরে না নিয়ে উপরি উপরি ব্যবহার করলে সমস্যা নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...